ইউক্রেন হাঙ্গেরি সীমান্তে সেনা টহলের একটি দৃশ্য। ছবি: পিকচার এলায়েন্স
ইউক্রেন হাঙ্গেরি সীমান্তে সেনা টহলের একটি দৃশ্য। ছবি: পিকচার এলায়েন্স

চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত হাঙ্গেরি সীমান্তে এক লাখ পাঁচ হাজারেরও বেশি অনিয়মিত অভিবাসীকে আটকে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। কট্টর অভিবাসন নীতি অনুসরণ করা ইউরোপের দেশটির সীমান্ত পাড়ি দেয়া বর্তমানে অভিবাসীদের কাছে একটি অসাধ্য কাজে পরিণত হয়েছে।

হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রীর অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জিওর্গি বাকোন্ডি বুধবার বলেন, “২০২১ সালের ৪৩ হাজার অনিয়মিত অভিবাসীর বিপরীতে চলতি বছর এখন পর্যন্ত এক লাখ পাঁচ হাজার লোককে হাঙ্গেরি সীমান্ত অতিক্রমে বাধা দেয়া হয়েছে।” 

তিনি হাঙ্গেরির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এম১কে আরও বলেন, “অভিবাসীদের বৃহৎ দলের জোরপূর্বক প্রবেশের প্রচেষ্টা, টহল অফিসারদের বিরুদ্ধে হামলা এবং সীমান্ত বেড়া কেটে ফেলার চেষ্টা নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

২০২০ ও ২০২১ সালে করোনা মহামারি জনিত স্বাস্থ্য বিধিনিষেধের কারণে হাঙ্গেরি সীমান্ত পার হয়ে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোতে অনিয়মিত অভিবাসী প্রবেশের সংখ্যা কমে এসেছিল। কিন্তু করোনা বিধি উঠে যাওয়ার পর থেকেই আবারও বেড়েছে সীমান্তে অবৈধ প্রবেশের চেষ্টা। 

আরও পড়ুন>>ইউক্রেনীয় শরণার্থীরা বদলে দিচ্ছেন অভিবাসন রাজনীতি

ইউরোপের সবচেয়ে কট্টর অভিবসন নীতি অনুসরণ করা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হাঙ্গেরি। দেশটির কট্টর ডানপন্থি ও অভিবাসী বিরোধী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান দীর্ঘদিন ধরে দেশটিতে অভিবাসন বিরোধী পরিবেশ তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ আছে। 

অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জিওর্গি বাকোন্ডি আরও বলেন, ‘ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইটালি, গ্রিস এবং তুরস্কও নতুন করে তাদের উপকূলীয় এলাকায় অভিবাসীদের বড় ঢেউ দেখতে পাচ্ছে। এছাড়া অনেকে অভিবাসী স্পেন এবং পশ্চিম বলকান রুট দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করছে।

তিনি দাবি করেন, যারা এসব পথে আসছেন তাদের বেশিরভাগই সিরীয়, আফগান, পাকিস্তানি এবং ভারতীয় নাগরিক। চলতি বছরের গ্রীষ্মের শেষের দিকেও অভিবাসন স্রোত হ্রাসের কোনও সম্ভাবনা নেই। 

পড়ুন>>অভিবাসন ইস্যুতে আবারও হাঙ্গেরিকে নিন্দা ইউরোপীয় আদালতের

বর্তমান পরিস্থিতি সতর্কতার সাথে বিশ্লেষণ এবং দৃঢ় সরকারী পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউক্রেন-হাঙ্গেরি সীমান্তের পরিস্থিতি এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে হাঙ্গেরি কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত জটিল উপায়ে দেশের সীমান্তে একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে, বলেন জিওর্গি বাকোন্ডি। 

২০২০ সালের শেষের দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোর্ট অফ জাস্টিস (সিজেইইউ) হাঙ্গেরির আশ্রয় অধিকার পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়ায় একটি রায় দিয়েছিল৷ রায়ে বলা হয়েছিল, দেশটিতে প্রবেশ করা আশ্রয়প্রার্থীদের সার্বিয়ার সীমান্তের "ট্রানজিট জোনে" অবস্থিত ক্যাম্পে বৈধ কারণ ছাড়াই আটকে রাখা হয়েছিল৷ আদালত আটক আশ্রয়প্রার্থীদের মুক্তি দিতে রায় দিলে অবশেষে হাঙ্গেরি সীমান্তে এসব বিতর্কিত শিবির বন্ধ করতে হয়৷

পড়ুন>>হাঙ্গেরিতে ফের ক্ষমতায় অভিবাসীবিরোধী অর্বান

এনজিও ও অধিকার সংগঠনগুলোর টানা সমালোচনা এবং ইউরোপীয় আদালতের বারবার নিন্দা সত্ত্বেও ভিক্টর অর্বানের অভিবাসন বিরোধী আচরণের কোন পরিবর্তন হয়নি৷


এমএইউ/এআই (বুদাপেস্ট টাইমস, ডেইলি নিউজ হাঙ্গেরি)


 

অন্যান্য প্রতিবেদন