লিবিয়া থেকে সরিয়ে নেয়ার দাবিতে গত অক্টোবরে ইউএনএইচসিআর কার্যালয়ের সামনে অভিবাসীদের একটি অবস্থান কর্মসূচী৷ ছবি: ইপিএ/এসটিআর)
লিবিয়া থেকে সরিয়ে নেয়ার দাবিতে গত অক্টোবরে ইউএনএইচসিআর কার্যালয়ের সামনে অভিবাসীদের একটি অবস্থান কর্মসূচী৷ ছবি: ইপিএ/এসটিআর)

লিবিয়ায় অভিবাসীদের গণকবর থাকার সত্যতা যাচাই করে দেখছে জাতিসংঘ৷ সেই সঙ্গে দেশটিতে অভিবাসীদের ধর্ষণ, হত্যা এবং নির্যাতনের অভিযোগও খতিয়ে দেখছে সংস্থাটি৷ সোমবার এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে৷

ভূমধ্যসাগর হয়ে অভিবাসনে প্রত্যাশীদের অন্যতম ‘ট্রানজিট’ উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়া৷ ইউরোপে পাড়ি জমানোর স্বপ্নে দেশটিতে আসা এই মানুষেরা হরহামেশা মানবপাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ছেন৷ তাদের উপর চালানো হচ্ছে ধর্ষণ, নির্যাতন৷ বন্দি করে আদায় করা হচ্ছে মুক্তিপণও ৷ বিভিন্ন সংস্থা ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রায়ই এসব তথ্য উঠে এসেছে৷ এবার জাতিসংঘের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের’ প্রতিবেদনেও অভিবাসীদের উপর নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে৷ 

মিশনের সদস্যরা দেশটিতে অভিবাসীদের ‘গণকবর’ থাকার তথ্য পেয়েছেন৷ লিবিয়ার বানি ওয়ালিদ শহরের মরুভূমিতে ‘গণকবর’ আছে বলে তাদেরকে জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন অভিবাসী৷ এক জনের সাক্ষ্য থেকে জানা গেছে, তিনি নিজে সেখানে তিনজন অভিবাসীকে কবর দিয়েছেন৷  

গণকবরে কতজনের দেহ রয়েছে সেই তথ্য প্রতিবেদনে ছিল না৷ তবে মিশনের সদস্য চালোকা বেয়ানি জানিয়েছেন, নতুন দায়িত্ব পাওয়া একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ পরবর্তী অনুসন্ধান চালাবেন৷  

পূর্ব আফ্রিকা থেকে আগত বেশ কয়েকজন নারী ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার তথ্যও জানিয়েছেন৷ একজন তার সাক্ষ্যে বলেছেন, ‘‘কোনো আটক অভিবাসী যদি ‘বানি ওয়ালিদ’ শব্দটি শুনতে পান তাহলেই তিনি কাঁদতে শুরু করেন৷ তারা সেখানে নারীদের স্তন ও যোনি পুড়িয়ে দেয়৷ ’’ লিবিয়ার সেবাহ শহরে অবস্থানরত অগ্নিদগ্ধ এক সুদানিজ অভিবাসী জানিয়েছিলেন, পরিবার মুক্তিপণের টাকা দিতে না পারায় তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় অপহরণকারীরা৷ এই অভিবাসী পরবর্তীতে মারা যান৷  

ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত ১২০ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে৷ লিবিয়ার অধিকারকর্মীদের হুমকি, প্রতিদ্বন্দ্বী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর গোপন আটক কেন্দ্রগুলো নিয়েও তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷ তিন সদস্যের মিশনের একজন চালোকা বেয়ানি বলেন, অভিবাসীদের জন্য লিবিয়ার পরিস্থিতি ‘ভীষণ ভীষণ ভয়ানক’৷

১৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি চলতি সপ্তাহে জেনেভার মানবাধিকার কাউন্সিলে জমা দেয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স৷জুনে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ার কথা থাকলেও আরো সময় বাড়াতে চান তদন্তকারীরা৷  

পড়ুন: লিবিয়া: অক্সফামের প্রতিবেদনে বাংলাদেশিকে নির্যাতনের কাহিনি

এফএস/আরকেসি (রয়টার্স) 

 

অন্যান্য প্রতিবেদন