ভূমধ্যসাগর থেকে শরণার্থী ও অভিবাসীদের লিবিয়ায় ফিরিয়ে নিতে ইইউর আর্থিক সহায়তা পায় লিবীয় উপকূলরক্ষীরা | ছবি: পিকচার অ্যালায়েন্স
ভূমধ্যসাগর থেকে শরণার্থী ও অভিবাসীদের লিবিয়ায় ফিরিয়ে নিতে ইইউর আর্থিক সহায়তা পায় লিবীয় উপকূলরক্ষীরা | ছবি: পিকচার অ্যালায়েন্স

অনিয়মিত উপায়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করা প্রায় ৬৫০ জন অনিয়মিত অভিবাসীকে লিবিয়ার পূর্ব উপকূল থেকে আটক করেছে কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশি, সিরীয় ও মিশরীয় অভিবাসীদের আটকের কথা পূর্বাঞ্চলের নৌ কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।

২০২২ সালের শেষ দিনেও অনিয়মিত অভিবাসীদের লিবিয়া উপকূল থেকে সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা অব্যাহত ছিল। 

লিবিয়ার পূর্ব অঞ্চলের নৌ সদর দপ্তর শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর তাদের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পূর্ব লিবিয়ার বেনগাজি শহরের উপকূল থেকে অনিয়মিত উপায়ে ইউরোপীয় উপকূলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিলেন এমন ৬৫০ অভিবাসীকে রক্ষীবাহিনী আটক করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, “লিবিয়া নৌবাহিনীর বিশেষ শাখা প্রায় ৬৫০ জন অনিয়মিত অভিবাসী সহ একটি ট্রলারকে আটক করেছে।”

আরও পড়ুন>>লিবিয়ায় অভিবাসীদের নির্যাতনে ‘সহায়তা করছে’ ফ্রন্টেক্স

একই সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানায়, উদ্ধার করা ট্রলারটিকে বেনগাজি বন্দরের একটি বিশেষ বাহিনীর নৌ ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

নৌবাহিনীর কমান্ডার রামজি নাজেম বিবৃতিতে বলেছেন, “নৌবাহিনীর বিশেষ দলকে বেনগাজির উত্তর-পশ্চিমে একটি ট্রলারে থাকা অনিয়মিত অভিবাসীদের উপস্থিতির বিষয়ে সতর্ক করা হয়। ট্রললারটিতে বাংলাদেশি, সিরীয় এবং মিশরীয় সহ কয়েক শতাধিক লোক ছিল।”

পড়ুন>>উদ্ধার জাহাজে সন্তান জন্ম দিলেন এক নারী

২০১১ সালে গাদ্দাফির শাসনের পতনের পর থেকেই লিবিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। যার ফলে দেশটি সাব-সাহারা আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ এশিয়া থেকে আসা অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য ইটালির উপকূলে পৌঁছানোর ট্রানজিট জোনে পরিণত হয়েছে। 

লিবিয়া থেকে ইউরোপে পৌঁছানো বেশিরভাগ নৌকা এখন পর্যন্ত পশ্চিম লিবিয়া থেকে ছেড়ে গেলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশটির পূর্ব উপকূল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সংখ্যা বহুগুণ বেড়েছে। অনিয়মিত অভিবাসীরা প্রায়শই ট্রলার এবং বড় মাছ ধরার নৌকায় এ অঞ্চল থেকে যাত্রা করছে।

অনেক অভিবাসীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করে অসাধু পাচারকারীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়। অপরদিকে সমুদ্র থেকে আটক হলে লিবিয়া কর্তৃপক্ষ তাদের নির্যাতন করে বলেও অভিযোগ জানায়। 

পড়ুন>>শরণার্থীদের দুর্দশার কথা জানাচ্ছে ‘রিফিউজিস ইন লিবিয়া’

অভিবাসন সংস্থা ও এনজিওগুলো নিয়মিত লিবিয়ার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জঙ্গিবাহিনীর বিরুদ্ধে অন্যায় আচরণ ও সহিংসতার অভিযোগ করে আসছে। অভিবাসীদের সঙ্গে আটককেন্দ্রগুলোতে অমানবিক আচরণের অভিযোগ উঠেছে৷

সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্সের বিরুদ্ধে লিবিয়ায় অভিবাসীদের অমানবিক আচরণে অভিযোগ তুলেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ)৷ সংস্থাটির অভিযোগ, আকাশপথে নজরদারি ব্যবস্থার কারণে লিবিয়ার উপকূলরক্ষীরা অভিবাসীদের আটক করে সেদেশে ফেরত নিয়ে যেতে পারছে। 


এমএইউ/আরকেসি (এএফপি)


 

অন্যান্য প্রতিবেদন