শরণার্থীদের মর্যাদাপূর্ণ উপায়ে স্বাগত জানাতে ২০২২ সালে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর ধারণ ক্ষমতা দ্বিগুণ করেছে লুক্সেমবুর্গ। বর্তমানে দেশটির আশ্রয় কাঠামোতে প্রায় সাত হাজার ৪০০ লোককে রাখার ক্ষমতা রয়েছে। ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের চাপ সামলাতে সম্প্রতি আরও একটি নতু কেন্দ্র চালু করেছে লুক্সেমবুর্গ কর্তৃপক্ষ।
কোভিড-১৯ জনিত মহামারির কারণে লুক্সেমবুর্গে নতুন আশ্রয়প্রার্থী ও শরণার্থীদের সংখ্যা কমতে থাকে। তবে এই সংখ্যাটি গত বছরের গ্রীষ্ম থেকে আবারও বাড়তে শুরু করেছে।
আশ্রয়প্রার্থী ও শরণার্থীদের চাপ সামলাতে দেশটির কির্চবার্গ এলাকায় ৪ জানুয়ারি একটি নতুন আশ্রয় কাঠামো উদ্ভোধন করেছেন লুক্সেমবুর্গের অভিবাসন মন্ত্রী জঁ এসেলবর্ন।
গত বছর আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে তিন হাজার ৪০০ শয্যার বেশি আবাসন সক্ষমতা বৃদ্ধির পরেও কাঠামাগুলোতে আশ্রয়প্রার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে।
২০২২ সালের চূড়ান্ত প্রতিবেদন এখনও প্রাকাশিত না হলেও ৪ জানুয়ারি দেওয়া এক সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, লুক্সেমবুর্গ গত বছর প্রায় সাত হাজার ২০০ জন জন নতুন শরণার্থী প্রবেশ করেছে।
যাদের মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার আশ্রয়প্রার্থী ইউক্রেনের যুদ্ধ থেকে পালিয়ে এসেছেন। আন্তর্জাতিক সুরক্ষার চাওয়া বাকি দুই হাজার ২০০ জন আবেদনকারীদের বেশিরভাগই সিরিয়া, ইরিত্রিয়া এবং আফগানিস্তানের নাগরিক।
আরও পড়ুন>>অনিয়মিত অভিবাসন রুখতে ভারত-অস্ট্রিয়া চুক্তি
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের মার্চ থেকে বেশ কয়েকটি বিষয়ে ইতিমধ্যেই জোর দিয়েছে লুক্সেমবুর্গ কর্তৃপক্ষ।এই ক্রমবর্ধমান সংখ্যক শরণার্থীদের স্বাগত জানানো ছোট্ট এই দেশের জন্য বেশ বড় চ্যালেঞ্জ।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশটির আশ্রয় কাঠামো নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা বহুগুণ বেড়েছে। গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে অভিবাসন সংস্থা লুক্রেনের সভাপতি নিকোলাস জারভ বলেন, “আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে শরণার্থীদের কিছুটা বন্দিশিবিরের মতো রাখা হয়। তারা চলাচলের জন্য স্বাধীন হলেও অনেক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়। এটি মানবিক সম্ভাবনাকে সীমিত করে।”
পড়ুন>>নীতি বদল ছাড়া ২০২৩ সালে ইইউর শরণার্থী প্রক্রিয়া আরো দুঃসহ
দাতব্য সংস্থা কারিতাসের পরিচালক মার্ক ক্রোশেট স্থানীয় এক রেড়িওকে বলেন, “সমন্বয়ের অভাবের কারণে আশ্রয় কাঠামোগুলোতে অস্থায়ী অনেক সমস্যা তৈরী হচ্ছে।”
সাধারণ সামাজিক সেবা ছাড়াও আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর ব্যবস্থাপনায় আরও বেশি যৌথ সম্পৃক্ততার আহ্বান জানিয়েছে কারিতাস।
দেশটির অভিবাসন মন্ত্রনালয় এবং ন্যাশনাল রিসেপশন অফিস (ওএনএ) আশ্রয় কাঠামোর সংকট মোকাবেলায় বর্তমান নিয়মে কার্যক্রম জোরদার করার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
তাদের মতে, আশ্রয় কাঠামোতে রেড ক্রস, কারিতা, হাই কমিশন ফর ন্যাশনাল প্রোটেকশন (এইচসিপিইএন), সেনাবাহিনী এবং সিজিডিআইএস-এর সহায়তায় ‘একটি মর্যাদাপূর্ণ আবাসন ও অভ্যর্থনা’ নিশ্চিত করার জন্য নিরলসভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হবে।
আরও পড়ুন>>‘আমি আমার সন্তানদের মরতে দেখেছি’
নতুন আশ্রয়কেন্দ্রে চালুর জন্য লুক্সেমবুর্গ সিটি নগর কর্তৃপক্ষ, কির্চবার্গ ফান্ডসহ অন্যান্য অংশীদাররা অভিবাসন মন্ত্রী জঁ এসেলবর্নকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
অভিবাসন মন্ত্রী নতুন আশ্রয়কেন্দ্র চালুর সময় আবারও শহর কর্তৃপক্ষগুলোকে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য অতিরিক্ত অভ্যর্থনা কাঠামো বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন। এটির জন্য নির্দিষ্ট আর্থিক সাহায্য মঞ্জুরের বিষয়টিও বিবেচনার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
এমএইউ/আরকেসি (লো কুতোদিয়া আনদিপন্দঁ লুক্সেমবুর্গোয়া) (lequotidien.lu)