ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের স্বাগত জানালেও অন্য শরণার্থীদের ক্ষেত্রে উল্টো আচরণ করছে গ্রিস৷ এক প্রতিবেদনে এমন অভিযোগ করেছে গ্রিক কাউন্সিল ফর রিফিউজিস, অক্সফাম ও সেভ দ্য চিলড্রেন৷
সংস্থাগুলো বলছে, গত দুই মাসে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের সুরক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও কর্মসংস্থানে দ্রুত সাড়া দিয়েছে গ্রিস৷ তাদের থাকার ব্যবস্থা এবং খাদ্য সহায়তাও দিতে শুরু করেছে সরকার৷ অথচ একই সময়ে অন্য দেশের আশ্রয়প্রার্থীরা সহিংস পুশব্যাকের (অবৈধভাবে ফেরত পাঠানো) শিকার হয়েছেন৷ কিছুক্ষেত্রে এমনকি শিশু ও গর্ভবতী নারীদের নৌকায় করে সীমান্তবর্তী নদীতে ঠেলে দেয়া হয়েছে৷ আশ্রয়প্রার্থীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মার্চের মাঝামাঝি এমন একটি অভিযানে চার বছর বয়সি এক সিরিয়ান শিশু নৌকা থেকে পড়ে ডুবে যায়৷
সংস্থাগুলো বলছে, গ্রিক সরকার ইউক্রেনীয়দের জন্য সহজে ব্যবহারযোগ্য অনলাইন নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু করেছে৷ অথচ গ্রিসের মূলভূমিতে অন্য দেশের আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদনের প্রক্রিয়াটি প্রায় অকার্যকর করে রাখা হয়েছে৷ প্রতিবেদনে তারা বৈষম্যমূলক আচরণের আরো অনেক উদাহরণ তুলে ধরেছে৷
এর আগে গ্রিক সরকারের কর্মকর্তারাও ইউক্রেনীয়দের ‘প্রকৃত শরণার্থী’ আর অন্যদের ‘অবৈধ অভিবাসী’ হিসেবে অভিহিত করেছে৷ এমনকি উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত একটি শিবিরে ইউক্রেনীয়দের জায়গা করে দিতে আফগান শরণার্থীদের কন্টেইনার থেকে বের করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে৷
অক্সফাম ও সেভ দ্য চিলড্রেনের সহায়তায় প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে গ্রিক কাউন্সিল ফর রিফিউজিস৷ সংস্থাটির আইনজীবী ক্লেইও নিকোলোপউলউ বলেন, ‘‘আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে, এমনকি সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা মানুষটিও এই সুবিধা পেতে সংগ্রাম করছেন৷’’
অক্সফামের ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিষয়ক অভিবাসন বিশেষজ্ঞ স্টেফানি পোপ আশ্রয়প্রার্থীদের সঙ্গে গ্রিক সরকারের আচরণের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘এভ্রস দ্বীপে খাদ্য, পানি ছাড়া (অভিবাসীদের) ফেলে আসার নতুন প্রবণতাও আমরা দেখতে পাচ্ছি৷ শুধু গত মাসেই এমন ছয়টি ঘটনা ঘটেছে৷’’
তার মতে, আশ্রয়প্রার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার ইস্যুটি যে মূলত রাজনৈতিক সেটি ইউক্রেনের শরণার্থীদের সঙ্গে আচরণের পার্থক্যের ঘটনাতেই প্রমাণ হয়েছে৷
ইউক্রেন থেকে আসা শরণার্থীদের মধ্যে ছয় হাজার শিশু গ্রিসে আশ্রয় নিয়েছে, এমন তথ্য জানিয়েছেন সেভ দ্য চিলড্রেনের উপদেষ্টা ড্যানিয়েল গোরেভান৷ তিনি বলেন, ‘‘সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা শিশুদের রক্ষায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও গ্রিক সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে, আর এমনটাই আদর্শ হওয়া উচিত৷’’
এফএস/এআই