কারদামেনা বন্দরে হেলেনিক কোস্ট গার্ডের একটি জাহাজ, কোস দ্বীপ, ডোডেকানিস, গ্রীস | ছবি: আর্কাইভ/ইপিএ/হেলেনিক কোস্ট গার্ড
কারদামেনা বন্দরে হেলেনিক কোস্ট গার্ডের একটি জাহাজ, কোস দ্বীপ, ডোডেকানিস, গ্রীস | ছবি: আর্কাইভ/ইপিএ/হেলেনিক কোস্ট গার্ড

গ্রিক উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং একটি জাহাজ ভূমধ্যসাগর থেকে শুক্রবার ৭৫ জনকে উদ্ধার করেছে। এদিকে গ্রিসের পুলিশ জানায়, মানবপাচারে যুক্ত থাকার অভিযোগে ২৩ জনকে আটক করা হয়েছে।

একটি বিবৃতিতে উপকূলরক্ষীবাহিনী জানিয়েছে, পালতোলা নৌকাটিকে নিরাপদে স্থানীয় বন্দরে নিয়ে যাওয়ার পর ৬৯ জন পুরুষ ও ছয়জন নারী সুস্থ ছিলেন। অভিবাসীরা একটি পালতোলা নৌকায় পেলোপনিস উপদ্বীপ থেকে রওনা দিয়েছিলেন। তখন তাদের উদ্ধার করা হয়। প্রবল বাতাসের কারণে বিপদের আঁচ করেছিলেন অভিবাসীরা। হেলেনিক কোস্ট গার্ড জানায়, অভিবাসীরা বিপদগ্রস্ত পরিস্থিতিতে সংকেত পাঠাতে পেরেছিলেন। তাদের নিয়াপোলিসের সমুদ্রতীরবর্তী গ্রামে নিয়ে যাওযা হয়।

অভিবাসীরা তুরস্ক থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন এবং তাদের গন্তব্য ছিল ইটালি। তবে তারা কোন দেশ থেকে এসেছিলেন তা প্রাথমিকভাবে স্পষ্ট ছিল না।

পূর্ব ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইটালি যাওয়ার পথে একাধিক চোরাচালান চক্রের মাধ্য়মে বিপজ্জনক পথ পেরোতে বাধ্য হন অভিবাসীরা। তুরস্কের এজিয়ান উপকূল এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় দেশ যেমন সিরিয়া এবং লেবাননকে টার্গেট করে পাচারকারীরা।

চলতি মাসের শুরুর দিকে পেলোপনিস এবং লেসবস দ্বীপের কাছে দুটি অভিবাসী নৌকাডুবিতে কমপক্ষে ৩০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইঞ্জিনের ক্ষতি বা অন্য দুর্ঘটনা ঘটে। জরাজীর্ণ নৌকা দুর্ঘটনার একটা কারণ বটেই। তাছাড়া ক্লান্ত যাত্রীরা সাধারণত নৌকা, ঝড়ো আবহাওয়া এবং অশান্ত সমুদ্রে যাতায়াতে অনভিজ্ঞ। তাই তারা বিপদের মুখে পড়ে অসহায় হয়ে পড়েন, কোনো ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন পর অভিবাসীদের মৃতদেহ মেলে।

শুক্রবার গ্রিক পুলিশ জানায়, তারা একটি মানবপাচারচক্র ভেঙে দিয়েছে। তিনজন গ্রিক ও ছয়জন বিদেশি নাগরিক সহ সেই চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সন্দেহভাজন ১৪ জনের খোঁজে এখনো তল্লাশি চলছে।

পাচারকারীরা তুরস্ক থেকে অভিবাসীদের এভ্রোস পার করে নিয়ে আসছিল বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। জন প্রতি ছয় হাজার ইউরো বা ছয় লাখ টাকা নিয়েছিল মানবপাচারকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, তারা পাচারচক্রের একটি আস্তানায় নয় কোটি টাকা জব্দ করেছে।

কর্মকর্তারা জানান, শরণার্থীদের গ্রিক-তুরস্ক সীমান্ত অতিক্রম করে বন্দরে নিয়ে আসা হয়। এরপর চুরি করা গাড়িতে থেসালোনিকি নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তী গন্তব্যের জন্য অভিবাসীদের থেকে আরো টাকা চাওয়া হয়েছিল। যেমন উত্তর মেসিডোনিয়ায় স্থানান্তরের জন্য দেড় লাখ টাকা বা পশ্চিম ইউরোপের দেশে স্থানান্তরের জন্য তিন লাখ টাকা চাওয়া হয়। ভুয়া পাসপোর্টের জন্য এক লাখ ৬০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল।

গ্রিক উপকূলরক্ষী বাহিনী বলেছে যে তারা বছরের প্রথম আট মাসে প্রায় দেড় হাজার জনকে উদ্ধার করে, যা গত বছরের তুলনায় ৬০০ জন কম।

গ্রিক কর্মকর্তারা বলেন, মানবপাচারকারীরা ইদানীং দক্ষিণে দীর্ঘ এবং আরো বিপজ্জনক পথে পাড়ি দিচ্ছে।

আরকেসি/আরআর(ডিপিএ)

 

অন্যান্য প্রতিবেদন