বাংলাদেশি অভিবাসীদের বড় একটি অংশ কাজ করেন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, ওমান ও বাহরিনের মতো মধ্যপ্রাচ্যের দেশে। গত কয়েক বছরে মানব পাচারকারীদের নতুন টার্গেটে পরিণত হয়েছেন এসব দেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ইউরোপে অনিয়মিত অভিবাসনের সম্ভাব্য ঝুঁকি ও বাস্তবতা নিয়ে ইনফোমাইগ্রেন্টসের বিশেষ প্রতিবেদন।
একাংশের দক্ষিণ এশীয় অভিবাসী কর্মীদের কাছে ইউরোপে অভিবাসন লোভনীয় প্রস্তাব। কোভিড ১৯ মহামারির কারণে সীমান্ত নিষেধাজ্ঞা ছিল৷ তা বন্ধ হওয়ার পরই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মানবপাচারে জড়িত দালালদের দৌরাত্ম্য শুরু হয়েছে আবারো।
ফেসবুক, টেলিগ্রাম ও এবং টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ইউরোপ অভিমুখে মানব পাচারকারীদের মুখরোচক বিজ্ঞাপনে ছয়লাপ। কিন্তু পাচারকারীদের দেয়া তথ্য আর বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।
পাশপাশি গত বছর থেকে শুরু হয়েছে গ্রিস ও জার্মানি সহ বিভিন্ন দেশ থেকে অনিয়মিত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া। ইতিমধ্যে শতাধিক বাংলাদেশিকে ফেরতও পাঠিয়েছে জার্মানি।
২০১৬ সালের পর সম্প্রতি আবারো অনিয়মিত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাতে শুরু করেছে গ্রিস।
সেই সঙ্গে অনিয়মিত অভিবাসী তকমা থেকে বৈধতা প্রাপ্তির জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রাপ্তিতেও পিছিয়ে আছে বাংলাদেশিরা।
কেন আগ্রহী মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসীরা?
মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তবে কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ থেকে গণহারে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন শ্রমিক পাঠানো বন্ধ রয়েছে। যারা দীর্ঘদিন ধরে এসব দেশে আছেন তারাও রয়েছেন নানা সমস্যায়।
পড়ুন>>কেন সমুদ্রপথে ইটালিতে হাজারো মিশরীয় অভিবাসী?
২০২০ সালে করোনা মহামরি শুরুর পর সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে বিদেশি শ্রমিকদের কাজের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ ও কোটা আরোপ করা হয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশি অভিবাসীদের কর্মসংস্থানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকেরা স্বল্প দক্ষ হওয়ার কারণে এ ধরনের বিধিনিষেধের কারণে তাঁদের কর্মসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তুলনামূলকভাবে বেশি।
অপরদিকে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর প্রবাসীরা দীর্ঘদিন ধরেই সেসব দেশের বেতন কাঠামো নিয়ে অসন্তুষ্ট। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু খাত ছাড়া বেশিরভাগ প্রবাসীদের পক্ষে নাগরিকত্ব পাওয়া কিংবা স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পাওয়ায় সম্ভব নয়।
পাশপাশি বাংলাদেশে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বল্প বেতন কাঠামোতে দেশের পরিবার এবং বিদেশে নিজের খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেক প্রবাসী।
এমন অনেক বাস্তবিক সমস্যাকে হাতিয়ার করে বিজ্ঞাপনের ফাঁদ পেতেছে মানব পাচার চক্রগুলো।
পাচারকারীদের গ্রাহক পাওয়ার কৌশলসমূহ
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর প্রবাসী বাংলাদেশিদের ইউরোপে পৌঁছে দিতে নানা প্রস্তাব দিয়ে থাকেন পাচারকারীরা। ২০২১ সালের নভেম্বরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় এক পাচারকারীর সঙ্গে মধ্যস্থতাকারী ও গ্রাহক সেজে কথা বলে ইনফোমাইগ্রেন্টস। যিনি নিজেই দুবাই থেকে আলবেনিয়া হয়ে সে সময় ইটালির একটি ক্যাম্পে অবস্থান করছিলেন।
আরও পড়ুন>>সিলেট থেকে গ্রিস: বাংলাদেশি অভিবাসীর দীর্ঘ ও দুঃসহ যাত্রা
তিনি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে থেকে ইউরোপে আসতে বিভিন্ন ‘প্যাকেজ’ রয়েছে বলে আমাদের জানান। তার প্রস্তাবিত বিভিন্ন প্রস্তাব নীচে ইনফোমাইগ্রেন্টসের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:
- ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ভুয়া ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও উচ্চ বেতনের কাজ দেখিয়ে ইউরোপের কোন দেশে শেঙ্গেন ভিসা নিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়। এক্ষেত্রে বেশিরভাগ অভিবাসীই ভিসা পেতে ব্যর্থ হন। ভিসা পেতে ব্যর্থ হলেও ফাইল চার্জ হিসেবে ২০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। এটিই পাচারকারীদের একটি দীর্ঘমেয়াদি অর্থ উপার্জনের সুযোগ করে দেয়।
- মধ্যপ্রাচ্য থেকে ভিসা দিয়ে তুরস্ক তারপর অনিয়মিত পথে গ্রিসে প্রবেশ করানোর প্রস্তাব দিয়ে থাকে দালালরা। এক্ষেত্রে তুরস্ক পর্যন্ত মাত্র চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করলেও সেখান থেকে গ্রিসে প্রবেশের ব্যাপারে আগে থেকে কোনো চুক্তি করা হয় না। ভুক্তভোগীরা জানান, তুরস্ক থেকে গ্রিসে প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রতি বার ব্যর্থ হলে আলাদা টাকা দিতে হয়। অনেক অভিবাসীই এজিয়ান সাগরে প্রাণ হারান।
- গ্রিস সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পুশব্যাকসহ সীমান্তে কড়াকড়ি করার কারণে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আলবেনিয়া এবং পরবর্তীতে সেখান থেকে কসোভো, সার্বিয়া, বসনিয়াসহ বিভিন্ন দেশ পার হয়ে ইউরোপের শেঙ্গেন অঞ্চলে প্রবেশ করিয়ে দেয়ার লোভ দেখানো হয়।
- মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে ইরান ও তুরস্ক হয়ে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপের স্বপ্ন দেখতে নিয়মিত প্রবাসীদের অবৈধ অভিবাসনের দিকে আকৃষ্ট করে সংঘবদ্ধ পাচারচক্র।
- বাংলাদেশি অনেক অভিবাসী শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে আলজেরিয়া কিংবা মরক্কো হয়ে স্প্যানিশ ছিটমহল সেওটা ও মেলিলায় প্রবেশ করিয়া দেয়ার লোভনীয় প্রস্তাব পেয়ে থাকেন বলে জানিয়েছেন ইনফোমাইগ্রেন্টসকে।
সম্ভাব্য বিপদ ও মৃত্যুঝুঁকি
লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইটালি আসতে প্রাণ হারানোর ঘটনা সম্পর্কে সবাই জানলেও দালালের দেয়া উপরোক্ত প্রস্তাবগুলোর ঝুঁকি এবং বিপদ সম্পর্কে সাধারণ মানুষ অবগত নন।
আরও পড়ুন>>ফরাসি আশ্রয় আদালতের সুরক্ষা প্রাপ্তিতে পিছিয়ে বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থীরা
তুরস্ক, ইরান, আলবেনিয়া, সার্বিয়াসহ অনেক অভিবাসন রুট স্থল সীমান্ত হওয়ায় দালালরা সহজেই অসত্য ও অর্ধেক সত্য তথ্য দিয়ে অভিবাসীদের বিভ্রান্ত করেন। প্রকৃতপক্ষে এসব পথে নানা নির্যাতন ও শোষণের পাশাপাশি রয়েছে মৃত্যুঝুঁকি এবং পক্ষাগাতগ্রস্ত হওয়ার মতো ঘটনা। বলকান রুট সহ প্রায় সবগুলো অনিয়মিত অভিবাসনের রুটেই রয়েছে মৃত্যু আতংক।
আলজেরিয়া, মরক্কো হয়ে বারবার ‘গেম’ মেরে ব্যর্থ হয়ে দীর্ঘ আড়াই বছর বিভিন্ন রুটে থাকার পর ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছতে সক্ষম হওয়া অভিবাসন প্রত্যাশী জামাল ইনফোমাইগ্রেন্টসকে বলেছিলেন,
মরক্কো থেকে স্পেনে প্রবেশ করতে গিয়ে মরক্কো পুলিশের হাতে আটক হয়ে অন্যান্য অভিবাসীদের সঙ্গে আমাকে আফ্রিকার দেশ নাইজারের মরুভূমিতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখান থেকে আবার আলজেরিয়া ফিরে আসতে দালালদের দিতে হয় দ্বিগুণ অর্থ।
একই রুটে চলতি বছর ক্যানারি দ্বীপে পৌঁছতে গিয়ে নিখোঁজ হয় আরও দুই বাংলাদেশি অভিবাসী। স্প্যানিশ এনজিও কামিনান্দো ফ্রন্তেরাসের মতে, লানজারোট দ্বীপে পৌঁছানোর চেষ্টা করে দুই বাংলাদেশি সহ প্রায় ১৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী নিখোঁজ হয়েছিলেন।
অপরদিকে ইরান থেকে তুরস্কে প্রবেশের সবচেয়ে প্রচণ্ড ঝুঁকি পেরিয়ে আসা আরেক অভিবাসী রাকিব ইনফোমাইগ্রেন্টসকে বলেন,
ইরান তুরস্ক সীমান্ত পাড়ি দেয়া এত সোজা না। সেখানে মুহূর্তের মধ্যেই পাল্টে যায় পরিবেশ। আমরা রুট ঠিক না থাকায় মানে দালালরা নিরাপদ মনে না করায় প্রায় ১৮ দিন সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করেছিলাম। অবশেষে টানা ৩ দিন তুষারের মধ্যে হেঁটে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে তুরস্কে পৌঁছেছিলাম।
এছাড়া চলতি বছরের মার্চে সার্বিয়ায় একজন বাংলাদেশি অভিবাসীর রহস্যজনকভাবে মৃত্যু ঘটে৷ মধ্যরাতে বলকান দেশটির রাজধানী বেলগ্রেড থেকে লরিতে লুকিয়ে ইটালিতে যাওয়ার চেষ্টার সময় তার মৃত্যু হয় বলে উঠে আসে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে।৷
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বলকান রুটে ডয়চে ভেলের এক সরেজমিন প্রতিবেদনে , বসনিয়ার সবচেয়ে বড় অভিবাসী ক্যাম্প ব্লাজুয়-এ (নিউ ক্যাম্প) ১০০-এর কাছাকাছি বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থী আটকে থাকার তথ্য উঠে আসে। ৷
আরও পড়ুন>>সিলেট থেকে সার্বিয়া: দালালচক্রের খপ্পরে সর্বস্ব হারানোর গল্প
সেখান থাকা অনেকে বাংলাদেশিকেই সীমান্তে নানা নির্যাতনের শিকার হয়ে পক্ষাগাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন বা মারাত্মকভাবে অসুস্থ হন।
বৈধতা প্রাপ্তিতে বাধা
পাচারকারীরা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে ইউরোপের অভিবাসন বিভিন্ন সুবিধা অসুবিধা তুলনা করেই প্রবাসীদের অনিয়মিত অভিবাসনে উদ্বুদ্ধ করেন।
প্রথমেই বলা হয়, ইউরোপের যে কোনো দেশে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইলে বছরের পর থাকা যায়। বাস্তবতা হচ্ছে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার হার ২০ শতাংশেরও কম। বেশিরভাগ দেশেই আশ্রয় আবেদনের সঙ্গে কাজের অনুমতি দেয়া হয় না।
আরও পড়ুন>>বাংলাদেশ, পাকিস্তানের অনিয়মিত অভিবাসীদের আলোকচিত্রে গ্রিসের প্রবাস জীবন
বৈধ কাজের অনুমতি ছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শ্রমশোষণের শিকার হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
অপরদিকে, যে কোনো সীমান্ত দিয়ে ইউরোপের শেঙ্গেন অঞ্চলে প্রবেশের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হলে সেক্ষত্রে আঙুলের ছাপ নিয়ে নেয়া হয়। যার ফলে ডাবলিন বিধিমালার কারণে একজন আশ্রয়প্রার্থী কাঙ্ক্ষিত দেশে আশ্রয় আবেদন করতে ব্যর্থ হন।
এই বিধিমালার আওতায় প্রথম ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙুলের ছাপ দেয়া দেশেই একজন ব্যক্তিকে আশ্রয় আবেদন জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো কারণে একজন অভিবাসী যদি ইটালি পুলিশের হাতে আটক হন বা আঙুলের ছাপ দেন তিনি আর ফ্রান্স, জার্মানি বা স্পেনে আশ্রয় আবেদন করতে পারবেন না।
প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি কিশোর ও তরুণ অভিবাসীদের অভিভাবকহীন নাবালক হিসেবে আশ্রয় নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে হাড় পরীক্ষা করে বয়স নির্ধারণ ও বৈধ পাসপোর্ট প্রদর্শনের শর্ত নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। যার ফলে শুধুমাত্র একটি জন্ম নিবন্ধন দেখিয়ে বৈধতা লাভ অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
ইটালি , গ্রিস ও ফ্রান্সে অবস্থানরত বহু অপ্রাপ্তবয়স্ক অভিবাসী পাসপোর্টের বয়স জটিলতায় অনিয়মিত অভিবাসী হিসেবে বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাস করছেন।
সর্বশেষ দালালরা ইউরোপের দেশ পর্তুগালে চাকুরির চুক্তি কেনার বিনিময়ে বৈধতা প্রাপ্তির সুযোগকে কাজে লাগানোর প্রস্তাব দিয়ে থাকেন। কিন্তু পর্তুগালে এভাবে বৈধতা প্রাপ্তি বিপুল পরিমাণ অর্থ এবং দুই থেকে তিন বছর সময়সাপেক্ষ বিষয়। প্রতি মাসে প্রায় ২৮ থেকে ৩৫ হাজার টাকা হিসেবে টানা ২৪ মাস কর দিলে সেখানে একজন ব্যক্তি বৈধতার সুযোগ রয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিলের শেষে ইউরোপীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে আসে পর্তুগালে টেওটোনিও শহরের বিভিন্ন কৃষিক্ষেতে কর্মরত বাংলাদেশ, ভারত পাকিস্তান এবং থাইল্যান্ড থেকে অভিবাসী শ্রমিকদের শোষণ আর বঞ্চনার গল্প।
ইউরোপের ধনী দেশগুলোর মতো পর্তুগালে বেতন বেশি না হওয়ায় এবং শ্রমিক শোষণের ঝুঁকি থাকায় একজন ব্যক্তির পক্ষে এই পথে বৈধতা প্রাপ্তি অত্যন্ত কঠিন হয়ে যায়।
সমাধান: বৈধ অভিবাসন
২০১৯ সালে ঢাকায় রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু) আয়োজিত এক সম্মেলনে বলা হয়, অভিবাসনের পুরো প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে কাজ করেন মধ্যস্বত্বভোগীরা (দালাল)।
পড়ুন>>প্রতিবারে গেমে ব্যর্থ হলে পাচারকারীরা আবার টাকা দাবি করতো’
অভিবাসীদের অংশ গ্রহণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উঠে এসেছে, দালাল ছাড়া এগোতে পারেন না বিদেশ যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা। এতে অভিবাসন ব্যয় বেড়ে যায়। তাই দালালদের আইনি কাঠামোর আওতায় এনে বৈধ করা সম্ভব হলে অভিবাসন ব্যয় ও অনিয়মিত অভিবাসন কমতে পারে।
ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিয়মিত অভিবাসনের অন্যতম ভুক্তভোগী অভিবাসনপ্রত্যাশীরা নিজেরাই। অনিয়মিত অবস্থায় বছরের পর বছর ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ক্যাম্পে পড়ে থেকে অনেকেই মানসিক সমস্যায় ভোগেন।
আবার অনেকেই দীর্ঘ সময় বৈধতা না পেয়ে শ্রম শোষণের মত নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকেন।
তবে এসব সমস্যার বাইরে ইউরোপে বৈধ ছাত্র হিসেবে, পরিবার পুনর্মিলন ভিসায় কিংবা হাই স্কিল্ড বা দক্ষ অভিবাসী অথবা উদ্যোক্তা হিসেবে এসে বৈধ অভিবাসী হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
প্রতি বছর অনেক বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী ইউরোপের বিভিন্ন দেশের উচ্চশিক্ষার জন্য আসছেন। এছাড়া আইটি সহ উচ্চ দক্ষতা আছে এমন অনেক দক্ষ পেশাজীবী চাকুরি ভিসা নিয়ে অভিবাসী হয়ে আসছেন।
একমাত্র বৈধ অভিবাসনই পারে সম্ভাব্য মৃত্যুঝুঁকি এবং অভিবাসীদের পরিবারের কান্না থামাতে।
এমএইউ/আরকেসি