মধ্য ভূমধ্যসাগরে ৭১ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে জিও ব্যারেন্টস৷ ছবি এমএসএফের টুইটার থেকে নেয়া৷
মধ্য ভূমধ্যসাগরে ৭১ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে জিও ব্যারেন্টস৷ ছবি এমএসএফের টুইটার থেকে নেয়া৷

অভিবাসীদের উদ্ধারকারী জাহাজ জিও ব্যারেন্টস জানিয়েছে, মধ্য ভূমধ্যসাগরে ৭১ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে৷ এদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে৷

সবমিলিয়ে ৩০০ জনেরও বেশি অভিবাসীকে ইটালিতে নামানোর জন্য সবুজ সঙ্কেত দেয়া হয়েছে সি–ওয়াচ–চার জাহাজটিকে৷ উদ্ধার হওয়া ৫৯ জন অভিবাসী লুই মিশেল ছেড়ে অন্যদিকে রওনা দিয়েছে৷

ডক্টর্স উইদাউট বর্ডার্স (এমএসএফ) সোমবার (২৭ জুন) প্রথম ঘোষণা করেছিল তাদের জাহাজ জিও ব্যারেন্টস ৭১ জনকে উদ্ধার করেছে, ২২ জন এখনো নিখোঁজ৷ উদ্ধার করার পরই একজন নারীর মৃত্যু হয় বলে জানায় তারা৷ 

সংগঠনটি মঙ্গলবার জানায়, বেঁচে ফেরা অনেক অভিবাসীর চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল৷ জলে ভেসে থাকার ফলে সাগরের পানি পেটে চলে গিয়েছিল তাদের৷ তাই হাইপোথার্মিয়া দেখা দেয় অর্থাৎ শরীরের তাপমাত্রা কমে গিয়েছিল আচমকা৷ 


যে অভিবাসীদের উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের অন্তত ১৫%–এর শরীরে পুড়ে যাওয়ার মতো জ্বালা শুরু হয়েছিল৷ সাধারণত যারা উত্তর আফ্রিকা থেকে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করেন,তারা এ জাতীয় নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন৷ আবহাওয়াও প্রতিকূল থাকে৷


খাবার ও পানির অভাব রয়েছে, এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে নৌকার ইঞ্জিনের জ্বালানির রাসায়নিকের থেকেও নানা উপসর্গ দেখা দেয়৷ 

রবারের ডিঙি নৌকা থেকে উদ্ধার

এমএসএফ টুইট করে জানিয়েছে, দুই নারী সন্তান হারিয়েছেন এবং এক নারী তার ছোট ভাইকে হারিয়েছেন৷ তিন জনকে স্ট্রেচার দিয়ে উদ্ধার করতে হয়েছে কারণ তারা হাঁটতে পর্যন্ত পারছিল না৷

অভিবাসীদের নিয়ে আসা রবারের ডিঙি নৌকাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল৷ উদ্ধারকারী দল যখন তাদের কাছে পৌঁছায়, তার আগে নৌকাটিতে জল ঢুকে গিয়েছিল৷ ফলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক ছিল৷ 

সংবাদসংস্থা ডিপিএ জানিয়েছে, জিও ব্যারেন্টসের ক্রু সদস্য রিকার্ডো গাট্টি ইটালির রেডিও স্টেশন রেডিকালেকে কিছু তথ্য জানিয়েছেন৷ তিনি বলেছিলেন, বেশ কিছু অভিবাসী জলে ভাসছিলেন৷ একজনের মৃতদেহ ঢেউয়ের ধাক্কায় ভেসে যায়৷

গাট্টি জানিয়েছেন, এমএসএফ টুইট করেও বলেছিল, একটি শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে৷ যাকে হেলিকপ্টারে তার মায়ের সঙ্গে মাল্টায় পাঠানো হয়৷


লুই মিশেলকে অবতরণের অনুমতি

জিও ব্যারেন্ট হল মধ্য ভূমধ্যসাগরে এনজিও দ্বারা চালিত বেশ কয়েকটি সহায়তাকারী জাহাজের অন্যতম৷ উত্তর আফ্রিকার দেশ টিউনিশিয়া, লিবিয়া এবং দক্ষিণ মধ্য ইউরোপের মধ্যে ইতালি এবং মাল্টার মধ্যে মূলত যাতায়াত করে৷


এদিকে ওশান ভাইকিং বেশ কয়েকটি উদ্ধার অভিযান চালানোর পর সবমিলিয়ে ওই জাহাজে মোট ১৫৬ জন অভিবাসী রয়েছেন৷ 

লুই মিশেল সোমবার রাতে ৫৯ জনকে নিয়ে লাম্পেদুসায় অবতরণ করেছে৷ মঙ্গলবার টুইটারে এ কথা জানায় তারা৷ 

সি–ওয়াচ মঙ্গলবার সকালে টুইট করেছে, দক্ষিণ ইতালির পোর্তো এম্পেডোকলেতে অবতরণের অনুমতি দেয়া হয়েছে তাদের৷ ওই জাহাজটিতে ৩০৩ জন অভিবাসী রয়েছেন৷ এক সপ্তাহ আগে উদ্ধার করার পর জাহাজেই ভাসছেন তারা৷ চিকিৎসার কারণে কয়েকজনকে আগে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।

ইতালি এবং ইইউ লিবিয়ার উপকূলরক্ষী এবং টিউনিশিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে৷ এর ফলে অভিবাসী নৌকা আটকে অভিবাসী দলগুলিকে দেশে ফেরানোও হচ্ছে৷ এই চুক্তি নিয়ে বিতর্ক চলছে৷


আরকেসি/ কেএম (ডিপিএ)

 

অন্যান্য প্রতিবেদন