বেলারুশ সীমান্তে প্রাচীর তৈরীতে ব্যস্ত পোল্যান্ডের সৈন্যরা। ছবি: রয়টার্স
বেলারুশ সীমান্তে প্রাচীর তৈরীতে ব্যস্ত পোল্যান্ডের সৈন্যরা। ছবি: রয়টার্স

বেলারুশ সীমান্তে নির্মিত পাচঁ মিটারেরও বেশি উচ্চতার নতুন সীমান্ত প্রাচীর বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করেছেন পোলিশ প্রধানমন্ত্রী। এক বছর ধরে প্রতিবেশী বেলারুশ থেকে আসা অনিয়মিত অভিবাসন এবং সীমান্তে সহিংস পরিবেশকে সম্পূর্ণরূপে রোধ করার জন্য এই প্রাচীর গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখবে বলে দাবি পোল্যান্ডের।

প্রতিবেশী বেলারুশ থেকে ঠিক এক বছর আগে শুরু হয়েছিল পোল্যান্ড অভিমুখে অভিবাসন স্রোত। ভবিষ্যৎ ঝুঁকি এড়াতে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে আর কোন সময় নষ্ট করতে চায় না পোল্যান্ড! 

পোলিশ প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাউইকি ৩০ জুন বৃহস্পতিবার সীমান্তে প্রাচীর তৈরীর কাজের সমাপ্তি ঘোষণা করে নতুন এই প্রাচীরটি উদ্বোধন করেছেন। 

পাঁচ মিটার উঁচু এবং ১৮৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নতুন ইস্পাতের তৈরী প্রাচীরটি সম্পূর্ণভাবে ইলেকট্রনিক মনিটরিং সিস্টেমের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে ওয়ারশো। 

যদি পোলিশও সরকার আশ্বস্ত করেছে যে, এই প্রাচীরটি রাশিয়ার মিত্র দেশে বেলারুশের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক ও সামরিক কৌশলের অংশ। কিন্তু অভিবাসন সংস্থা ও এনজিওগুলো নতুন এই প্রাচীর নির্মাণে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। 



ইতিমধ্যে পোলিশ সীমান্তে অভিবাসীরার মারধর ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাদের আশঙ্কা, নতুন এই প্রাচীরের ফলে ভবিষ্যতে আশ্রয়প্রার্থীরা সহিংসতা এবং দুর্ব্যবহারের শিকার হবেন এবং আশ্রয়ের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।

যেহেতু এই অঞ্চলটি অতিক্রম করার আর কোন উপায় থাকবে না সেক্ষেত্রে যুদ্ধসহ নানা নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিরাও সুরক্ষা আবেদন করতে পারবেন না।

জরুরি অবস্থার অবসান

১ জুলাই শুক্রবার থেকে সীমান্তে জারি করা জরুরি অবস্থাও প্রত্যাহার করেছে পোল্যন্ড। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বেলারুশ সীমান্তে আরোপিত জরুরি অবস্থার কারণে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের এই এলাকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা ছিল। অধিকারকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে পারেননি। 

জরুরি অবস্থার কারণে সীমান্তে আটকে পড়া অভিবাসীদের মধ্যে মানবিক সংকট দেখা দিয়েছিল। কারণ এনজিওগুলোও সেখানে অভিবাসীদের মধ্যে কোন প্রকার খাবার পানি, খাবার ও গরম কাপড় দিতে পারেনি।

২০২১ সালের গ্রীষ্ম থেকে অভিবাসীদের ছোট ছোট দল নিয়মিত এই সীমান্ত দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) প্রবেশের চেষ্টা করেছে।

ইইউ’র দাবি, বেলারুশের স্বৈরাচারী রাষ্ট্রপতি আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো দেশটির ২০২১ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের পরে তার সরকারের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার প্রতিশোধ নিতে এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন৷ 

বেলারুশ থেকে অভিবাসীদের পোল্যান্ডে ঠেলে দেওয়ার সময় সহিংসতার ঘটনাও উঠে এসেছিল গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে৷ 


বেলারুশের পাশাপাশি পোলিশ সীমান্তরক্ষীরাও হিংস্রভাবে অভিবাসীদের বেলারুশের দিকে ঠেলে দেওয়ার অসংখ্য খবর উঠে এসেছে৷ সীমান্তে সহিংসতায় এ পর্যন্ত ২০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেলেও অভিবাসী ও অধিকারকর্মীদের ধারণা করেন প্রকৃত মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি৷

আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ইইউ সীমান্তে যেকোন ধরনের পুশব্যাক বেআইনি, তবে পোলিশ সরকার নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে পুশব্যাকের অনুমতি দিতে সংসদে আইন পরিবর্তন করেছে৷


এমএএইউ/আরআর


















 

অন্যান্য প্রতিবেদন