অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়ে ২৩ আশ্রয়প্রার্থী দম্পতিকে আলাদা করার দায়ে সাবেক ডেনিশ মন্ত্রী ইনগার স্টোজবার্গকে দুই মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত৷
২০১৬ সালে ডেনমার্কের সাবেক অভিবাসন ও ইন্টিগ্রেশন বিষয়ক মন্ত্রী ইনগার স্টোজবার্গ অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে ২৩ আশ্রয়প্রার্থী দম্পতিকে আলাদা রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। যাদের মধ্যে একজনের বয়স ছিল ১৮ বছরের কম৷ সোমবার ডেনিশ বিশেষ বিচার আদালত এই সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে রায় দিয়েছে৷ ইনগার স্টোজবার্গকে ৬০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আদালতের রায় অনুযায়ী এর বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন না তিনি৷ তবে অভিযুক্ত মন্ত্রীর কারাগারে যাওয়ার সম্ভাবনা কম৷ কারণ, ডেনমার্কে ছয় মাসের কম কারাদণ্ডে দণ্ডিত ব্যক্তিদের সাধারণত ইলেকট্রনিক নজরদারির আওতায় রাখা হয়৷
১৯১০ সালের পর ডেনমার্কে তৃতীয়বারের মতো কোনো রাজনৈতিক নেতাকে বিশেষ আদালতের মুখোমুখি হতে হলো৷ সাধারণত মন্ত্রী বা সমমর্যাদার সরকারি দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অর্থ আত্মসাৎ অথবা দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ উঠলে এই বিশেষ আদালতের শরণাপন্ন করা হয়৷
কট্টর ডানপন্থী ও অভিবাসনবিরোধী এই রাজনীতিবিদকে ইউরোপীয় মানবাধিকার বিষয়ক কনভেনশন লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে৷ আলাদা করতে নির্দেশ দেয়া আশ্রয়প্রার্থী দম্পতিদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারীর সন্তান ছিল এবং কয়েকজনের বয়স ছিল ১৮ বছরের কম। ২০১৬ সালে মন্ত্রীর দেয়া এই আদেশের ফলে ২৩ দম্পতিকে একে অপর থেকে পৃথক করা হয়েছিল৷
তবে আদালতের রায়ে ইঙ্গার স্টোজবার্গ বলেন, ‘‘আমি খুব, খুব অবাক হয়েছি৷ আমি মনে করি এই রায়ের ফলে ডেনিশ মূল্যবোধ পরজিত হয়েছে৷ আমি মূলত এসব নারীদের রক্ষা করতে চেয়েছিলাম এবং এখনও চাই৷ আমি মাথা উঁচু করে এই শাস্তি গ্রহণ করলাম কারণ আমি দোষী নই৷’’
বর্তমানে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম কঠিন অভিবাসন নীতি অনুসরণ করে আসছে ডেনমার্ক সরকার৷ জুন মাসে পাস করা একটি আইনে বলা হয়েছে ডেনমার্কের সমস্ত আশ্রয়প্রার্থীকে তাদের আশ্রয় আবেদন নিবন্ধিত হয়ে গেলে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে অবস্থিত একটি অভ্যর্থনা কেন্দ্রে পাঠানো হবে৷ যদিও এখন পর্যন্ত কোনো তৃতীয় দেশ এই স্থানান্তর প্রকল্পটি গ্রহণ করেনি৷ তবে এনজিও এবং অধিকার সংগঠনগুলি শুরু থেকেই সরকারের এই নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে৷
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অভিবাসীবিরোধী কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে ডেনিশ সরকার৷ যেমন, সিরিয়ানদের বসবাসের অনুমতি প্রত্যাহার, ইউরোপীয় নন এমন বাসিন্দাদের সংখ্যা সীমাবদ্ধ করার লক্ষ্যে আইন প্রণয়ন করা, ‘শূন্য শরণার্থী লক্ষ্যমাত্রা’ অর্জনের মতো সরকারি নীতির উদ্যোগও নিয়েছে দেশটি৷
এমএইউ/এফএস