জার্মান পুলিশ জানিয়েছে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সক্রিয় একটি মানবপাচার নেটওয়ার্কের খোঁজে জার্মানি এবং ফ্রান্সসহ ইউরোপের পাঁচটি দেশে মঙ্গলবার একটি বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছে৷
ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে অনিয়মিত উপায়ে ইংল্যান্ডে পৌঁছতে ইচ্ছুক অনেক অভিবাসী৷ বেআইনিভাবে তাদের নিয়ে আসা মানবপাচার নেটওয়ার্কের খোঁজে পাঁচটি ইউরোপীয় দেশে মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জার্মানি, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য এবং নেদারল্যান্ডস পুলিশের সমন্বয়ে এই যৌথ অভিযান হয়েছে৷
পড়ুন>>সিলেট থেকে গ্রিস: বাংলাদেশি অভিবাসীর দীর্ঘ ও দুঃসহ যাত্রা
এই গ্রেপ্তার অভিযানে জার্মানিতে থেকে মানব পাচারে জড়িত সন্দেহে ১৮ ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। দেশটির ফেডারেল ও ওসনাব্রুক পুলিশ এবং শহরের পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসের যৌথ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “গ্রেপ্তার করা হয়েছে যাদের, তারা একটি সংগঠিত চক্রের মাধ্যমে বিদেশি নাগরিকদের গোপন প্রবেশে সহায়তা করেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।”
কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, জার্মানির লোয়ার স্যাক্সনি সহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে মোট ৩৬ টি অনুসন্ধান চালানো হয়েছে।
ফ্রান্স থেকে নয়জন, এবং নেদারল্যান্ডস থেকে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে৷ বাকিদের কোথা থেকে আটক করা হয়েছে জানা যায়নি৷
ফরাসি বর্ডার পুলিশ (পিএএফ) এর একজন কর্মকর্তা এপ্রিল মাসে এএফপিকে বলেছিলেন, “জার্মানির উত্তর-(পশ্চিমে অবস্থিত এই অঞ্চলকে ফ্রান্স থেকে যুক্তরাজ্যে অনিয়মিত অভিবাসী পাচারে জড়িত নেটওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি হিসাবে বিবেচনা করা হয়।”
আরও পড়ুন>উত্তর মেসিডোনিয়ায় দুই পাচারকারীসহ ২৪ অভিবাসী আটক
ইউরোপোল এবং ইউরোজাস্টের যৌথ অভিযানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ অভিযান চালান। শুধুমাত্র জার্মানিতেই ৯০০ পুলিশ কর্মকর্তা এই অভিযানে যুক্ত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট অন্যান্য চারটি ইউরোপীয় দেশেও একই ধরনের পদক্ষেপ করা হয়েছে। জার্মান সংবাদমাধ্যম স্পিগেল জানিয়েছে, অভিযানে নেদারল্যান্ডস থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ওসনাব্রুক পুলিশের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ মাধ্যম স্পিগেল জানিয়েছে, গত ১২ থেকে ১৮ মাস ধরে প্রধানত ইরাকি কুর্দিরা চোরাকারবারিদের এই নেটওয়ার্ক সংগঠিত করছিল। এভাবে তারা বিভিন্ন প্রকারের অস্থায়ী নৌকায় প্রায় ১০ হজার লোককে যুক্তরাজ্যে পাচার করেছে।
একই বিষয়ে একজন ফরাসি পুলিশ কর্মকর্তা এপ্রিল মাসে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, চ্যানেলে ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্য অভিমুখে পাচার সংগঠিত করার পিছনে মূলত ইরাকি কুর্দি নাগরিকদের হাত রয়েছে। এই প্রক্রিয়াটি ২০১৯ সাল থেকে শুরু হয়েছে। আগে বিভিন্ন যানবাহনে উঠে যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করত অভিবাসীরা।
পড়ুন>>প্যারিসে বিদেশি নাবালকদের শোষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার সাত পাচারকারী
ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, ইতিমধ্যেই ২০২১ সালের রেকর্ড পারাপারের পর ২০২২ সালের সালের প্রথম দিকেও অবৈধভাবে চ্যানেল অতিক্রম করার চেষ্টা রেকর্ড হারে বেড়েছে।
মন্ত্রণালয় আরো জানায়, ২০২১ সালে ফ্রান্সের উত্তর উপকূল কালে এবং ডানকের্কের মধ্যে সাধারণ অস্থায়ী নৌকায় ৫২ হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী চ্যানেল পাড়ি দেয়ার চেষ্টা চালিয়েছে। যার মধ্যে ২৮ হাজার অভিবাসী সফল হয়েছিলেন।
এমএইউ/আরকেসি