২১শে এপ্রিল ফ্রান্সের মন্ত্রিপরিষদ ইল-দ্য-ফ্রঁস বিভাগের সব ডিপার্টমেন্টের অভিবাসন প্রতিনিধি বা প্রেফে দেলিগে নামে নতুন একটি পদ অনুমোদন দিয়েছে। এই প্রতিনিধি মূলত স্থানীয় প্রশাসন বা প্রেফেকচুর দ্যু পুলিশের সাথে মিলে কাজ করবে। তবে এই পদটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এনজিও এবং অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো।
২১শে এপ্রিল অনুমোদন হওয়া প্রস্তাবটি গত বছর নভেম্বর মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরা দারমানা মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করেন। প্রস্তাবনা অনুযায়ী,ইল-দ্য-ফ্রঁস বিভাগে প্রেফেকচুর দ্যু পুলিশের সাথে ‘‘অভিবাসন প্রতিনিধি বা প্রেফে দেলেগে’’ নামে একটি পদ থাকবে। পদ সৃষ্টির বিষয়টি ইতিমধ্যে একটি অধ্যাদেশ জারি করে সরকারি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, শিগগিরই একজন প্রতিনিধি অভিবাসন দপ্তরের দায়িত্ব নিবেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রায় ৬ মাস আগে অভ্যন্তীরণ নিরাপত্তা বিষয়ক একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে যেখানে অনিয়মিত এবং অবৈধ অভিবাসন রোধে প্রচলিত আইন সংস্কারের কথা বলা হয়েছে যেটি ১ লা মে কার্যকর।
"রাজধানীতে আর কোন শরণার্থী শিবির থাকবে না "
অভিবাসন প্রতিনিধি বা প্রেফে দেলেগে’র কাজ কি?
তার কাজ হলো, প্যারিসের পাশাপাশি ইল-দ্য-ফ্রঁস অঞ্চলের আওতাধীন সবগুলো ডিপার্টমেন্টের অভিবাসন প্রক্রিয়াকে সমন্বয় করা। এছাড়া এই অঞ্চলের বিমানবন্দর এবং রেলপথগুলো পর্যবেক্ষণে রাখা। প্যারিস পুলিশ সদর দফতর অনুযায়ী, ৫০% জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদন, ৪০% আবাসনের অনুমতি প্রদানের প্রথম আবেদন এবং জাতীয় পর্যায়ে ৩০% অবৈধ অভিবাসন আবেদন এই অঞ্চলে ঘটে থাকে।
তবে তার বিস্তারিত কাজ সম্পর্কে জানা যায়নি। এনজিও এবং অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো এজন্য এই ব্যাপারে কোন সঠিক অবস্থান নিতে পারছে না, কারণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এখনো এই পদের বিস্তারিত কাজের বর্ণনা দেয়া হয়নি। ইতুপিয়া৫৬ নামক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ইয়ান মানজির মতে ,‘‘আমার মতে, এটি কোন ভালো খবর নয়। কারণ ইল দ্য ফ্রঁসের মতো এত বড় একটি অঞ্চল থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের বিভিন্ন শহরে স্থানান্তর একটি জটিল প্রক্রিয়া। এছাড়া এর লক্ষ্য সম্পর্কেও আমরা ধারণা করতে পারি৷ সেটি হচ্ছে রাজধানী থেকে সবরকম আশ্রয় শিবির তুলে দেয়া। এটি মূলত, এই জনগোষ্ঠীকে মূল সমাজ থেকে একেবারে আলাদা করবে’’।
বহিষ্কার, বিকেন্দ্রীকরণ, এবং ব্যবস্থাপনা
অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা এনজিও লা সিমাদের রাজনৈতিক আশ্রয় বিষয়ক কর্মকর্তা জেরা সাদিক বলেন, ‘‘ নতুন সৃষ্ট এই পদের কিছু সুবিধাও রয়েছে। এই অঞ্চলে প্রশাসনিক কাজের জটিলতার কথা সবাই জানে যেটির সঠিক ব্যবস্থাপনার দরকার আছে। সরকার মূলত এর থেকে বের হওয়ার একটি উপায় খুঁজছে। এছাড়া, ফ্রান্স প্রশানের বিকেন্দ্রীকরণ প্রক্রিয়ার তেমন কোন বড় ছাপ অভিবাসন প্রক্রিয়ায় পড়েনি। নতুন এই পদের মাধ্যমে সেটিও বাস্তবায়িত হবে। তবে ২১শে এপ্রিল প্রকাশিত অধ্যাদেশ অনুযায়ী অনিয়মিত এবং অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ার কথাও বলা হয়েছে। এখানে সংশয়ের অবকাশ আছে, কারণ এই পদ না আবার বহিষ্কার কর্তৃপক্ষে পরিণত হয়’’।
‘‘যদি এই পদের কাজ হয় কেবল অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ে তাহলে এটি একটি খারাপ সংকেত’’, উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ফান্স তের দাজিলের পরিচালক দেলফিন রুলিয়ো।
এমএ/এপিবি