ইটালীয় এনজিও ‘ইমার্জেন্সি’ পরিচালিত প্রথম অভিবাসী উদ্ধার জাহাজ লাইফ সাপোর্ট। ছবি:আনসা
ইটালীয় এনজিও ‘ইমার্জেন্সি’ পরিচালিত প্রথম অভিবাসী উদ্ধার জাহাজ লাইফ সাপোর্ট। ছবি:আনসা

‘লাইফ সাপোর্ট’ নামে একটি নতুন জাহাজ নভেম্বর থেকে ভূমধ্যসাগরে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে৷ চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী ইটালীয় এনজিও ‘ইমার্জেন্সি’ দেশটির জেনোয়া শহরে জাহাজটির উদ্বোধন করেছে৷

ভূমধ্যসাগরে অভিবাসী উদ্ধারে জড়িত সবগুলো জাহাজই বেসরকারি এবং বিভিন্ন এনজিও পরিচালিত৷ উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে যাত্রা করা বিপদে পড়া অভিবাসীদের তারা সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় সেবা দেয় এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে নিরাপদে বন্দরে নামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে৷ তবে এর সবগুলো খুব কম সময়ই একইসাথে সক্রিয় থাকে৷ 

মধ্য ভূমধ্যসাগরে ইটালীয় এনজিও ইমার্জেন্সি পরিচালিত নতুন একটি অভিবাসী উদ্ধার জাহাজ দেশটির উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত জেনোয়ার প্রাচীন বন্দরে উদ্বোধন করা হয়েছে৷ এনজিওটির প্রথম জাহাজ হিসেবে কার্যক্রম শুরু করবে এটি। 

পড়ুন>>অভিবাসীদের জন্য ‘ভুয়া বিয়ে’: ইটালিতে গ্রেপ্তার চক্রের সদস্যরা

‘লাইফ সাপোর্ট’ নামের এই উদ্ধার জাহাজটি গত ২১ ও ২২ অক্টোবর সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল৷

জাহাজটিতে এনজিও ইমার্জেন্সির প্রতিষ্ঠাতা জিনো স্ট্রাডার এর সুপরিচিত একটি উক্তি লেখা রয়েছে৷ সেটি হলো: “মানবাধিকার অবশ্যই প্রত্যেকের, প্রকৃতপক্ষে প্রত্যেকের, অন্যথায় আমরা সেগুলোকে বিশেষাধিকার বলব৷’’

নতুন এই উদ্ধার জাহাজ নভেম্বরের শুরুতে লিবিয়ার অনুসন্ধান এবং উদ্ধার অঞ্চলে যাত্রা করার কথা রয়েছে৷ তবে এটি পুরো মধ্য ভূমধ্যসাগর জুড়ে কাজ করার জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছে এর পরিচালনায় থাকা কর্তৃপক্ষ৷ 

ধারণক্ষমতা ১৭৫ জন 

১০ বছর পুরাতন জাহাজটি নরওয়ের সমুদ্রবর্তী তেল পরিকাঠামোগুলোকে সহায়তার জন্য নির্মীত হয়েছিল৷ এর দৈর্ঘ্য ৫১ দশমিক তিন মিটার, প্রস্থ ১২ মিটার এবং ওজন এক হাজার ৩৪৬ টন৷

এনজিও ইমার্জেন্সির তহবিলে জমা হওয়া ব্যক্তিগত অনুদানের অর্থ দিয়ে এটি কেনা হয়েছে৷ জেনোয়া বন্দরের সান জর্জিও শিপইয়ার্ডের মাধ্যমে এটিকে পুনরায় যাত্রী পরিবহণে ব্যবহারযোগ্য করা হয়। 

আরও পড়ুন>>অভিবাসীদের কাছে ‘কৃতজ্ঞ’ ক্যালাব্রিয়ার যে শহর

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এনজিওটির সদস্যরা বলেন, ‘‘এটি আমাদের প্রতিষ্ঠাতা জিনো স্ট্রাডার স্বপ্নগুলোর মধ্যে একটি৷’’

জাহাজটি ১০ ​​জন ক্রু সদস্য, ১৫ জন কর্মচারী এবং দুই সহকারী সহ মোট ২৭ জন কর্মী এবং ১৭৫ জন অভিবাসী পরিবহণে সক্ষম৷ 

জাহাজটিতে অভিবাসীদের উদ্ধারের পর রাখার জন্য একটি আচ্ছাদিত ডেক রয়েছে৷ যেখানে একজন ডাক্তার, দুই জন নার্স এবং দুইজন অনুবাদকের সমন্বয়ে একটি ক্লিনিকের ব্যবস্থা থাকবে। 

‘ইটালি ও ইইউ কর্তৃপক্ষের শূন্যতা পূরণ’

দাতব্য সহায়তা সংস্থা ইমার্জেন্সির বর্তমান প্রেসিডেন্ট রোসেলা মিসিও বলেছেন, ‘‘সংস্থাটি এই জাহাজটিকে জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করেছে৷ যাতে সমুদ্রে থাকা অবস্থায় আমরা কীভাবে কাজ করব তা মানুষ বুঝতে পারে এবং মানুষের জীবন রক্ষায় অভিবাসন নীতির প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারে৷’’

পড়ুন>>অভিবাসীদের পাশে থাকে ভূমধ্যসাগরের যে শহর 

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের এই নতুন প্রতিশ্রুতি ইটালি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগের শূন্যতা পূরণে অবদান রাখবে৷’’


এমএইউ/এফএস (আনসা)


 

অন্যান্য প্রতিবেদন