লিবিয়া সীমান্তে সাহারা মরুভূমিতে অভিবাসীদের একটি দল। ছবি: রয়টার্স
লিবিয়া সীমান্তে সাহারা মরুভূমিতে অভিবাসীদের একটি দল। ছবি: রয়টার্স

লিবিয়ার জরুরী পরিষেবা দপ্তর বুধবার জানিয়েছে, মধ্য আফ্রিকার স্থলবেষ্টিত দেশ চাদের সাথে থাকা লিবিয়া সীমান্তের মরুভূমিতে ২০ অভিবাসীর মৃতদেহ পাওয়া গেছে। নিহত অভিবাসীরা ১৪ দিন আগে মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

লিবিয়ার এই অভিবাসন রুটটি ভূমধ্যসাগরের চেয়ে অনেকটা কম পরিচিত কিন্তু এটি খুবই ভয়ংকর একটি অভিবাসন রুট।

সাব সাহারা আফ্রিকার দেশ চাদ সীমান্ত থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মরুভূমি থেকে মঙ্গলবার ২০ অভিবাসীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে লিবিয়ার কাউফরা শহরের জরুরি পরিষেবা দপ্তর। 

উদ্ধারকৃত লাশগুলো মরুভূমির বালির চারপাশে এবং একটি কালো পিকআপের নীচে ছিল। লিবিয়ার কাউফরা শহরের অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের প্রধান কর্মকর্তা ইব্রাহিম বেলহাসান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “গাড়ির চালক পালিয়ে গেছে। আমাদের ধারনা অভিবাসীদের দলটি ১৪ দিন আগে মারা গেছে কারণ এই এলাকার একটি মোবাইল ফোন থেকে ১৩ জুন সর্বশেষ ফোন কল হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “মৃতদেহগুলোর মধ্যে দুজন লিবীয় নাগরিক এবং বাকিরা চাদের নাগরিক যারা অবৈধভাবে লিবিয়ায় প্রবেশ করেছিল। তাদের সবাই মরুভূমির তীব্র গরমে পানিশূন্যতায় মারা গেছেন।”

কাউফরা রেসকিউ সার্ভিস মৃতদেহ উদ্ধারের সময়কার একটি ভিডিও বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছে। যেখানে উদ্ধার হওয়া প্রতিটি মৃতদেহকে একটি কালো ব্যাগে রাখতে দেখা গেছে।


একটি কালো গাড়ির নিচে থেকে অভিবাসীদের মৃতদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। ছবি: লিবিয়া রেসকিউ সার্ভিস
একটি কালো গাড়ির নিচে থেকে অভিবাসীদের মৃতদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। ছবি: লিবিয়া রেসকিউ সার্ভিস


তাদের ফেসবুক পাতায় পোস্ট করা একটি বার্তায় লেখা হয়েছে, ‘‘এই ২০টি মৃতদেহ প্রসিকিউটর এবং মেডিকেল পরীক্ষকের পরিচালিত আইনি প্রক্রিয়ার পরে দাফন করা হয়েছে।’’ 

তবে লাশগুলোর অবস্থা কেমন ছিল এবং ঠিক কোন পদ্ধতিতে পরীক্ষা করা হয়েছে সেটি উল্লেখ করা হয় নি। 

আন্তজার্তিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম এর নিখোঁজ অভিবাসী প্রকল্প সাব সাহার আফ্রিকার এই রুটে ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫,৩৮৬ অভিবাসী মারা যাওয়ার তথ্য দিয়েছে। 

২০২২ এর শুরু থেকে ইতিমধ্যে ১৬১ অভিবাসী নিহত হওয়ার ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে। 

তবে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা সম্ভবত অনেক বেশি। কারণ সাহার অঞ্চলের মরুভূমি থেকে সব সময় লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয় না। বিশেষ করে দুর্গম এলাকায় ঘটা দুর্ঘটনাগুলো অনেকটা আড়ালেই থেকে যায়। 



সাব-সাহারান আফ্রিকা থেকে বিপুল সংখ্যক অভিবাসী লিবিয়ায় কাজ খোঁজার বা ইউরোপে পৌঁছানোর আশায় প্রবেশ করে। কিন্তু যাত্রাপথে এবং বিশেষ করে সাহারা পারাপারের সময় অভিবাসীরা মানব পাচারকারীদের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল থাকে যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।

মরুভূমিতে অভিবাসীদের পরিবহনকারী যানবাহনগুলো ভেঙে যাওয়া বা পাচারকারীদের ধরতে চেকপয়েন্ট বসানো সামরিক টহলের ভয়ে অনেক পাচারকারী সীমান্তবর্তী আরেক দেশ নাইজার থেকে তাদের যাত্রীদের রেখে পালিয়ে যায়। 

চলতি বছর বেশ কিছু বাংলাদেশি অনিয়মিত অভিবাসীও আলজেরিয়া থেকে পাচারকারীদের মাধ্যমে নাইজারে পাচার হওয়ার কথা ইনফোমাইগ্রেন্টসকে জানিয়েছিলেন। 


এমএইউ/এআই














 

অন্যান্য প্রতিবেদন