এজিয়ান সাগরে একটি অভিবাসী নৌকার পাশে তুরস্ক কোস্ট গার্ড। ছবি: পিকচার এলায়েন্স
এজিয়ান সাগরে একটি অভিবাসী নৌকার পাশে তুরস্ক কোস্ট গার্ড। ছবি: পিকচার এলায়েন্স

গ্রিক কর্তৃপক্ষের মতে, সোমবার অবৈধভাবে গ্রিসে প্রবেশের চেষ্টা করার সময় এজিয়ান সাগর থেকে প্রায় ৬০০ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তুর্কি বাহিনীর হাতে আটকের আগে অভিবাসীদের গ্রিক উপকূল রক্ষীবাহিনীর অধীনে রাখা হয়। অভিবাসী নৌকাগুলো তুরস্কের জলসীমায় থাকায় সব ধরনের বেআইনি পুশব্যাকের অভিযোগ অস্বীকার করেছে এথেন্স কর্তৃপক্ষ।

২০২২ সালের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সমুদ্র পার হওয়ার প্রচেষ্টা এটিই। 

সোমবার ২৩ মে, প্রতিবেশী দেশ তুরস্ক থেকে গ্রিসে পৌঁছানোর আগেই গ্রিক উপকূল রক্ষীবাহিনী প্রায় ৬০০ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছে তারা৷

এই অভিবাসীরা পাঁচটি পালতোলা নৌকা এবং চারটি রাবারের ডিঙি নৌকায় প্রায় একসঙ্গে তুর্কি উপকূল ছেড়েছিল। গ্রিসের চিওস এবং সামোস দ্বীপপুঞ্জের কাছে যাওয়ার সময় গ্রিক কর্তৃপক্ষ তাদের দেখতে পেয়েছিল।


গ্রিক উপকূল রক্ষীবাহিনীর একজন মুখপাত্র জানান, “গ্রিসের টহল নৌযানগুলি দ্রুত অভিবাসী নৌকাগুলোকে শনাক্ত করে তুর্কি উপকূলরক্ষীদের অবহিত করতে সক্ষম হয়েছিল। পরবর্তীতে কিছু নৌকা নিজ থেকেই তুর্কি উপকূলে ফিরে গিয়েছিল।’’

নৌকাগুলো ছিল “তুর্কি জলসীমায়”

এই গ্রিক মুখপাত্রের মতে, “সবকটি অভিবাসী নৌকাই তুরস্কের আঞ্চলিক জলসীমার ভিতরে ছিল। অর্থাৎ নৌকাগুলোকে অবৈধভাবে ফিরিয়ে দেয়া হয় নি।”

আরও পড়ুন>>এজিয়ান সাগরে পুশব্যাক: ফ্রন্টেক্স প্রধানের পদত্যাগ

গ্রিস অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র অনুসারে, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০২২ সালের প্রথম চার মাসে গ্রিক দ্বীপপুঞ্জগুলোতে অভিবাসন প্রবাহ ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

একই মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মোট তিন হাজারেরও বেশি আশ্রয়প্রার্থী গ্রিসে প্রবেশ করেছেন। যেখানে এক হাজারেরও বেশি এসেছেন এপ্রিল মাসে।

আঙ্কারা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এর মধ্যে হওয়া ২০১৬ সালের চুক্তি অনুযায়ী, তুরস্ক থেকে অস্থায়ী নৌকায় যাত্রা করা অবৈধ যাত্রা থামাতে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আঙ্কারা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয় না বলে নিয়মিত অভিযোগ করে আসছে এথেন্স।

বেআইনি পুশব্যাক

অন্যদিকে, গ্রিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এনজিওগুলো নিয়মিতভাবে বেআইনি পুশব্যাকের অভিযোগ করে আসছে। কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অসংখ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও এথেন্স সবসময় এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

আরও পড়ুন>>শরণার্থী ইস্যুতে দ্বৈতনীতি, গ্রিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ

ফরাসি সংবাদ মাধ্যম লো মোন্দ-সহ বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় মিডিয়ার তদন্তে গত মাসে একটি বিশেষ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। যেখানে বলা হয় ইউরোপীয় সীমান্ত নজরদারি সংস্থা (ফ্রন্টেক্স), ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে এজিয়ান সাগরে বেশ কয়েকটি বেআইনি পুশব্যাকের ঘটনার সঙ্গে জড়িড় ছিল। 

২০২১ সালের জানুয়ারিতে, ইউরোপিয়ান অ্যান্টি-ফ্রড সংস্থা (ওলাফ) ফ্রন্টেক্সের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।

পড়ুন>>বাংলাদেশ, পাকিস্তানের অনিয়মিত অভিবাসীদের আলোকচিত্রে গ্রিসের প্রবাস জীবন

বেশ কিছু এনজিও গ্রিস এবং ফ্রন্টেক্স যৌথভাবে বেআইনি পুশব্যাকের জন্য অভিযুক্ত করেছে। যা এথেন্স পদ্ধতিগতভাবে অস্বীকার করে আসছে।



এমএইউ/আরকেসি


 

অন্যান্য প্রতিবেদন