অভিবাসন সংস্থা ও এনজিওগুলো বছরের পর বছর ধরে ভূমধ্যসাগরে দ্বীপরাষ্ট্র মাল্টার ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ করে আসছে। চলতি মাসে একটি হালনাগাদ প্রতিবেদনে ইউরোপীয় কাউন্সিল অব রিফিউজিস অ্যান্ড এক্সাইলস (ইসিআরই) আবারও দেশটির কট্টর অভিবাসননীতির নিন্দা জানিয়েছে।
ভূমধ্যসাগরে কার্যক্রম পরিচালনা করা মানবিক উদ্ধার জাহাজগুলোর পক্ষ থেকে মাল্টা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো অনুরোধের কোন উত্তর দেয়া হয় না।
কয়েক বছর ধরে ইউরোপের ছোট এই দ্বীপরাষ্ট্রটিতে ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধারকৃত অভিবাসীদের সেখানে আশ্রয় বন্ধ রয়েছে। কারণ কতৃপক্ষ কখনোই এনজিও পরিচালিত জাহাজগুলেোাকে দেশটির বন্দরে প্রবেশ করতে দেয়নি।

অনেক সময় ঝুঁকিতে থাকা অভিবাসীদের নৌকাগুলোকে মাল্টা উপকূলে ভিড়তে না দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে দেশটির বিরুদ্ধে। মাল্টিজ কর্তৃপক্ষের এই নীরবতা দীর্ঘদিন ধরে পর্যবেক্ষন করছে এনজিওগুলো।
ইউরোপীয় কাউন্সিল অব রিফিউজিস অ্যান্ড এক্সাইলস (ইসিআরই)-এর ২০২১ সাল ও চলতি বছরের হালনাগাদ প্রতিবেদনে ইউরোপীয় অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রতি দ্বীপরাষ্ট্রটির ‘অবৈধ’ এবং ‘নিষ্ঠুর’ আচরণের বিবরণ উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে ভূমধ্যসাগরে আসা অভিবাসীদের লক্ষ্য করে দেশটির ভূমিকার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে।
সর্বশেষ এমএসএফের উদ্ধার জাহাজ জিও ব্যারেন্টস ৯ থেকে ১২ মে ভূমধ্যসাগরের মাল্টা ও লিবিয়া উপকূল থেকে ৪৭০ জন অভিবাসীকে উদ্ধারের সময় একই ঘটনা ঘটে।

মানবিক এই উদ্ধার কাজে নিয়োজিত জাহাজটি অনেক চেষ্টা করেও মাল্টা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ এবং অভিবাসীদের নিয়ে সেখানে নোঙর করতে পারেনি।
১৯ মে এমএসএফের মিশন প্রধান জুয়ান মাতিয়াস গিল বলেন, “আমরা আবারও মাল্টিজ কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তায় আতঙ্কিত হয়েছি। মাল্টিজ সশস্ত্রবাহিনী প্রাথমিকভাবে মাল্টিজ অনুসন্ধান এবং উদ্ধার এলাকায় সকল প্রকার উদ্ধারের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। আমাদের জাহাজ থেকে বারবার এই কথা জানানো হয়েছিল কিন্তু বরাবরের মতো তারা নীরব এবং নিষ্ক্রিয় থেকেছে। সহায়তা প্রদান বা সমন্বয় করার জন্য আইনি বাধ্যবাধকতাকে অবহেলা করেছে। উদ্ধার হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদেরকে নিয়ে নোঙর করতে আমাদের অনুরোধও উপেক্ষা করেছে।”
ইসিআরই -এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত দুই বছরে মাল্টা কর্তৃপক্ষ বারবার কোভিডের অজুহাত দিয়ে অভিবাসীদের উদ্ধারের নিশ্চয়তা না দিতে পারার যুক্তি দিয়েছে। দেশটির পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছিল কোভিড -১৯ মহামারির কারণে কারিগরি সক্ষমতা না থাকায় মাল্টা আর কোনও নৌকা বা অন্যান্য জাহাজে থাকা অভিবাসীদের উদ্ধার করতে পারবে না।
অবশ্য ২০২০ সালের ৬ জুন প্রবল বিতর্ক ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে উপকূলে ঝুঁকিতে থাকা ৪২৫ জন অভিবাসীকে অবতরণ করার অনুমোদন দিয়েছিল। কিন্তু এসব অভিবাসীদের সবাইকে এখনও পর্যন্ত আটকে রাখা হয়েছে।
এমএইউ/আরআর