রোববার, ছয়জন অভিবাসী শ্রীলঙ্কার পতাকাবাহী মাছ ধরার নৌকা করে ভারত মহাসাগরের ফরাসি ডিপার্টমেন্ট রেউনিওঁতে এসে পৌঁছেছে। গত কয়েকমাস ধরে শ্রীলঙ্কায় চলা নজিরবিহীন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের ফলে সে দেশের অনেক নাগরিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করছেন।
স্থানীয় লা রেউনিওঁ প্রেফেকচুর জানিয়েছে, রোববার শ্রীলঙ্কার পতাকা লাগানো একটি মাছ ধরার নৌকায় ছয় জন অভিবাসী রেউনিওঁ’র পশ্চিমের পোয়া-দে-গালেত বন্দরে পৌঁছান।
দ্বীপের পুলিশ ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, এই অভিবাসীরা ফরাসি ভূখণ্ডে অনিয়মিত উপায়ে প্রবেশ করেছে।
উল্লেখ্য লা রেউনিওঁ ভারত মহাসাগরে মাদাগাস্কার দ্বীপের পূর্বে অবস্থিত একটি ফরাসি প্রশাসনিক কেন্দ্র। মূল ইউরোপীয় ভূখণ্ডের বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ফ্রান্সের দশটি উপনিবেশ আছে, যেগুলি বেশিরভাগই সাবেক ফরাসি সাম্রাজ্যের অংশ। এরকম একটি ডিপার্টমেন্ট বা প্রশাসনিক অঞ্চল হলো লা রেউনিওঁ।
স্থানীয় প্রেফেকচুর জানায় , অভিবাসী নৌকাটিকে দ্বীপের উত্তর-পশ্চিম উপকূল থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে রোববার সকালে দেখা গিয়েছিল। একই সময় আঞ্চলিক অপারেশনাল মনিটরিং অ্যান্ড রেসকিউ সার্ভিসের (ক্রস)র পক্ষ থেকে প্রেফেকচুরকে নৌকার ব্যাপারে দ্রুত সতর্ক করা হয়েছিল।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদ এবং প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছয় অভিবাসীকে দ্বীপে নামার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তাদের একটি আশ্রয় কাঠামোতে স্থানান্তর করা হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপি প্রেফেকচুরের কাছে ছয় অভিবাসী যাত্রার রুট এবং অভিবাসনের ধরন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে, অভিবাসীদের ঠিক কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় কিংবা অন্য অভিবাসনের উদ্দেশ্য আছে কি না সেটি জানায়নি প্রেফেকচুর।
এর আগে ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০১৯ সালের এপ্রিলের মধ্যে একই অবস্থায় শ্রীলঙ্কা থেকে প্রায় চার হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লা রেউনিওঁ দ্বীপে নারী ও শিশু সহ ছয়টি নৌকায় মোট ২৭৩ জন অভিবাসী পর্যায়ক্রমে পৌঁছেছিল। তাদের সবাই সে সময় ফরাসি কর্তৃপক্ষের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন জানায়।
তাদের মধ্যে কয়েক ডজন অভিবাসী এখনও দ্বীপটিতে বসবাস করছেন। অন্যদের আশ্রয় আবেদন নাকচ হওয়ায় শ্রীলঙ্কায় ফেরত পাঠানো হয়।
শ্রীলঙ্কার মোট জনসংখ্যা দুই কোটি ২০ লাখ। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের কারণে দেশটি কয়েক মাস ধরে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে। আমদানিতে অর্থায়নের জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার অভাবের কারণে খাদ্য, ওষুধ এবং জ্বালানির তীব্র ঘাটতি সৃষ্টি করছে।
টানা কয়েক মাস বিক্ষোভের পর, প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে পরবর্তীতে পদত্যাগ করেন। ২০ জুলাই তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন রনিল বিক্রমাসিংহে।
এমএইউ/আরকেসি (লা প্রমিয়ের, এএফপি)