আফগানিস্তানের জালালাবাদে ইউএনএইচসিআর দ্বারা সমর্থিত একটি শিক্ষামূলক প্রকল্পে একজন আফগান নারী এবং স্বেচ্ছাসেবক৷ ছবি: ইউএনএইচসিআর/অক্সিজেন ফিল্ম স্টুডিও
আফগানিস্তানের জালালাবাদে ইউএনএইচসিআর দ্বারা সমর্থিত একটি শিক্ষামূলক প্রকল্পে একজন আফগান নারী এবং স্বেচ্ছাসেবক৷ ছবি: ইউএনএইচসিআর/অক্সিজেন ফিল্ম স্টুডিও

এনজিওর সঙ্গে আফগান নারীদের কাজ করার সম্ভাবনা সীমিত করার নির্দেশ দিয়েছে তালেবান। সেটি প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি। আফগান কর্তৃপক্ষের কাছে এ নিয়ে আবেদন করেছেন তিনি।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর সোমবার জানিয়েছে, "এই নিষেধাজ্ঞা আফগান জনগণ, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের সমর্থনের প্রয়াস সাময়িকভাবে বন্ধ করবে।" 

২৯ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর ক্ষমতাসীন তালেবানকে এই নির্দেশনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির প্রেস রিলিজে বলা হয়েছে, "মানবিক কাজে নারীদের বাধা দেওয়ার মানে তাদের মানবতাকে অস্বীকার করা। এটি আফগানদের জন্য, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের জন্য আরো দুর্ভোগ ও কষ্ট ডেকে আনবে। এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে।"

পরিসংখ্যানে শরণার্থী নারীর অবদান

ইউএনএইচসিআর অনুসারে, আফগানিস্তানে ১৯টি ইউএনএইচসিআর অংশীদার সংস্থার সঙ্গে ৫০০ জনের বেশি নারী কাজ করেন। প্রায় ১০ লাখ নারী এবং অল্প বয়স্ক মেয়েদের সহায়তা করে তারা। 

নিষেধাজ্ঞার ফলে "আফগান জনগণ, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের পাশে থাকতে ইউএনএইচসিআর যে কাজ করছে, তা সাময়িকভাবে বন্ধ করতে বাধ্য হবে।" 

ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, চার দশক ধরে সংঘাত ও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন আফগানরা। এদের মধ্যে লক্ষ লক্ষ শরণার্থী এবং অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিও রয়েছেন। প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি এই নারী কর্মীরাই আফগানদের সংকটের সমাধান খুঁজে চলেছেন বছরের পর বছর।

ইউএনএইচসিআরের মতে, আফগানিস্তানে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত। এছাড়া ২৯ লাখ মানুষ দেশের বাইরে শরণার্থী হিসাবে বাস করছেন।

'বিধ্বংসী প্রভাব'

গ্র্যান্ডি বলেন, নিষেধাজ্ঞার ফলে "ইতিমধ্যে গৃহহীনদের জন্য সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদি সমাধানগুলি কমছে। যেমন-স্বেচ্ছায় দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত।" 

প্রেস রিলিজ অনুসারে, আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশে নারীরা সক্রিয়ভাবে মানবিক প্রতিক্রিয়ার নেতৃত্ব দিয়েছেন। জাতিসংঘ বলেছে, নারীদের কাজের ফলে ইউএনএইচসিআর ২০২১ সালের আগস্ট থেকে ৬০ লাখের বেশি আফগানের ঘরে পৌঁছাতে পেরেছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তির উপসংহারে বলা হয়েছে, "নারীদের উপর বিধিনিষেধের পাশাপাশি এই নতুন আদেশ আফগানিস্তানের জনসংখ্যার উপর ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলবে। এই জনসংখ্যা আনুমানিক চার কোটি।"

আরকেসি/কেএম (আনসা)

 

অন্যান্য প্রতিবেদন