যুক্তরাজ্যের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে দুই অভিবাসী। ছবি: পিকচার এলায়েন্স।
যুক্তরাজ্যের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে দুই অভিবাসী। ছবি: পিকচার এলায়েন্স।

ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত অভিবাসীদের ‘ফেসিয়াল রিকগনিশন’ বা চেহারা শনাক্তের প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারিতে রাখার কথা বিবেচনা করছে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। তবে এই ধরনের প্রযুক্তির কারণে বৈষম্য এবং অধিকার লঙ্ঘন হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এনজিও এবং অভিবাসন সংস্থাগুলো।

যুক্তরাজ্যে ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত অভিবাসীদের বিশেষ স্মার্টওয়াচ দিয়ে দিনে পাঁচবার নিজের চেহারা স্ক্যান করতে হবে৷ পাশাপাশি চব্বিশ ঘণ্টাই তাদের গতিবিধির তথ্য নেয়া হবে। এরকম এক প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে যুক্তরাজ্যে বিতর্ক চলছে। 

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিচার মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এই প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছে। এটি বাস্তবায়নে প্রাথমিক বাজেট ধরা হয়েছে ছয় মিলিয়ন পাউন্ড স্টার্লিং বা ৭০ কোটি টাকা। 


যুক্তরাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তর এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গত মে মাসে ‘বাডি লিমিটেড’ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। চুক্তিটি সবার জন্য উন্মুক্ত হলেও এর আওতায় মোট কয়টি ডিভাইস প্রয়োগ করা হবে সেটির উল্লেখ নেই। 

পড়ুন>>পরিত্যক্ত বিমান ঘাঁটিতে আশ্রয়কেন্দ্রের পরিকল্পনা বাতিল

সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রাপ্ত ডেটাগুলো ছয় বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করে স্বরাষ্ট্র ও বিচার মন্ত্রণালয় এবং পুলিশের মধ্যে আদান প্রদান করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট অভিবাসীদের ভৌগলিক অবস্থানের দিকেও নজর রাখা হবে। 

ইউরোপের অন্য কোনো দেশ এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করে না

দ্য গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে এনজিও প্রাইভেসি ইন্টারন্যাশনালের আইনি কর্মকর্তা লুসি অডিবার্টের অভিবাসীদের ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগের সমালোচনা করে বলেছেন, “চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তি একটি অসম্পূর্ণ এবং বিপজ্জনক প্রযুক্তি হিসাবে পরিচিত যা অভিবাসী এবং প্রান্তিক লোকদের প্রতি বৈষম্যের প্রবণতা তৈরি করতে পারে।”

আরও পড়ুন>> অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর ব্রিটেনের দুই প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী

এই আইনজীবী আরও বলেন, “আমি বিশ্বাস করি এই ধরনের প্রযুক্তি মানবাধিকার লঙ্ঘনকে উৎসাহিত করে। ইউরোপের অন্য কোনো দেশে আজ পর্যন্ত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে এই ধরনের অমানবিক এবং আক্রমণাত্মক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়নি।”

অধিকন্তু, এই ধরনের নজরদারি ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মানসিক যন্ত্রণার কারণ হতে পারে। 

তবে ব্রিটিশ হোম অফিস বারবার এই প্রযুক্তির স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে আসছে। তাদের মতে, ব্রিটিশ নাগরিকরা এই প্রযুক্তি ব্যবহারের পক্ষে রয়েছেন। 


এমএইউ/এআই 


 

অন্যান্য প্রতিবেদন