(ফাইল ছবি) দিল্লীর ইন্দিরা গান্ধী আন্তজার্তিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন এক ভুয়া বাংলাদেশি শরণার্থী দাবি করা ভারতীয় দম্পতি। ছবি: রয়টার্স
(ফাইল ছবি) দিল্লীর ইন্দিরা গান্ধী আন্তজার্তিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন এক ভুয়া বাংলাদেশি শরণার্থী দাবি করা ভারতীয় দম্পতি। ছবি: রয়টার্স

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এক দম্পতিকে দিল্লি বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ আটক করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভুয়া বাংলাদেশি নাগরিকত্বের মাধ্যমে তারা ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়ে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বসবাস করছিলেন। অভিযুক্ত দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে পাসপোর্ট জালিয়াতি ও জাল নথি ব্যবহারের দায়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

স্বামী বিশ্বজিৎ দাস এবং একমাত্র মেয়েকে নিয়ে ফ্রান্স থেকে বাবার শেষকৃত্যে যোগ দিতে এসেছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদিয়া জেলার নাগরিক রিংকু দাস। কিন্তু ফেরার পথে বাধে বিপত্তি।

৮ জুলাই, দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এই দম্পতির কাছে একইসঙ্গে ভারত ও ফ্রান্সের বিশেষ শরণার্থী পাসপোর্ট খুঁজে পান। 

পড়ুন>>ভারতীয়দের ভিসা সুবিধা বাড়াবে ব্রিটেন

পুলিশ সূত্রে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও এএনআই নিউজ জানিয়েছে, “জিজ্ঞাসাবাদের সময় এই দম্পতি স্বীকার করেছেন তারা পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা এবং তাদের বাবা-মা তাদের ভারতীয় পাসপোর্টের ঠিকানায় থাকেন। তারা ২০১৮ সালে কাতারে অভিবাসী হিসেবে বসবাস করছিলেন। সেখান থেকে তারা সন্দীপ নামের একজন দালালের সাহায্যে অনিয়মিত উপায়ে ফ্রান্সে প্রবেশ করেন এবং সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে সাহায্যের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন।” 



ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার তনু শর্মা জানান, “কাতারে চুক্তি হওয়া সন্দীপ নামের সেই এজেন্ট দম্পতিকে জানিয়েছিল বাংলাদেশি জাতীয়তা প্রমাণ করে এমন নথি থাকলে ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়া সহজ। পরবর্তীতে তারা একই এজেন্টের সাহায্যে প্রায় আট থেকে নয় লাখ ভারতীয় রূপির বিনিময়ে বাংলাদেশি জাতীয়তা প্রমাণ করে এমন নথি পান। যার সাহায্যে তারা ফ্রান্সে সুরক্ষা পেয়ে বসবাস ও চাকরি করছিলেন।”

ডেপুটি কমিশনার তনু শর্মার উদ্ধৃতি দিয়ে আরেক ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে, “এই দম্পতির ভ্রমণ সন্দেহজনক বলে মনে হয়েছিল। তারা ইতিপূর্বে ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করে ভ্রমণ করেছে। এবার তারা ফরাসি পাসপোর্ট ব্যবহার করছে। পরবর্তীকে দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।”

আরও পড়ুন>>পর্তুগালে শ্রমশোষণের শিকার ভারতীয়রা

পুলিশ নিশ্চিত করেছে, ফরাসি নথিতে তাদের নামের সঙ্গে 'সরকার' উপাধি থাকলেও ভারতীয় পাসপোর্টে তারা দাস উপাধি ব্যবহার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর অভিযুক্ত বিশ্বজিৎকে পুলিশ হেফাজতে এবং রিংকু দাসকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তাদের মেয়ে নাবালিকা হওয়ায় লিখিত কাস্টডির মাধ্যমে পরিবারের অন্য সদস্যের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া দম্পতির জাতীয়তা নিশ্চিত করতে তাদের পাসপোর্টের তথ্য যাচাইয়ে আরপিও কলকাতার সাহায্য নেয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। 

অভিযুক্ত দম্পতির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির আইপিসির ৪২০ ধারা, ৪৬৮ এবং ৪৭১ ধারায় জাল নথিকে আসল হিসেবে ব্যবহার করা এবং পাসপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। 



এমএইউ/আরকেসি ( টাইমস অফ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এএনআই )













 

অন্যান্য প্রতিবেদন