জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রধান মিশায়েল বাচেলেট।ছবি ইপিএ/মারশাল রেযিনি
জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রধান মিশায়েল বাচেলেট।ছবি ইপিএ/মারশাল রেযিনি

রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেন ছেড়ে আসা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে সহযোগিতা করায় ইউরোপের দেশগুলোর প্রশংসা করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রধান মিশায়েল বাচেলেট৷

সেই সাথে তিনি ইউরোপের সীমান্তে অন্য দেশ থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের বিভিন্ন সময়ে ফেরত পাঠানোর ঘটনার নিন্দাও জানিয়েছেন৷  

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে দেওয়া এক বক্তৃতায় তিনি ইউক্রেনের শরণার্থীদের সহযোগিতায় ইউরোপের দেশগুলোর এগিয়ে আসার বিষয়টিকে ‘দুঃখজনক পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসা উজ্জ্বল আলো’ বলে উল্লেখ করেছেন৷    

ইউক্রেনের শরণার্থীদের জন্য ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও সেখানকার মানুষেরা যেভাবে সহযোগিতা করছে, তা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক৷ তাছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো এ শরণার্থীদের সাময়িকভাবে সুরক্ষা ও সেখানে আশ্রয়ের অনুমোদন দিয়ে প্রশংসনীয় কাজ করেছে বলে জানান তিনি৷

তবে তার অভিযোগ, ইউরোপের সীমান্তে অন্যান্য দেশ থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীরা ভিন্ন পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে৷ 

এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা প্রায়ই ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছার চেষ্টা করে থাকেন৷ সমালোচনা আছে যে, বিভিন্ন দেশ যেমন ক্রোয়েশিয়া, গ্রিস, ইটালি তাদের সীমান্ত থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রায়ই ‘পুশব্যাক’ করে থাকে৷ 

এদিকে রাশিয়া হামলা শুরুর পর পোল্যান্ড সীমান্তে ইউক্রেনীয় নয় এমন শরণার্থীদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ আছে৷   

মানবিক আচরণের আহ্বান

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রধান বলেন, সব রাষ্ট্রকেই আশ্রয়প্রার্থীদের প্রতি লিঙ্গ, বর্ণ, ধর্ম ও জাতীয়তা নির্বিশেষে মানবিক আচরণ করা উচিত৷ 

এশিয়া ও ইউরোপের অভিবাসনপ্রত্যাশীরা ঝুঁকিপূর্ণ পথ পাড়ি দিয়ে ইউরোপে আশ্রয়ের চেষ্টা করেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘গত বছর, অর্থাৎ ২০২১ সালে ভূমধ্যাসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে আশ্রয় নিতে গিয়ে দুই হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী নিহত অথবা নিখোঁজ হয়েছেন৷ আর ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এই পথে ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত ও নিখোঁজ হয়েছেন৷’’ 

নিহতের এসকল ঘটনা এড়ানো যেতো দাবি করে তিনি জানান, বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ, যেমন সাগরে সমন্বিত উদ্ধারকাজ পরিচালনা, উদ্ধারকৃতদের নিরাপদ স্থানে নামানো এবং বৈধ পথে অভিবাসনের সুযোগ বাড়ানোর মাধ্যমে দুর্ঘটনা এড়ানো এবং এমন সব ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসনের চেষ্টা বন্ধ করা যেতে পারে৷   

উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ২৫ লাখ লোক ইউক্রেন ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন৷ তাদের বেশিরভাগই পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরিতে আশ্রয় নিচ্ছেন৷ 

আরআর/এসিবি (আনসা)

 

অন্যান্য প্রতিবেদন