জার্মানির মাইনৎজ শহরের একটি আশ্রয়কেন্দ্র | ছবি: ডিপিএ/পিকচার অ্যালায়েন্স
জার্মানির মাইনৎজ শহরের একটি আশ্রয়কেন্দ্র | ছবি: ডিপিএ/পিকচার অ্যালায়েন্স

জার্মান সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার জার্মানির কোনো শরণার্থী শিবিরে হামলার ঘটনা ঘটে। তবে এমন হামলার সংখ্যা ২০১৫ সালের তুলনায় বর্তমানে অনেকটাই কম।

জার্মানির বামপন্থি দল ডি লিংকে দেশের সংসদে কয়েকটি প্রশ্ন উত্থাপন করলে এর জবাবে সরকার প্রকাশ করে শরণার্থী শিবিরে হামলার তথ্য। সেই তথ্যের বরাত দিয়ে জার্মান সংবাদপত্র নয়ে ওসনাব্র্যুকার সাইটুং একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ৩১ আগস্ট। বলা হয়, জার্মানির শরণার্থী শিবিরগুলিতে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একটি হামলার ঘটনা ঘটছে।

পত্রিকাটি জানায়, চলতি বছরের প্রথমার্ধেই এমন ৩৪টি ঘটনা ঘটেছে। একই সময়ে গত বছর সংখ্যাটি ছিল ৪৭। নয়ে ওসনাব্র্যুকার সাইটুং জানায় যে, প্রতিটি হামলার সাথে যুক্ত রয়েছে অতি ডানপন্থি মনোভাবাপন্ন ব্যক্তি বা সংগঠন।

জার্মান সরকার জানায় যে, এই ধরনের হামলার ঘটনাগুলির বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হামলাকারীরা সহিংস পন্থা অবলম্বন করে। প্রোপাগান্ডায় ভরা স্লোগান বা পোস্টার লাগানোর পাশাপাশি তারা শরণার্থী শিবিরে ভাঙচুরও করে। এছাড়া, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতরভাবে কাউকে আহত করা, অন্যান্য ধরনের শারীরিক নিগ্রহ করা ও বিভিন্ন ভবনে আগুন ধরানোর অভিযোগ।

আশার আলো

নয়ে ওসনাব্র্যুকার সাইটুং বলে যে ২০১৫ সালের শরণার্থী সংকটের সময়ের তুলনায় পরবর্তী বছরগুলিতে কমেছে জার্মানির শরণার্থী শিবিরে হামলার ঘটনা। সেই বছরে এমন এক হাজার ৪৭টি হামলার ঘটনা সামনে আসে। ২০১৫ সালে একদিনে তিনটি হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় সংবাদপত্রটি।

সেই তুলনায় গত বছর 'মাত্র' ৮৪টি এমন হামলা হয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রতিবেদনে এই নিম্নগামী ধারার কারণ হিসাবে বলা হয়েছে জার্মানিতে ২০১৫ সালের তুলনায় কম আশ্রয়প্রার্থীদের আগমনের কথা। বর্তমান জার্মানিতে আগের তুলনায় অনেক কম আশ্রয়প্রার্থী কোনো কেন্দ্র বা শরণার্থী শিবিরে বাস করেন, ফলে হামলাকারীদের নজরে আগের মতো নেই এই কেন্দ্রগুলি, জানায় তারা।

জার্মান সরকারের দেওয়া জবাবের বরাত দিয়ে নয়ে ওসনাব্র্যুকার সাইটুং জানায়, আশ্রয়প্রার্থীরা কোনো আশ্রয়কেন্দ্র বা শিবিরের চেয়ে বাসার বাইরে, পথে-ঘাটে বেশি আক্রমণের শিকার হন। যদিও এক্ষেত্রেও কমে আসছে হামলার সংখ্যা।

গত বছরের প্রথমার্ধে, গণপরিসরে কোনো আশ্রয়প্রার্থী বা শরণার্থীকে আক্রমণের ৮৭৯টি ঘটনা ঘটে। এই সংখ্যাটি চলতি বছরের একই সময়ে ৪৬১, যা আগের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।

কিন্তু লক্ষণীয়ভাবে, হামলাগুলির ঘটনায় সহিংসতার মাত্রা আগের চেয়ে বেড়েছে। শুধু তাই নয়, জার্মানির রাস্তায় নব্য-নাৎসি বা নিও-নাৎসি মণোভাবাপন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের গণসমাবেশের সংখ্যা আগের চেয়ে খুব একটা কম নয়।

২০২০ সালে এমন ৬০টি সমাবেশ আয়োজিত হয়। বছর শেষ হবার আগেই ২০২১ সালে এই সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ৫৬তে।

অন্যদিকে, নব্য-নাৎসি মনোভাবাপন্ন জলসা বা কনসার্টের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ২০২০ সালে এমন ৬১টি কনসার্ট আয়োজিত হয়, যা এ বছর এসে নেমেছে ২৮-এ।

বেনিয়ামিন বাথকে/এসএস (কেএনএ)

 

অন্যান্য প্রতিবেদন