অভিবাসন নিয়ে আলোচনার মুখে আসন্ন নির্বাচনে ডানপন্থী ও কট্টর ডানপন্থীদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারেন অস্ট্রিয়ার বর্তমান রাষ্ট্রপতি আলেকজান্ডার ভ্যান ডার বেলেন। ছবি: রয়টার্স
অভিবাসন নিয়ে আলোচনার মুখে আসন্ন নির্বাচনে ডানপন্থী ও কট্টর ডানপন্থীদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারেন অস্ট্রিয়ার বর্তমান রাষ্ট্রপতি আলেকজান্ডার ভ্যান ডার বেলেন। ছবি: রয়টার্স

চলতি সপ্তাহে অস্ট্রিয়ায় তিন হাজারেরও বেশি অনিয়মিত অভিবাসী এবং আশ্রয়প্রার্থী প্রবেশ করেছে। এক সপ্তাহের সংখ্যা বিবেচনায় অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় এটি সর্বোচ্চ। এ পরিস্থিতিতে আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে সামনে রেখে গুরুত্ব পাচ্ছে অনিয়মিত অভিবাসন ইস্যু।

৯ অক্টোবর অস্ট্রিয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্টিত হওয়ার কথা। এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সাত প্রার্থীর মধ্যে বড় একটি অংশ ডানপন্থি। ফলে এবারের নির্বাচনে সামনে উঠে এসেছে অভিবাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। 

অন্যদিকে, চলতি বছর বিপুল সংখ্যক আশ্রয়প্রার্থীর প্রবাহ দেখছে অস্ট্রিয়া। ২০২১ সালে দেশটিতে নিবন্ধিত ১৯ হাজার আশ্রয়প্রার্থীর বিপরীতে ২০২২ সালে এ পর্যন্ত ৪৭ হাজার শরণার্থী নিবন্ধিত হয়েছে।

আরও পড়ুন>> পুলিশের কাছ থেকে পালাতে গিয়ে অস্ট্রিয়ায় নিহত তিন অভিবাসী

এসব অনিয়মিত অভিবাসীদের বেশিরভাগই আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে এসেছে বলে জানিয়েছে ভিয়েনা কর্তৃপক্ষ।

দেশটির কট্টর ডানপন্থি ফ্রিডম পার্টির নিরাপত্তা বিষয়ক মুখপাত্র হানেস আমেসবাউয়ার চলতি বছরের শেষে অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছেন। 

অপরদিকে, বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গেরহার্ড কার্নার বলেছেন, “রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসী কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রবেশ করলেও মোট সংখ্যাট এক লাখে ছাড়িয়ে যাবে বলে এখনও মনে হচ্ছে না।”

অস্ট্রিয়ার বামপন্থি সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টিও অনিয়মিত অভিবাসীদের ব্যাপক প্রবাহ নিয়ে বর্তমান সরকারকে এক হাত নিয়েছে। 

দলটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কার্নার আশ্রয়প্রার্থী নিয়ন্ত্রণ ইস্যুতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। সরকার দক্ষতার সাথে একটি আন্তর্জাতিক সমাধান সন্ধানে ব্যর্থ হয়েছে।”

পড়ুন>>অস্ট্রিয়ায় নিখোঁজ চার হাজারেরও বেশি অভিভাবকহীন অভিবাসী শিশু 

শরণার্থী ও সার্বিক অভিবাসন নীতি বছরের পর বছর ধরে অস্ট্রীয় রাজনীতিতে প্রাধান্য পেয়ে আসছে।  

চ্যালেঞ্জের মুখে বর্তমান রাষ্ট্রপতি

দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে কঠোর অভিবাসন নীতি বাস্তবায়িত হয়েছিল কট্টর ডানপন্থি ফ্রিডম পার্টির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হার্বার্ট কিকলের দুই বছরের মেয়াদে।

হঠাৎ অনিয়মিত অভিবাসীদের সংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমান ক্ষমতাসীন মধ্য বামপন্থি আলেকজান্ডার ভ্যান ডার বেলেন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কারণ ইউরোপের দেশগুলোর সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে অভিবাসন কেন্দ্রীক রাজনীতি বরাবরই ডানপন্থি ও কট্টর ডানপন্থিদের ভালো ফলাফল অর্জনে ভূমিকা পালন করেছে। 

যদি বর্তমান ক্ষমতাসীনরা প্রথম দফায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে কট্টর ডানপন্থি ফ্রিডম পার্টির প্রার্থী ওয়াল্টার রোজেনক্রানজের পিছনে সব ডান প্রার্থী একত্রিত হয়ে ভ্যান ডের বেলেনকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সম্ভাবনা রয়েছে। 

পড়ুন>>ট্রাকের ‘গোপন বাক্সে’ ভয়ংকর মানব পাচার

সর্বশেষ, ২০১৬ সালের নির্বাচনে অনুরূপ একটি ফলাফলে কট্টর ডানপন্থি প্রার্থীরা জয়ের খুব কাছাকাছি গিয়েছিল ।


এমএইউ/এডিকে


 

অন্যান্য প্রতিবেদন