হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ) সোমবার বলেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ড্রোন ভূমধ্যসাগর থেকে অভিবাসী বহনকারী নৌকাগুলিকে আটকাতে লিবীয় বাহিনীকে সাহায্য করছে। একাধিক বার অভিযোগ উঠেছে, সমুদ্র থেকে আটকের পর অভিবাসীরা লিবীয় বাহিনীর হাতে অত্যাচারের শিকার হয়।
লিবিয়া উপকূল ছেড়ে যাওয়া অভিবাসী নৌকা শনাক্ত করতে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’ পালন করছে ইইউ-সদস্য রাষ্ট্র মাল্টা চালিত একটি ড্রোন। ইইউ সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্স এটির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার উপকূলরক্ষীদের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে দাবি করেছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
সোমবার একটি বিবৃতিতে আন্তজার্তিক এই মানবাধিকার সংস্থাটি দাবি করেছে, “ফ্রন্টেক্স ড্রোনের সাহায্যে এই নজরদারি সমুদ্র থেকে অভিবাসীদের উদ্ধারে সহায়তার জন্য এমন দাবি করলেও সংস্থাটির দেয়া তথ্য অভিবাসীদের লিবিয়ায় আটক করার প্রক্রিয়া সহজ করছে।”
পড়ুন>>‘ফ্রন্টেক্সের অর্থায়নে’ গ্রিস থেকে তুরস্কে পুশব্যাক!
আফ্রিকার সহিংসতা থেকে ইউরোপে পালিয়ে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়া প্রধান ট্রানজিট দেশ। ইইউ বহিঃসীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্স লিবিয়া উপকূল থেকে আসা নৌকাগুলিকে আটকানোর জন্য লিবিয়াকে সমর্থন করে আসছে।
এইচআরডব্লিউ বলেছে, ফ্রন্টেক্সের ড্রোন অভিবাসী নৌকার কাছাকাছি থাকা উদ্ধারকারীদের না জানিয়ে নৌকার উপস্থিতি নিয়ে লিবিয়ার বাহিনীকে তথ্য দিয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে একটি নৌকা আটকাতে সক্ষম হয় কর্তৃপক্ষ।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সমুদ্র নজরদারি থেকে আকাশপথে পর্যবেক্ষণের ফলে কীভাবে লিবিয়া মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে, তা নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন>>অভিবাসী স্রোত ঠেকাতে সেনেগাল, মৌরিতানিয়াতে যাবে ফ্রন্টেক্স!
নিউইয়র্ক ভিত্তিক এই অধিকার গোষ্ঠীটি বলেছে, গত বছর লিবীয় বাহিনী প্রায় ২৩ হাজার ৪৫০ জন অভিবাসীকে সমুদ্র থেকে ফিরিয়ে যথেচ্ছভাবে আটক ও নির্যাতন চালিয়েছে।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, লিবিয়ায় আটক অভিবাসীদের হত্যা, দাসত্ব, নির্যাতন, কারাদণ্ড (এবং) ধর্ষণের মতো অপরাধগুলিকে মানবতারবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের যৌথ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ফ্রন্টেক্স নিয়মিতভাবে গ্রিক কোস্টগার্ডের বেআইনি পুশব্যাক অভিযানের তথ্য গোপন করছে। ইউরোপে প্রতারণ দমন বিভাগ (ওলাফ) সংবেদনশীল এই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে৷
পড়ুন>>এজিয়ান সাগরে পুশব্যাক: ফ্রন্টেক্স প্রধানের পদত্যাগ
২৮ জুলাই জার্মান গণমাধ্যম স্পিগেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘ইউরোপীয় বহিঃসীমান্ত নজরদারি সংস্থা ফ্রন্টেক্সের সাবেক পরিচালনা পর্ষদ অনেক আগে থেকেই সীমান্তের এই নির্মম আচরণ সম্পর্কে জানতো৷’’
এমএইউ/আরকেসি