অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সহায়তা দিতে ভূম্যধসাগরে বিমান থেকে নজরদারি করছে দুই জার্মান মানবাধিকার কর্মী৷ ফাইল ছবি৷ রেনেটা ব্রিটো৷ এপি/পিকচার অ্যালায়েন্স৷
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সহায়তা দিতে ভূম্যধসাগরে বিমান থেকে নজরদারি করছে দুই জার্মান মানবাধিকার কর্মী৷ ফাইল ছবি৷ রেনেটা ব্রিটো৷ এপি/পিকচার অ্যালায়েন্স৷

অভিবাসনের আশায় নৌকায় করে ইউরোপে যাত্রা করা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধারে যাওয়া বেসরকারি সংস্থা সি-ওয়াচের একটি বিমানকে গুলি করে ভূপতিত করার হুমকি দিয়েছে লিবিয়ার কোস্টগার্ড৷ সি-ওয়াচের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ করা হয়৷

গত সপ্তাহে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের একটি নৌকা ভূমধ্যসাগরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ভাসছিল৷ তাদের উদ্ধারে এগিয়ে যায় জার্মানির বেসরকারী সংস্থা সি-ওয়াচের উদ্ধারকারী একটি জাহাজ৷ এসময় সি-ওয়াচের টহলরত একটি বিমানকে লিবিয়ার কোস্টগার্ডের সদস্যরা চলে যেতে বলে৷ আর স্থান ত্যাগ না করলে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে বিমানটিকে ধ্বংস করে ফেলা হবে এমন হুমকি দেয় বলে অভিযোগ৷

সামাজিক যোগাযোমাধ্যমে প্রকাশিত সংস্থাটির এক ভিডিও এবং অডিও রেকর্ডিংয়ে শোনা যায়, লিবিয়ার কোস্টগার্ড রেডিওর মাধ্যমে সি-ওয়াচের বিমানটিকে ‘লিবিয়ার সমুদ্রসীমা’ থেকে সরে যাওয়ার জন্য বলছে৷ আর সরে না গেলে বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার হুমকি দিচ্ছে৷  

পড়ুন: ক্যামেরায় ধরা পড়ল অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকায় গুলি করার দৃশ্য

এসময় বিমানে থেকে বলা হয়, ‘‘এটি লিবিয়া সমুদ্রসীমা নয়৷ আমরা ইউরোপিয়ান সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ এরিয়াতে আছি৷ এটি লিবিয়া সমুদ্রসীমা নয়, ওভার৷’’

সি-ওয়াচ জানায়, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধার করে লিবিয়ায় নিয়ে গেছে দেশটি কোস্টগার্ড৷

‘নৌকা লক্ষ্য করে গুলি’

সি-ওয়াচের দাবি, তারা যে এলাকায় টহল দিচ্ছিল সেটি আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা এবং ইউরোপের দেশ মাল্টার উদ্ধার অভিযানের অধীন৷   

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের দেওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, লিবিয়ার কোস্টগার্ডের সদস্যরা কযেক ডজন অবিবাসনপ্রত্যাশীকে তাদের জাহাজে উঠাচ্ছে৷    


এরপর তারা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকাটি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে, যাতে সেটি ডুবে যায়৷

এক বিবৃতিতে সি-ওয়াচ জানায়, ইউরোপের সমুদ্রসীমায় অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আটকানো আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন৷   

তবে সি-ওয়াচের এই দাবির বিষয়ে বার্তা সংস্থা এপির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি৷

ভয়াবহ হয়ে উঠছে ভূমধ্যসাগর

এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অভিবাসনের আশায় ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টার সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে৷    

আন্তর্জাতিক অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন জানায়, শুধুমাত্র চলতি বছর সাগর পাড়ি দেওয়ার এক লাখ ১০ হাজার ঘটনা ঘটেছে৷

এসব ঘটনায়, মোট ৬২ হাজার চারশ তিন জন ইউরোপে পৌঁছেছেন৷ আর মোট ৪৫ হাজার ৯৩৯ জনকে সমুদ্রে আটক করা হয়েছে৷ তাছাড়া মোট এক হাজার ১২৯জন অভিবাসনপ্রত্যাশী নিখোজ হযেছেন বা নিহত হয়েছেন৷

লোইজ ওলোফজে/আরআর

 

অন্যান্য প্রতিবেদন