আশ্রয়প্রার্থীদের পারিবারিক পুনর্মিলনে ডাচ অভিবাসন কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল৷ ইউরোপীয় এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে যা অবৈধ৷ একটি আদালত এমনটাই রায় দিয়েছে৷
হেগের আদালত একজন তুর্কি নাগরিকের পক্ষে রায় দিয়েছে৷ রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে স্টে পারমিট দেওয়া হয়েছিল তাকে৷ তিনি তার স্ত্রী ও সন্তানদের নেদারল্যান্ডসে আনতে চেয়েছিলেন৷
এই নিয়ে দ্বিতীয় কোনো রায় দেয়া হল যা সরকারের বিতর্কিত পারিবারিক পুনর্মিলন বিধিনিষেধ নীতির উপর আরেকটি বড় ধাক্কা৷
চলতি বছরে ডাচ সরকার একটি নিয়ম চালু করে৷ তাতে বলা হয়, বসবাসের জায়গা না থাকলে পরিবারের সঙ্গে ফের দেখা করার জন্য শরণার্থীদের ন্যূনতম ১৫ মাস অপেক্ষা করতে হবে৷
হারলেমের একটি আদালত এক সিরীয় নারীর পক্ষে রায় দিয়েছে যার পরিবারকে ডিসেম্বরের শুরুতে নেদারল্যান্ডসে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল৷ বিচারকরা সিরিয়ার নারী মামলায় প্রাথমিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে বলেছেন, পারিবারিক পুনর্মিলনের উপর নিষেধাজ্ঞার আইনে কোনো ভিত্তি নেই৷
ডাচ শরণার্থী সংস্থা ফ্লুশটেলিঙ্গেনভেয়ার্ক নেদারল্যান্ডের মতে মোটামুটি একইরকম ২০টি মামলা বর্তমানে আদালতে বিচারপ্রক্রিয়ার আওতায় রয়েছে৷
আদালতের রায় সত্ত্বেও পারিবারিক পুনর্মিলন রুখতে চায় সরকার
বিষয়টির দায়িত্বে থাকা রাষ্ট্রসচিব বলেন, আদালতের রায় সত্ত্বেও সরকার পারিবারিক পুনর্মিলনের বিধিনিষেধ বহাল রাখবে৷
তার যুক্তি, আদালতগুলি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত মামলার উপর রায় দিয়েছে, সম্পূর্ণ নীতিতে নয়৷
নেদারল্যান্ডসভিত্তিক একটি ইংরেজি ভাষার প্রকাশনা ডাচ নিউজ একস প্রতিবেদনে জানায়, হারলেমের বিচারকরা পারিবারিক পুনর্মিলনের পক্ষে প্রথম আদালতের রায়ের পর জুনিয়র বিচারমন্ত্রী এরিক ভ্যান ডার বার্গ বলেছেন, পারিবারিক পুনর্মিলন প্রক্রিয়া বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন তিনি৷ সর্বশেষ রায়ের পর দেশের শরণার্থী নীতির তত্ত্বাবধায়ক অবশ্য আপিল করবেন কি না তা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি৷
আবাসন সংকট
ডাচ শরণার্থী অভ্যর্থনা কেন্দ্রগুলি বর্তমানে ভর্তি৷ কারণ দেশটি আবাসন সংকটে ভুগছে৷ নতুন অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অতিরিক্ত হলে ঘুমাতে বাধ্য করা হয়েছে৷
এই সপ্তাহের শুরুর দিকে একটি ডাচ আদালত রায় দিয়েছে, ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের মতো একইভাবে স্থান দিতে হবে নেদারল্যান্ডসে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের৷ আদালত বর্তমান আবাসন সংকটের কথা বিবেচনা করে স্বীকার করেছে যে বাসস্থানের বর্তমান ঘাটতির কারণে এটি বাস্তবায়িত করা প্রায় অসম্ভব হবে৷
শরণার্থী এবং অভিবাসীদের জন্য বর্তমান আবাসন সংকট বেলজিয়াম এবং জার্মানি সহ ইউরোপ জুড়ে একটি সমস্যা৷ হাজার হাজার মানুষ বর্তমানে অস্থায়ী বাসস্থানে বসবাস করছে৷ অত্যধিক ভিড় ছাড়াও আর্থিক সংকটও ভয়াবহ৷
আগস্টে টের অ্যাপেল কেন্দ্রীয় নিবন্ধন শিবিরে তিন মাস বয়সি একটি শিশু মারা যায় যখন অতিরিক্ত ভিড়ের ফলে কমপক্ষে ৭০০ জন আশ্রয়প্রার্থীকে ক্যাম্পের বাইরে অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় ঘুমাতে হয়েছিল৷ একই মাসে আমস্টারডাম আবাসনের ঘাটতি মোকাবেলার প্রয়াসে একটি প্রমোদতরীতে অস্থায়ীভাবে অন্তত হাজার অভিবাসীদের থাকার একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে৷
নেদারল্যান্ডস যদিও ইউক্রেন থেকে শরণার্থীদের একটি বিশেষ মর্যাদা প্রদান করেছে৷
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তাদের থাকার ব্যবস্থা করেছে৷ সাধারণত অন্যান্য দেশের আশ্রয়প্রার্থীদের তুলনায় ভাল অবস্থায় রয়েছেন তারা৷
আরকেসি/আরআর (ডিপিএ)