ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিচার আদালত এক রায়ে জানিয়েছেন যে তৃতীয় দেশের কোনো নাগরিক, যার পরিবারের কোনো সদস্যের ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নাগরিকত্ব রয়েছে, দীর্ঘমেয়াদে ইইউতে থাকার অনুমতি পেতে পারেন৷ ঘানার এক মা এবং ডাচ নাগরিকত্ব পাওয়া তার সন্তানকে ঘিরে এক মামলার প্রেক্ষিতে এই রায় দিয়েছেন আদালত৷
নেদারল্যান্ডসে দীর্ঘমেয়াদে থাকার অনুমতি চেয়েছিলেন সেই নারী৷ তার দাবি ছিল, একজন ইইউ নাগরিকের পরিবারের সদস্য হিসেবে জোটের আইন অনুযায়ী তার এই অনুমতি পাওয়ার অধিকার রয়েছে৷
এই মামলারক্ষেত্রে যে আইনটি বিবেচনায় আনা হয়েছে সেটি একটি ইইউ নির্দেশনা যা ইইউ সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসরত তৃতীয় দেশের নাগরিকদের ইউরোপীয় সমাজের মূলধারায় অন্তর্ভূক্ত করর লক্ষ্যে জারি করা হয়েছিল৷
উদাহরণ সৃষ্টি
ঘানার যে নারী ইউরোপীয় বিচার আদালতে মামলাটি করেছিলেন তিনি প্রথমে ২০১৩ সালে তার সন্তানের পরিবারের সদস্য হিসেবে নেদারল্যান্ডসে বসবাসের সাময়িক অনুমতি পেয়েছিলেন৷ তখন কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল যে সেই সন্তান মায়ের উপর নির্ভরশীল এবং একজন মা নিকট পরিবারের সদস্য৷
২০১৯ সালে সেই মা দীর্ঘমেয়াদি বসবাসের অনুমতি চান৷ এক্ষেত্রে তিনি ইইউর নির্দেশনাটি সামনে আনেন৷ এতে উল্লেখ করা হয়েছিল যে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে ইইউভুক্ত কোনো দেশে বসবাসরত তৃতীয় দেশের নাগরিকরা জোটভুক্ত কোনো দেশে দীর্ঘমেয়াদে বসবাসের অনুমতি চাইতে পারবেন৷
তবে, ডাচ কর্তৃপক্ষ তার সেই আবেদন বাতিল করে দেয়৷ তাদের যুক্তি ছিল, একজন ইইউ নাগরিকের পরিবারের সদস্য হিসেবে শুধু সাময়িক সময়ের জন্য তৃতীয় দেশের কোনো নাগরিককে ইইউতে বসবাসের অনুমতি দেয়া যাবে৷
কিন্তু ঘানার সেই নারী বিষয়টি ইউরোপীয় বিচার আদালতে নিয়ে যান৷ সেই আদালত জানিয়েছেন, মা এবং সন্তানের মধ্যকার সম্পর্ক নির্ভরশীলতার সম্পর্ক এবং এটিকে শিক্ষার্থী বিনিময় বা অ্য পেয়ারের মতো সাময়িক সম্পর্ক হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয়৷
ইউরোপীয় বিচার আদালতের এই রায় এক উদাহরণ সৃষ্টি করলো যা তৃতীয় দেশের বাবামার, যাদের সন্তানরা ইইউর নাগরিক, পক্ষে যাবে৷ কেননা এই রায়ের সূত্র ধরে অন্যান্য তৃতীয় দেশের অভিভাবকরাও ইইউতে সন্তানদের কাছে দীর্ঘমেয়াদে থাকার অনুমতি চাইতে পারবেন৷
ইউরোপীয় আদালতের রায় অবশ্য ইতোমধ্যে মীমাংসিত মামলাগুলো পুনর্জীবিত করতে ব্যবহারের সুযোগ নেই৷ শুধুমাত্র ঘানার সেই নারী এবং ভবিষ্যতে এধরনের মামলায় এটিকে সূত্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে৷
এআই/কেএম (ইপিডি)