গ্রিক-তুর্কি সীমান্তের এভ্রোস দ্বীপে এক আফগান নাগরিক নিহত হয়েছেন। তুর্কি সূত্রে জানা গেছে, সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করা একটি অভিবাসী দলের উপর গ্রিক নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালালে এই ঘটনা ঘটে। বহুল আলোচিত গ্রিক দ্বীপ এভ্রোসে গ্রিস কর্তৃপক্ষের ক্রমাগত আইনের অপব্যবহার অঞ্চলটিকে অভিবাসীদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক করে তুলেছে।
তুরস্ক এবং গ্রিসের সাথে থাকা সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করতে গিয়ে এক আফগান অভিবাসী নিহত হয়েছেন। তিনি ১৩ জুন গ্রিক সীমান্তরক্ষীদের গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন।
তুর্কি সংবাদ সংস্থা ডিএইচএ জানিয়েছে, হামলার শিকার ব্যক্তি আটজন অভিবাসীর একটি ছোট দলের অংশ ছিল যারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত ‘আলিবেই’ গ্রামের মধ্যে দিয়ে গ্রিসে প্রবেশের চেষ্টা করছিল।

ডিএইচএ লিখেছে, “গ্রিক নিরাপত্তা বাহিনী অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করতে চাওয়া আফগান অভিবাসীদের একটি দলকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। সেখানে থাকা একজন ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছিলেন। আহত ব্যক্তিকে পরবর্তীতে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ডাক্তারদের দ্রুত হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে বাঁচানো যায়নি।”
সংবাদ সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, উক্ত ঘটনায় ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে।
তুরস্কের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের এডির্ন এর নিকটবর্তী মেরিচ পুলিশ বার্তা সংস্থা এএফপিকে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। কিন্তু পুলিশ তুর্কি পুলিশ গণমাধ্যমে প্রকাশিত এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে মন্তব্য করতে রাজি হয় নি।
পড়ুন>> গ্রিসে অভিবাসনপ্রত্যাশী ও মানবপাচারকারী নিহত
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুরস্কের সাথে থাকা সীমান্তের এই অঞ্চলে গ্রিক বাহিনী অসংখ্য ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছরের মে মাসের শেষের দিকে অবৈধভাবে গ্রিসে প্রবেশের চেষ্টা করার সময় দুই আফগান অভিবাসী নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আহত হয়েছিলেন।
তুর্কি সূত্রে বলা হয়েছিল, গ্রিক পুলিশ অভিবাসীদের তাদের দেশে প্রবেশে বাধা দিতে রাবার বুলেট ব্যবহার করেছিল।
এছাড়া এক মাস আগে, আফ্রিকান বংশোদ্ভূত ২২ বছর বয়সি একজন অভিবাসী গ্রিস এবং তুরস্কের সাথে থাকা এভ্রোস নদীতে মারা যান। এভ্রোস অঞ্চলে এবং এজিয়ান সাগরে গ্রিক কর্তৃপক্ষের আচরণের বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে অভিবাসন সংস্থা, এনজিও ও অধিকার সংগঠনগুলো।
গত সপ্তাহে, ২৮ জন অভিবাসীর একটি দল বেশ কিছু দিন ধরে এভ্রোস নদীর একটি দ্বীপে আটকে ছিল। অভিবাসন সংস্থাগুলোর শত শত অনুরোধ সত্ত্বেও পরবর্তীতে তাদেরকে তুরস্কে ফিরিয়ে দেয় গ্রিক সীমান্ত রক্ষীরা।
আরও পড়ুন>>মরিয়া অগ্নিকাণ্ডে জড়িত আফগান তরুণদের শাস্তি কমালো গ্রিস
সমুদ্রে ঝুঁকিতে থাকা অভিবাসীদের সহায়তারকারী প্লাটফর্ম এলার্ম ফোনের প্রধান লিসা ইনফোমাইগ্রেন্টসকে বলেন, “গ্রিস ইউরোপীয় আইনকে সম্মান করে না এবং এটি খুবই উদ্বেগজনক।”
এমএইউ/এআই