আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডা পাঠানোর সরকারি সিদ্প্রধান্তিতের যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের সামনে নৌকায় করে প্রতিবাদ৷ ছবি: পিকচার অ্যালায়েন্স
আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডা পাঠানোর সরকারি সিদ্প্রধান্তিতের যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের সামনে নৌকায় করে প্রতিবাদ৷ ছবি: পিকচার অ্যালায়েন্স

আশ্রয় প্রক্রিয়া সংস্কার সংক্রান্ত ব্রিটেন সরকারের প্রস্তাবিত নতুন বিল দেশটির সংসদে পাস হয়েছে৷ এর ফলে সেটি এখন আইনে পরিণত হতে যাচ্ছে৷ আশ্রয়প্রার্থীদের তৃতীয় দেশে পাঠানোর প্রস্তাবযুক্ত বিতর্কিত এই বিল পাসে নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা৷

বুধবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ হাউস অব লর্ডসে বিলটি পাস হয় এবং শেষ মুহূর্তের ভাষাগত সংশোধনী প্রস্তাবও বাতিল হয়ে যায়৷ রানির সম্মতি পেলেই এখন তা আইনে পরিণত হবে৷ 

সংশোধিত আইনে পাচারকারীদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং অনিয়মিত অভিবাসন বন্ধে আরো কঠোর পদক্ষেপের বিধান রয়েছে৷ সেই সঙ্গে আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন প্রক্রিয়া তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে করানোর বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে৷ 

দুই সপ্তাহ আগে এই বিষয়ে রুয়ান্ডার সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে বরিস জনসন সরকার৷ চুক্তি অনুযায়ী অনিয়মিত পথে আসা অভিবাসীদের আফ্রিকার দেশটিতে পাঠাবে সরকার৷ সেখানেই তাদের আশ্রয় আবেদনের প্রক্রিয়া করা হবে৷ 


ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে অনিয়মিত অভিবাসন বন্ধে বিভিন্ন সময়ে কড়া পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলে আসছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন৷ ২০২১ সালে দেশটিতে অনিয়মিতভাবে আসা অভিবাসী, শরণার্থীর সংখ্যা তিনগুণ বেড়েছে৷ গত নভেম্বরে চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ২৭ জন৷ 

তবে সংশোধিত আইন নিয়ে অভিবাসন বিষয়ক সংস্থাসহ বিভিন্ন মহল সরকারের সমালোচনা করে আসছে৷ বিলটি পার্লামেন্ট অনুমোদন হওয়ার পর জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘‘এটি শরণার্থীদের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক আইনকে ক্ষুণ্ণ করবে৷’’ 

বিবৃতিতে তিনি অন্য দেশে আশ্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরিকল্পনায় শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ এই ধরনের পদক্ষেপ ‘শরণার্থী কনভেনশনের চেতনাবিরোধী’ হবে বলেও উল্লেখ করেন ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি৷


ব্রিটিশ এনজিও অক্সফাম বিলটি অনুমোদনের নিন্দা জানিয়েছে৷ এই আইন ‘সংঘাতপূর্ণ অঞ্চল ও নির্যাতন থেকে পালিয়ে আসা পরিবারগুলোর জন্য ভয়াবহ পরিণাম বয়ে আনবে’ বলে উল্লেখ করেছেন সংস্থাটির উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা স্যাম নাডেল৷

তবে সরকারের দাবি মানবপাচার নেটওয়ার্ক ভাঙতে এবং ঝুঁকিপূর্ণ উপায়ে সমুদ্র পাড়ি দেয়া নিরুৎসাহিত করতে আইনটি ভূমিকা রাখবে৷ 

এফএস/এআই (এএফপি)

পড়ুন: যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করা হাজারো অভিবাসীকে রুয়ান্ডায় পাঠানো হতে পারে

 

অন্যান্য প্রতিবেদন