হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জিওর্গি বাকোন্ডির জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর হাঙ্গেরি সীমান্তে অবৈধ পারাপারের প্রচেষ্টার সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
হাঙ্গেরির কট্টর ডানপন্থি প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অর্বানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা জিওর্গি বাকোন্ডি বলেছেন, “বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের কারণে হাঙ্গেরি সীমান্ত দিনদিন জটিল হয়ে উঠছে।”
হাঙ্গেরি টুডেতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সালে প্রায় দুই লাখ ৬৫ হাজার অনিয়মিত অভিবাসী দেশটির দক্ষিণ সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করেছে। গত বছরের একই সময় এই সংখ্যাটি ছিল এক লাখ ১৪ হাজার।
আরও পড়ুন>>অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে অস্ট্রিয়া, সার্বিয়া ও হঙ্গেরির চুক্তি
এই বিষয়ে নিরাপত্তা উপদেষ্টা বাকোন্দি বলেন, “পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং ভারত থেকে আসা বিপুল সংখ্যক অনিয়মিত অভিবাসী হাঙ্গেরির সীমান্তে আসছেন। বিশেষ করে সীমান্তে ভারতীয় নাগরিকদের উপস্থিতি সবচেয়ে উদ্বেগজনক। এত সংখ্যক অবৈধ অভিবাসন প্রচেষ্টার ঘটনা নজিরবিহীন।”
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা যোগ করেন, “অনিয়মিত অভিবাসন কমার কোন সম্ভাবনা নেই। এটির প্রধান ভুক্তভোগী হবে ইউরোপের নিরাপত্তা এবং অর্থনীতি।”
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহান্তে হাঙ্গেরি কর্তৃপক্ষ মোট ৭৭৬ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে বেআইনি উপায়ে সীমান্ত পাড়ি দেয়ার অপরাধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে।
পড়ুন>>‘এখানে অভিবাসীর চেয়ে দালালের সংখ্যা বেশি’
এছাড়া, এটিও প্রকাশিত হয়েছে যে সম্প্রতি অভিবাসীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে মানবপাচারকারীদের সংখ্যাও বেড়েছে।
বুদাপেস্ট কর্তৃপক্ষের এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, "এই বছর হাঙ্গেরিতে মানবপাচারকারী এবং অভিবাসীদের সাথে জড়িত গাড়ি দুর্ঘটনার সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। ২০২২ সালের শুরু থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বেআইনি উপায়ে সীমানা অতিক্রম করার জন্য মোট দুই লাখ ১৫ হাজার ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন>>অভিবাসীর মাথা ন্যাড়া করে দিল হাঙ্গেরি পুলিশ!
দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি বছর মোট দেড় হাজার মানবপচারকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সম্প্রতি হাঙ্গেরির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রী পিটার সিজ্জার্তো বলেন, “পশ্চিম বলকান রুট দিয়ে হাঙ্গেরিতে পৌঁছানো অভিবাসীর সংখ্যা এখনও সর্বোচ্চ। ২০১৫ সালের শরণার্থী সংকটের সাথে বর্তমান পরিস্থিতির তুলনা করে যেতে পারে।”
পড়ুন>>হাঙ্গেরিতে ফের ক্ষমতায় অভিবাসীবিরোধী অর্বান
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “অনিয়মিত অভিবাসীরা সহিংসতা এবং আগ্রাসনের নতুন মাত্রা নিয়ে আসে। কারণ তারা এখন সশস্ত্র। মানবপাচার চক্রগুলো একে অপরকে গুলি করছে এবং হাঙ্গেরির পুলিশ ও সীমান্ত রক্ষাকারী সৈন্যদের হুমকি দিচ্ছে।”
হাঙ্গেরির এই মন্ত্রী তাদের এবং সমস্ত ইউরোপীয় দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পশ্চিম বলকান রুটে বিশেষ সমর্থনের আহ্বান জানান।
এমএইউ/এআই (শেঙ্গেনভিসা ইনফো, হাঙ্গেরি টুডে)