স্প্যানিশ ছিটমহল মেলিলা অতিক্রম করতে গিয়ে আহত অভিবাসীদের একটি দল। ছবি: পিকচার এলায়েন্স
স্প্যানিশ ছিটমহল মেলিলা অতিক্রম করতে গিয়ে আহত অভিবাসীদের একটি দল। ছবি: পিকচার এলায়েন্স

মরক্কোর একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন জানিয়েছে, মেলিলায় প্রবেশের চেষ্টা করার সময় ২৩ আফ্রিকান অভিবাসী শ্বাসরোধ হওয়ায় মারা গিয়েছিলেন। নিহত ভুক্তভোগীরা একসাথে একটি সংকীর্ণ পথ দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন বলে দাবি তদন্ত দলের।

মরক্কোর একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন বুধবার ১৩ জুলাই জানিয়েছে, “২৪ জুন, মরক্কো সীমান্তবর্তী স্প্যানিশ ছিটমহল মেলিলায় ২৩ অভিবাসী ‘শ্বাসরোধে’ নিহত হয়েছেন।”

ঘটনার তদন্তের দায়িত্বে থাকা মরক্কোর সরকারি সংস্থা ও জাতীয় মানবাধিকার কাউন্সিলের (সিএনডিএইচ) এর সভাপতি আমিনা বোয়ায়াচ জানিয়েছেন, “মেলিলায় প্রবেশের চেষ্টা করা অভিবাসীদের মধ্য ২৩ ‘শ্বাসরোধে’ নিহত হইয়েছিল।”

তদন্ত দলের দায়িত্বে থাকা ডাক্তার আদিল আল সেহিমিও একই বক্তব্য দিয়ে বলেন, “সীমান্তে অভিবাসীদের মৃত্যুর কারণ হিসাবে শ্বাসকষ্টকে অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।”

পড়ুন>>‘গত তিন মাসে আমার ১২ কেজি ওজন কমেছে”

জাতীয় মানবাধিকার কাউন্সিল (সিএনডিএইচ) প্রাথমিক রিপোর্টে এই নজিরবিহীন সংঘর্ষের পদ্ধতির বর্ণনা দিয়েছে।

সিএনডিএইচ এর মতে, “লাঠি ও পাথর হাতে থাকা অভিবাসীদের বেশিরভাগই ছিলেন সুদানের নাগরিক। তারা একসাথে বিপুল সংখ্যায় এসে দুটি দলে বিভক্ত হয়েছিলেন। প্রথম দলটি ২০১৮ সাল থেকে বন্ধ থাকা একটি সীমান্ত চৌকিতে হামলা চালায় এবং দ্বিতীয় দলটি সীমান্তের কাছাকাছি থাকা কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রমের চেষ্টা করে।”

সংস্থাটির মতে, “অভিবাসীরা যে সীমান্ত চৌকিতে প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন সেটি স্পেন ও মরক্কোর মধ্যে বাফার জোনের আওতাধীন। সাধারন ধাতুর তৈরি এই সংকীর্ণ প্রাচীর দিয়ে একই সময়ে মাত্র একজন ব্যক্তি প্রবেশ করতে পারেন। বিপুল সংখ্যক অভিবাসী একসাথে এই সংকীর্ণ গেইটের প্রবেশ পথে ঢুকে পড়েছিলেন। যার ফলে অভিবাসীদের মধ্যে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল।”

আরও পড়ুন>>মরক্কোর উন্মুক্ত অভিবাসন নীতির প্রশংসায় জাতিসংঘ

২৩ জন মৃত ছাড়াও সেদিন রেকর্ড ২১৭ জন ব্যক্তি আহত হয়েছিলেন, যাদের মধ্যে ৭৭ জন অভিবাসী এবং ১৪০ জন পুলিশ কর্মকর্তা।

তবে স্প্যানিশ অধিকারকর্মীরা এই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৩৭ জনেরও বেশি বলে দাবি করেছিল।

এখনও চলছে ময়নাতদন্ত 

আমিনা বোয়াচ আরও জানিয়েছেন, “এখনও পর্যন্ত নিহতদের কারও লাশ দাফন করা হয়নি এবং মৃত্যুর পরিস্থিতি নির্ধারণের জন্য ময়নাতদন্ত চলমান রয়েছে।”

এই ঘটনার পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা ও আন্তজার্তিক মহল থেকে দাবি করা হয়েছিল, “ঘটনার তদন্ত পরিচালনার আগেই অভিবাসীদের দাফন করতে কবর খোঁড়া হচ্ছিল।”

পড়ুন>>মেলিলায় অভিবাসী হত্যায় তদন্তের ডাক জাতিসংঘের

তবে ময়নাতদন্তের ফলাফল এখনো জানা যায়নি। মৃতদেহগুলি পরীক্ষা করার পর ডঃ আদিল আল-সেহিমি বলেছিলেন, মৃত্যুর কারণ হিসাবে "শ্বাসকষ্ট" মূল কারণ হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে। তবে তিনি ময়নাতদন্তের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন।


এমএইউ/এআই


 

অন্যান্য প্রতিবেদন