(ফাইল ছবি) শরণার্থীদের সমর্থনে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে একটি সংহতি সমাবেশ। ছবি: ইপিএ
(ফাইল ছবি) শরণার্থীদের সমর্থনে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে একটি সংহতি সমাবেশ। ছবি: ইপিএ

জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সুইজারল্যান্ডে বসবাসরত আফ্রিকান বংশোদ্ভূত অভিবাসীরা সুইস আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং বিচার বিভাগের হাতে কাঠামোগত বর্ণবাদের শিকার হোন।

জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকান বংশোদ্ভূত লোকেদের সুইজারল্যান্ডে নিয়মিত আক্রমণাত্মক নিরাপত্তা যাচাই, জাতিগত অপমান এবং সহিংসতার সাথে জড়িত সন্দেহে অভিযুক্ত হিসেবে দাঁড় করানো হয়।

গত সোমবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে এই প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।

প্রতিবেদনে স্বীকার করা হয়েছে, সুইস কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে ইতিবাচক ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু এসব শক্তিশালী কাঠামোগত বৈষম্যে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।

আরও পড়ুন>>সুইজারল্যান্ড: অন্তঃসত্ত্বা অভিবাসীকে বহিষ্কারের ঘটনায় পুলিশকে নিন্দা

আফ্রিকান অভিবাসী বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের ওয়ার্কিং গ্রুপের সভাপতি ক্যাথরিন নামাকুলা বলেন, “সুইজারল্যান্ডের কৃষ্ণাঙ্গদের উপর চালানো বৈষম্যমূলক আক্রমণগুলোর মধ্যে রয়েছে নৃশংস পুলিশি গ্রেপ্তার, অবমাননাকর আচরণ এবং পূর্ব নির্ধারিত নেতিবাচক ধারণার উপর ভিত্তি করে দোষারোপের মতো অন্যায় কার্যক্রম।”

এ বছরের জানুয়ারিতে সুইজারল্যান্ড সফর করে আসা এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, “ভুক্তভোগীরা বিচার বিভাগের সমর্থনে ঘটা এসব আইনি ও সামাজিক চাপের মুখে শুধুমাত্র থানায় অভিযোগ দায়ের করেই ক্ষান্ত থাকেন।” 

পড়ুন>>বলকান রুট হয়ে অনিয়মিত অভিবাসন বন্ধে একজোট অস্ট্রিয়া-সুইজারল্যান্ড

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এসব ঘটনার পরে খুব কম পুলিশ কর্মকর্তাই প্রাতিষ্ঠানিক শাস্তির মুখোমুখি হন।

বিশেষজ্ঞরা আরও দেখেছেন যে , সুইজারল্যান্ডে আফ্রিকানদের উপর হওয়া বর্ণবাদী আচরণকে প্রায়ই অবমূল্যায়ন করা হয়। এসব ঘটনার পেছনে অনুমিত সংবেদনশীলতাকে দায়ী করা হয়। এভাবে স্থানীয় সুইস কর্তৃপক্ষ এসব ঘটনা গুরুত্বের সাথে আমলে নেয় না।

উপরন্তু, এসব পূর্ব নির্ধারিত নেতিবাচক ধারণাগুলোকে রাজনৈতিক প্রচারাভিযানের মাধ্যমে শক্তিশালী করা হয়েছে।

আরও পড়ুন>>সুইজারল্যান্ডে শরণার্থীদের নিয়ে প্রতীকী সংসদ

জাতিসংঘে সুইজারল্যান্ডের স্থায়ী প্রতিনিধি জার্গ লাউবার সোমবারের বৈঠকে বলেছেন যে, তার সরকার পরিস্থিতি উন্নতির জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে।

জার্গ লাউবার-এর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, “সুইজারল্যান্ড জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণের সাথে একমত। আফ্রিকান বংশোদ্ভূতদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদ এবং জাতিগত বৈষম্যের মতো সমস্যাগুলোকে জরুরি বিষয় হিসাবে মোকাবেলা করা উচিত।”

পড়ুন>>সুইজারল্যান্ডে আশ্রয় কেন্দ্রে র্নিযাতনের শিকার শরণার্থীরা, অ্যামনেস্টির প্রতিবেদন

তিনি আরও যোগ করেন, “বর্ণ বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে বর্ণবাদের শিকার ব্যক্তিদের জন্য স্থানীয় ক্যান্টনগুলোতে পরামর্শকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে সংস্কারসহ সহ বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।”


এমএইউ/আরার (আনসা)




 

অন্যান্য প্রতিবেদন