বৃহস্পতিবার গ্রিসের এথেন্সের ইলিওনাস ক্যাম্প উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে অভিবাসী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে৷ ক্যাম্পটিতে প্রায় ৬৭০ জন অভিবাসী বসবাস করলেও অভিযানে অল্প কয়েক জনকে সরাতে পেরেছে গ্রিক কর্তৃপক্ষ৷
১৮ আগস্ট এথেন্সের ইলিওনাস অভিবাসী শিবিরটি খালি করার কার্যক্রম শুরু করে গ্রিক কর্তৃপক্ষ৷ ভোর পাঁচটার দিকে উচ্ছেদ অভিযান শুরুর চেষ্টা করলে ক্যাম্পের বাসিন্দা ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়৷
আনুমানিক ৬৭০ জন অভিবাসী ক্যাম্পের ফটকে ব্যারিকেড তৈরী করে অভিযানে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে৷ পুলিশ পরবর্তীতে ব্যারিকেড উঠিয়ে মাত্র কয়েক ডজন আশ্রয়প্রার্থীকে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়৷ বাকিরা ক্যাম্পের ভেতরে এবং আশেপাশের এলাকায় অবস্থান করছেন৷
শিবিরটি নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও অভিবাসীরা এটি বন্ধের বিরোধিতা করে আসছেন৷ তাদের মতে, এটি বন্ধ হলে অনেক অভিবাসীকেই এথেন্স থেকে দূরে বিচ্ছিন্ন এলাকায় পাঠানো হবে অথবা রাস্তায় থাকতে বাধ্য করার আশঙ্কা রয়েছে৷
ঘটনাস্থল থেকে অভিবাসীদের পাঠানো ভিডিওতে দেখা গেছে, অভিবাসীরা দাঙ্গা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন৷ পরবর্তীতে তাদের তাড়াতে টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করা হলেও শেষ পর্যন্ত মাত্র কয়েক ডজন লোককে সেখান থেকে উচ্ছেদ করা গেছে৷
পড়ুন>>পালতোলা নৌকায় গ্রিক উপকূলে ১৫০ অভিবাসী
গ্রিসের অভিবাসন ও আশ্রয় বিষয়ক মন্ত্রী নটিস মিতারাচি টুইট করেন, ‘‘এথেন্স নগর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় আমরা এলিওনাস ক্যাম্প বন্ধ করার জন্য এগিয়ে যাচ্ছে৷ এলাকাটির আধুনিকায়নের কাজে অগ্রগতি হচ্ছে এবং বিদ্যমান অন্যান্য কাঠামোতে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য জায়গা পাওয়া যাওয়ায় এই শিবিরের আর প্রয়োজন নেই৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু সংখ্যক অভিবাসী এবং তাদের সমর্থনকারী সংস্থাগুলো আন্দোলনকে গতিশীল করার চেষ্টা করছে৷’’
অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘‘স্থানান্তর হতে যাওয়া অভিবাসীরা অন্যত্র যেতে চাওয়ার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছেন৷ আমরা আশা করছি চলতি বছরের শেষ নাগাদ উচ্ছেদ প্রক্রিয়া শেষ হবে৷’’
ইলিওনাস ক্যাম্পে অবস্থানরত বেশিরভাগ অভিবাসীদের রাজধানী এথেন্সের শিস্টো শিবিরে স্থানান্তর করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা৷
পড়ুন>>গ্রিস থেকে ফ্রান্সে যাওয়ার পথে বাংলাদেশি অভিবাসীর মৃত্যু
মূলত ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে গ্রিসের আলোচিত এই অভিবাসী শিবিরটি চালু করা হয়৷ সে সময় গ্রিসের অভিবাসন সমস্যা নিয়ে আয়োজিত এক সম্মেলনের পর এই ক্যাম্পটি পরিদর্শন করেছিলেন প্রাক্তন ফরাসি রাষ্ট্রপতি ফ্রঁসোয়া ওলান্দ এবং ইউরোপীয় সংসদের সভাপিত রবার্টা মেটসোলা৷
উন্নত জীবনের সন্ধানে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে আগতদের জন্য গ্রিস ইউরোপের অন্যতম প্রধান প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত৷ তবে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে গ্রিসে অভিবাসীদের আগমনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে৷
পড়ুন>> গ্রিসে জনশক্তি রপ্তানি চুক্তি: সম্ভাবনা আছে, আছে চ্যালেঞ্জও
বেশ কয়েকটি অভিবাসন সংস্থা এনজিও এবং গণমাধ্যম অভিবাসীদের বেআইনি পুশব্যাকের অভিযোগ আনলেও গ্রিসের রক্ষণশীল সরকার বরাবরই তা অস্বীকার করে আসছে৷
এমএইউ/এফএস