শনিবার, স্পেনের পালমা দে মায়োরকাতে জরুরি অবতরণ করা বিমান থেকে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১২ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। এই ঘটনাটি পরিকল্পিত নাকি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল, সেটি নির্ধারণের চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
পালমা দে মায়োরকা পুলিশ শনিবার (৬ নভেম্বর) জানিয়েছে, ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং জরুরি অবতরণ করা বিমান থেকে পালিয়ে যাওয়া অন্যদেরও খুঁজছে কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই অবিশ্বাস্য ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার, স্পেন সময় সন্ধ্যা ৭ টার দিকে। মরক্কো এবং তুরস্কের মধ্যে সংযোগ প্রদানকারী একটি বিমনে থাকা একজন যাত্রী হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে সাময়িকভাবে জরুরি অবতরণ করে বিমানটি।
বলিয়ারিক দ্বীপপুঞ্জে স্প্যানিশ সরকারের প্রতিনিধি আইনা ক্যালভো বলেন, "এই ঘটনাটি অভূতপূর্ব। বারো জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পালিয়ে যাওয়া আরও বারো জনকে এখনও খুঁজছে পুলিশ।”
এ প্রসঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেন, স্পেনের কোনো বিমানবন্দরে এ ধরনের ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি।
মিথ্যা ডায়াবেটিক কোমা
পুলিশ বলছে, যে যাত্রী ডায়াবেটিক কোমায় ছিলেন বলে মনে হচ্ছে, তাকে অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে দ্রুত একজন সঙ্গীর সাথে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে আসার পর তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ বলে ঘোষণা করা হয়।
"অবৈধ অভিবাসনে সহায়তা করা এবং অভিবাসন আইন লঙ্ঘন করার জন্য লোকটিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে", যোগ করে পুলিশ। অসুস্থ দাবি করা লোকের সাথে থাকা ব্যক্তিটি হাসপাতালে আসার সাথে সাথে পালিয়ে গিয়েছিল।
আইনা ক্যালভো বলেন, “জরুরি অবতরণের পরে ২১ জন যাত্রী বিমান থেকে বেরিয়ে এসে পালিয়ে যায়। পুলিশ অবিলম্বে একটি অনুসন্ধান শুরু করলে স্পেনের অন্যতম এই ব্যস্ত বিমানবন্দরটি মধ্য রাত পর্যন্ত বন্ধ থাকে।”
এছাড়া, বিমানে থাকা যাত্রীদের "অপমান ও হামলার" জন্য আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আইনা ক্যালভো আরও বলেন, এই ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে একজন ফিলিস্তিনি ও বাকি ২৪ জন মরক্কোর নাগরিক।
বিচ্ছিন্ন নাকি পূর্ব পরিকল্পিত ঘটনা?
বিমানবন্দরে যা ঘটেছে, তা একটি সাজানো এবং পরিকল্পিত নাটক নাকি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা সে ব্যাপারে তদন্তকারীরা তদন্ত করছেন।
আইনা ক্যালভো বলেন, "এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নাকি পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনার অংশ ছিল সে ব্যাপারে আমাদের কাছে নিশ্চিত হওয়ার মতো কোনো তথ্য এই মুহূর্তে নেই।"
তার মতে, যাত্রীরা বিমান থেকে পালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিমানটি "কিছুক্ষণের জন্য" রানওয়েতে অবতরণের আগে মাটির খুব কাছ দিয়ে যাচ্ছিল।
তিনি উল্লেখ করেন, "এই মুহূর্তে আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না কেন এই ২১ জন 'এয়ারস্ট্রিপ' থেকে লাফ দিয়ে নেমে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।"
যারা পালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে বিমান চলাচল নিরাপত্তা বিধিমালা না মানার এবং স্পেনের ভূখণ্ডে অবৈধ প্রবেশের জন্য বিচারের মুখোমুখি করা হবে এবং তাদের মূল দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
বিমান বন্দরের কর্মকর্তা জানান, যাত্রীদের মধ্যে এবং পালিয়ে যাওয়াদের মধ্যে কেউই রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেননি।
ফ্লাইটরাইডার অ্যাপ্লিকেশন অনুসারে, অবতরণ করা বিমানটি ছিল এয়ার অ্যারাবিয়ার এয়ারবাস এ৩২০, যেটি কাসাব্লাঙ্কা এবং ইস্তাম্বুলের মধ্যে উড়ছিল।
এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষের মতে, ঘটনার ফলস্বরূপ পালমার উদ্দেশ্যে আসতে থাকা ১৩টি বিমানকে অন্য বিমানবন্দরে ফেরত পাঠানো হয়েছিল এবং ১৬টি ছেড়ে যাওয়া ফ্লাইট উল্লেখযোগ্য বিলম্বের শিকার হয়েছিল।
এমএইউ/এসএস