আমস্টারডামে এমন জাহাজে সাময়িকভাবে রাখা হবে আশ্রয়প্রার্থীদের৷ ছবি: ফ্লিকার
আমস্টারডামে এমন জাহাজে সাময়িকভাবে রাখা হবে আশ্রয়প্রার্থীদের৷ ছবি: ফ্লিকার

আশ্রয়কেন্দ্রে জায়গা সংকটের কারণে অতিরিক্ত অভিবাসীদের আমস্টারডামে নোঙর করা একটি ক্রুজ শিপ বা প্রমোদতরীতে রাখবে নেদারল্যান্ডস৷ এজন্য শহর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য এ নিয়ে দুইটি শহরে প্রমোদতরীর ব্যবস্থা করল ডাচ সরকার৷

আমস্টারডাম সিটি কাউন্সিলের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ওয়েস্টেলিক হাফেনগেবিড শিল্পাঞ্চলের কাছে শহরের পর্যটকদের আনাগোনার বাইরে জাহাজটি নোঙর করা থাকবে৷ ১ অক্টোবর থেকে সেটি ছয় মাসের জন্য চালু থাকবে৷ প্রাথমিকভাবে সেখানে এক হাজার আশ্রয়প্রার্থীকে জায়গা দেয়ার পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষের৷ তবে পরবর্তীতে তা দেড় হাজারে উন্নীত হতে পারে৷

জাহাজে প্রবেশ ও বের হওয়ার স্বাধীনতা

আমস্টারডামের সিটি কাউন্সিল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থায়নে এই পরিকল্পনা ‘টের আপেলে উদ্বেগজনক মানবিক সংকট সমাধানে সহায়তা করবে’৷ শরণার্থীদের রাখার জন্য আশ্রয়কেন্দ্রের জায়গা খোঁজা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট একজন কাউন্সিলর৷

এর আগে নেদারল্যান্ডসের উত্তরাঞ্চলের ফেলসেন-নর্ড কর্তৃপক্ষও আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য প্রমোদতরীর ব্যবস্থা করে৷ তবে নেদারল্যান্ডসের অধিকারীকর্মীরা এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে আসছিল৷ ডাচ কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা সাময়িক সমাধান হিসেবে এই ব্যবস্থা বেছে নিয়েছেন৷ জাহাজে আশ্রয়প্রার্থীদের প্রবেশ ও বেরিয়ে যাওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে বলেও জানিয়েছে তারা৷ এদিকে অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো সরকারকে দ্রুত স্থায়ী সমাধান খোঁজার জন্য চাপ দিয়ে আসছে৷

আবাসন সংকট

এই সংকট তৈরির পেছনে নেদারল্যান্ডসের আবাসন ঘাটতি একটি বড় কারণ বলে মনে করা হচ্ছে৷ কোনো আশ্রয়প্রার্থী দেশটিতে শরণার্থী মর্যাদা পেলেও তাদের অনেকেই থাকার মতো বাড়ি খুঁজে পান না৷ যে কারণে অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে থাকেন, যেগুলো মূলত আশ্রয় আবেদনের ফলাফলের অপেক্ষারতদের সাময়িক অবস্থানের জন্য তৈরি৷

ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর ৬০ হাজারেরও বেশি ইউক্রেনীয় নাগরিক নেদারল্যান্ডসে এসেছেন৷ সাম্প্রতিক সময়ে পরিবারসহ শত শত আশ্রয়প্রার্থী উত্তর-পূর্বে অবস্থিত টের অ্যাপেল আশ্রয়কেন্দ্রের বাইরে তাঁবুতে বা মাটিতে ঘুমাতে বাধ্য হয়েছেন৷ সেসব ছবি ডাচ গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়৷

এছাড়া, গোটা নেদারল্যান্ডসের আশ্রয় ব্যবস্থাতে এক ধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে৷ আশ্রয় আবেদনের প্রক্রিয়ায় ধীর গতির কারণে, অল্প সংখ্যক মানুষ সুরক্ষা পেতে সক্ষম হচ্ছেন৷ এই কারণেও আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছে৷ যাচাইয়ে সময় লাগায় আগের আবেদনকারীরা দীর্ঘদিন ধরে সেগুলোতে অবস্থান করছেন৷ যার ফলে নতুন আগতদের এসব আশ্রয়কেন্দ্রে স্থান দেয়া সম্ভব হচ্ছে না৷

এফএস/আরকেসি (এপি, এএফপি)

 

অন্যান্য প্রতিবেদন