একটি নির্মাণ কাজের দৃশ্য। ছবিঃ পিক্সাবে
একটি নির্মাণ কাজের দৃশ্য। ছবিঃ পিক্সাবে

সাধারণ কর্মজীবীদের মতো দুর্ঘটনার শিকার অনিবন্ধিত কর্মীদেরও স্বাস্থ্যজনিত ক্ষতিপূরণ, সরকার থেকে নির্দিষ্ট ভাতাসহ বিভিন্ন অধিকার ভোগ করতে পারেন৷ তবে এজন্য দুর্ঘটনার পরপর বেশকিছু প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ব্যাপারে পাঠকদের বিস্তারিত তথ্য জানাচ্ছে ইনফোমাইগ্রেন্টস।

ফ্রান্সে কয়েকটি খাতে কর্মীরা কর্মস্থলে নিয়মিত দুর্ঘটনার শিকার হয়ে থাকেন। এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, বিভিন্ন অস্থায়ী কাজ, স্বাস্থ্য, পরিচ্ছন্নতা, নির্মাণ খাতে৷ ২০১৯ সালে কাজ সম্পর্কিত দুর্ঘটনা নিয়ে দেশটির জনস্বাস্থ্য পরিচালনাকারী প্রতিষ্টান ‘প্রাথমিক স্বাস্থ্য বীমা তহবিল’ (সিপিএএম)’র প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছিল৷

এর মধ্যে নির্মাণখাতে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সার্বিকভাবে ২০১৮ সালে ফ্রান্সে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় প্রায় ১১৭৬ জন মারা গেছেন যা ২০১৮ সালের তুলনায় ৬৪.৫ শতাংশ বেশি৷ 

এসবক্ষেত্রে যারা অনিয়মিতরা বা বৈধতা অর্জন করেননি তারা প্রশাসনিক জটিলতার কারণে বিশেষ ঝুঁকির মধ্যে পড়েন। তবে ফ্রান্সের শ্রম আইন বৈধ ও অবৈধ উভয়ের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়। কর্মক্ষেত্রে যদি আপনি কোনো দুর্ঘটনা শিকার হয়ে থাকেন তাহলে নীচের প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করতে পারেন:

নিয়োগদাতাকে লিখিতভাবে জানানো

কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হলে আক্রান্ত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মালিককে জানাতে হবে। অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা সংস্থা জিসতি’র মতে, “চাকরিদাতাকে লিখিত চিঠির মাধ্যমে জানানো ভালো, এক্ষেত্রে এটি প্রশাসনিক প্রমাণ হিসেবে কাজ করে।”

একজন কর্মচারী অবহিত করার পরে আইন অনুযায়ী নিয়োগদাতা নিজে সিপিএএম বা প্রাথমিক স্বাস্থ্য বীমা তহবিলকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অবহিত করবেন।

তাকে সিপিএএমের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি বিশেষ ফর্ম পাঠাতে হবে যেটিকে ফরাসি ভাষায় ‘ফয় দা’আক্সিদো দ্যু ত্রাভাই’ বলা হয়। এটি মালিকের কাছে না থাকলে খুব সহজে সিপিএএমের ওয়েবসাইট থেকে নেয়া যাবে। 

যদি কোন নিয়োগদাতা সিপিএএম-কে জানাতে অস্বীকৃতি জানায় তাহলে সেক্ষত্রে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তি বা তার কোন প্রতিনিধি চাইলে তাদেরকে জানাতে পারবে। এক্ষেত্রে সিপিএএম ভুক্তোভোগী বৈধ বা অবৈধ কিনা তা দেখবে না এবং তারা এ ব্যাপারে অবশ্যই গোপনীয়তা রক্ষা করবে। তবে সিপিএএমকে কাজের প্রমাণ যেমন চুক্তিনামা বা বেতনের রশিদ এবং দুর্ঘটনার প্রমাণ জমা দিতে হবে। 

ডাক্তার বা হাসপাতাল থেকে সেবাপ্রাপ্তি 

তারপরে আপনাকে অবশ্যই চিকিৎসক বা হাসপাতাল থেকে অসুস্থতা বিষয়ক সনদ নিতে হবে। যদি আপনার নিয়োগকর্তা আপনার দুর্ঘটনার প্রকৃতি সম্পর্কে অবহিত না করেন সেক্ষেত্রে সিপিএএম অধিকতর তদন্ত করতে পারে।

‘‘যদি আপনার নিয়োগকর্তা আপনার দুর্ঘটনার পেশাদার প্রকৃতি সম্পর্কে কোনো প্রতিক্রিয়া প্রকাশ না করে এবং সিপিএএম তদন্ত শুরু না করে তবে আপনার ফাইলটি আপনার দুর্ঘটনার ঘোষণা এবং সনদ পাওয়ার পরে এক মাসের মধ্যে পরীক্ষা করা হবে,’’ বলা হয়েছে স্বাস্থ্য বীমা ওয়েবসাইটে।

স্বাস্থ্যসেবা

সিপিএএম-এর ওয়েবসাইটে পাঠানো ফর্মের সাহায্য অগ্রিম অর্থ প্রদান ছাড়াই সব ধরনের চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করা যাবে।

সম্পূর্ণ চিকিৎসা শেষ হওয়ার পরেও অবস্থার উন্নতি না হলে বা আরও অবনতি হলে একজন চিকিৎসক দুর্ঘটনাজনিত ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য একটি সনদ দিবেন।

আইনী প্রতিকার

সিপিএএম জানায়, ‘‘কোন নিয়োগকর্তা জেনেশুনে তার কর্মচারীকে কোন বিপদের মুখোমুখি করলে এবং সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে তিনি আইনগতভাবে মারাত্মক অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবেন।’’

যদি কেউ দুর্ঘটনার জন্য নিয়োগকর্তার দায়বদ্ধতা সম্পর্কে নিশ্চিত হন সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনার দু'বছরের মধ্যে সিপিএএম অথবা বিশেষ আদালতের কাছে নিষ্পত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। আহত ব্যক্তি যদি মারা যায় তবে তার স্বজনরা এই পদক্ষেপ নিতে পারবেন।

নিয়োগকর্তার দোষ প্রমাণ করাটা সম্পূর্ণ ভুক্তভোগীর উপর নির্ভর করে। এসব প্রক্রিয়া সম্পাদন করার জন্য কোন একটি শ্রমিক ইউনিয়নের (সিজিটি, এসইউডি, সলিদের ) সদস্য হওয়া ভাল


এমএইউ/এফএস

 

অন্যান্য প্রতিবেদন