( ফাইল ছবি) তুরস্ক থেকে গ্রিসের উদ্দেশ্যে যাত্রার আগে অনিয়মিত অভিবাসীদের একটি দল। ছবি: রয়টার্স
( ফাইল ছবি) তুরস্ক থেকে গ্রিসের উদ্দেশ্যে যাত্রার আগে অনিয়মিত অভিবাসীদের একটি দল। ছবি: রয়টার্স

গ্রিসের আশ্রয় ও অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী জানিয়েছেন, চলতি বছর এ পর্যন্ত দেড় লাখেরও বেশি অনথিভুক্ত অভিবাসীকে গ্রিসের স্থল ও সামুদ্রিক সীমান্ত দিয়ে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে।

গ্রিক দৈনিক এলেফথেরোস টাইপোসকে আশ্রয় ও অভিবাসন বিষয় মন্ত্রী নোটিস মিতারাচি বলেন, “বছরের শুরু থেকে এক লাখ ৫৪ হাজার ১০২ জন অনিয়মিত অভিবাসীকে গ্রিক সীমান্তে প্রবেশ আটকে দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র আগস্ট মাসেই প্রায় ৫০ হাজার অভিবাসী গ্রিসে অবৈধ প্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছেন।”

২০১৯ সালে ক্ষমতায় আসা বর্তমান রক্ষণশীল গ্রিক সরকারের জন্য ‘সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ’ প্রধান অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে একটি। আগামী বছর গ্রিসের পরবর্তী সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।  

গত মাসে এথেন্স জানায়, অভিবাসনের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে গ্রিক-তুর্কি সীমান্তের এভ্রোসে ৪০ কিলোমিটার (২৫ মাইল) দীর্ঘ প্রাচীরটি আরও ৮০ কিলোমিটার প্রসারিত করা হবে। 

সীমান্ত প্রাচীর বর্ধিত করার পাশপাশি থার্মাল ক্যামেরা স্থাপন এবং অতিরিক্ত ২৫০ জন বর্ডার গার্ড সদস্য মোতায়েনের পরিকল্পনার কথা জানায় গ্রিক কর্তৃপক্ষ। 

পড়ুন>>এথেন্সের অভিবাসী শিবির স্থানান্তর ঘিরে সংঘর্ষ

আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে পালিয়ে উন্নত জীবনের আশায় ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশের চেষ্টা করা অভিবাসীদের জন্য গ্রিস অন্যতম প্রধান ট্রানজিট দেশ। প্রতি বছর হাজারো অভিবাসন প্রত্যাশী সীমান্তবর্তী এভ্রোস নদী এবং সরু ও বিপজ্জনক এজিয়ান সাগর পাড়ি দিয়ে তুরস্ক থেকে গ্রিসে প্রবেশের চেষ্টা চালায়।

অভিবাসন সংস্থা, এনজিও এবং গণমাধ্যমগুলো অভিবাসীদের বেআইনি পুশব্যাকের অভিযোগ আনলেও গ্রিসের রক্ষণশীল সরকার বরাবরই তা অস্বীকার করে আসছে৷

গত ২৩ আগস্ট নোটিস মিতারাচি ইনফোমাইগ্রেন্টসকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “তুরস্ককে নিরাপদ তৃতীয় দেশ মনে করে গ্রিস। সেক্ষত্রে আশ্রয়প্রার্থীরা চাইলে তুরস্কেই আশ্রয় আবেদন জমা দিতে পারে। গ্রিস একজন অনিয়মিত অভিবাসীকেও গ্রহণ করবে না।”

রবিবার আবারও সকল প্রকার পুশব্যাকের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “বেআইনি পুশব্যাকের সাথে এথেন্স জড়িত নয়। তুরস্কই বরং সীমান্তে অভিবাসীদের হিংসাত্মকভাবে পুশব্যাক করছে।”  

এথেন্স গত মাসে তুরস্কের বিরুদ্ধে আটকে পড়া অভিবাসীদের একটি দলকে এভ্রোস নদীর একটি ছোট গ্রিক দ্বীপে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ এনেছিল।

পড়ুন>>গ্রিসে পারিবারিক ভিসা: বাংলাদেশিদের অপেক্ষা ফুরোয় না

সেসময় অধিকার গোষ্ঠীগুলো বলেছিল যে, গ্রিক সরকার বেশ কয়েকদিন ধরে অভিবাসীরা গ্রিক ভূখণ্ডে অবস্থান করছে সেটি জানা সত্ত্বেও তা বারবার অস্বীকার করে আসছিল। উদ্ধার কার্যক্রম দেরি হওয়ায় একটি পাঁচ বছর বয়সি শিশু মারা যাওয়ার অভিযোগ করেছিল এনজিও এলার্ম ফোন।

তবে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নোতিস মিতারাচি। রোববার তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারটির চারটি সন্তার রয়েছে এমন কথা বলা হয়েছিল৷ তাদের সবাইকে গ্রিক পুলিশ উদ্ধার করেছে।

পড়ুন>>ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশী: নর্থ মেসিডোনিয়ায় ৫.৬ শতাংশ বাংলাদেশি

মন্ত্রী আরও বলেন, “পরিবারটির পক্ষ থেকে শুরুতে যা বলা হয়েছিল সেটির সাথে এখন পর্যন্ত যা প্রমাণিত হয়েছে তার অনেক অসঙ্গতি লক্ষ্য করা গেছে।”



এমএইউ/এআই (এএফপি)


 

অন্যান্য প্রতিবেদন