তুরস্ক এখন থেকে সিরিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও সোমালিয়া থেকে আগত আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য নিরাপদ তৃতীয় দেশ হিসাবে বিবেচিত হবে। গ্রিসের অভিবাসন মন্ত্রণালয় সোমবার এমন ঘোষণা দিয়েছে৷ অর্থাৎ, এখন থেকে এই দেশগুলো থেকে আগত আশ্রয়প্রার্থীদের গ্রিস থেকে আবার তুরস্কে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
ইউরোপে এসে আশ্রয় আবেদনে আগ্রহী বাংলাদেশসহ পাঁচ দেশের আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য এটিকে দুঃসংবাদ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সাত জুন এথেন্স জানিয়েছে, তুরস্ক এখন থেকে উল্লেখিত দেশগুলো থেকে আগত আশ্রয়প্রার্থী এবং অভিবাসীদের জন্য নিরাপদ তৃতীয় দেশ হিসাবে বিবেচিত হবে।
গ্রিসের অভিবাসন মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি সংবাদ বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘‘মন্ত্রণালয়ের যৌথ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তুরস্ক এখন থেকে আশ্রয় আবেদনের স্বীকৃত সমস্ত শর্ত পূরণ করে সিরিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও সোমালিয়া থেকে আসা আবেদনকারীদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষা আবেদনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রক্রিয়া পরিচালনা করতে পারবে। এছাড়া আশ্রয়প্রার্থীদের সেখানে জাতি, ধর্ম কিংবা রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে কোন ধরনের হুমকির সম্ভাবনা নেই বলে মন্ত্রনালয়ের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে।’’
গ্রিসের অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী নটিস মিতারাকিস তার টুইটার অ্যাকাউন্টে বলেছেন, ‘‘তুরস্ককে নিরাপদ তৃতীয় দেশ হিসাবে মনোনীত করা অবৈধ অভিবাসন প্রবাহ এবং মানব পাচার নেটওয়ার্কের অপরাধমূলক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এই ঘোষণা ইইউ-তুরস্কের যৌথ ঘোষণাপত্রের সম্পূর্ণ এবং ত্রুটিহীনভাবে বাস্তবায়নে আরও একটি বড় পদক্ষেপ। যেটি আঙ্কারাকে মানবপাচারের নেটওয়ার্ক পরিচালনা এবং অবৈধভাবে গ্রিসে প্রবেশের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য করবে।’’
জার্মান দৈনিক বিল্ডের তথ্য অনুযায়ী, ‘‘সিরিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও সোমালিয়া থেকে নতুন আগতদের ‘আশ্রয় আবেদন’ কিছু দিনের মধ্যে বাতিল হয়ে যাবে এবং তাদেরকে গ্রিস থেকে আবার তুরস্কে ফেরত পাঠানো হবে।’’
পর্যবেক্ষকরা ইতোমধ্যে তাদের প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে এসব দেশ থেকে আগত আশ্রয় প্রার্থীদের আবেদন গ্রহণ হওয়ার হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।
আশ্রয়প্রার্থীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা এনজিও রিফিউজি সাপোর্ট এজিয়ান (আরএসএ) সোমবার গ্রিস সরকারের নতুন এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, ‘’তুরস্ককে নিরাপদ তৃতীয় দেশ হিসাবে বিবেচনা করা একমাত্র অন্য ইউরোপীয় দেশ হচ্ছে হাঙ্গেরি। হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। এর বাইরে আর কোন দেশকে এখনো পর্যন্ত এরকম সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যায়নি।’’
এমএইউ/এফএস