ইন্টারপোল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের যৌথ পুলিশি অভিযানে সুদান থেকে আটক করা হয়েছে বিশ্বের ‘শীর্ষ মানবপাচাকারী’ কিদান জাকারিয়া হাবতেমারিয়ামকে। ছবি: ডিপিএ/পিকচার এলায়েন্স
ইন্টারপোল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের যৌথ পুলিশি অভিযানে সুদান থেকে আটক করা হয়েছে বিশ্বের ‘শীর্ষ মানবপাচাকারী’ কিদান জাকারিয়া হাবতেমারিয়ামকে। ছবি: ডিপিএ/পিকচার এলায়েন্স

বিশ্বের ‘শীর্ষ মানবপাচাকারী’ কিদান জাকারিয়াকে সুদান থেকে গ্রেপ্তারের ঘোষণা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত৷ ইন্টারপোলের সাথে পরিচালিত যৌথ পুলিশি অভিযানের মাধ্যমে ইরিত্রিয়ার এই নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়৷

৫ জানুয়ারি সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আন্তজার্তিক পুলিশ সংস্থা-ইন্টারপোলের যৌথ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শীর্ষ মানবপাচারকারী কিদান জাকারিয়া হাবতেমারিয়ামের বিরুদ্ধে দুইটি ‘রেড নোটিশ’ জারি হয়েছিল৷ পূর্ব আফ্রিকা থেকে ইউরোপে যেতে ইচ্ছুক শত শত অভিবাসীকে অপহরণ ও প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে৷ 

২০২১ সালের শুরুর দিকে ইথিওপিয়ার একটি আদালতে শুনানি চলাকালে পালিয়ে যান তিনি৷ এরপর দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন এই দুর্ধর্ষ পাচারকারী৷ পরবর্তীতে তার অনুপস্থিতিতে চলা একটি মামলায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ইথিওপিয়ার আদালত৷




বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “ইন্টারপোলের সহায়তায় আমিরাত কর্তৃপক্ষ কিদান জাকারিয়ার অপরাধমূলক নেটওয়ার্ক এবং তার ভাইয়ের পরিচালিত অবৈধ আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে৷’’

আরও পড়ুন>>মানব পাচারের অভিযোগ ইটালিতে দুই বাংলাদেশি আটক

সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সাইদ আবদুল্লাহ আল-সুওয়াইদি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “আমিরাত কর্তৃপক্ষের সহায়তায় কিদান জাকারিয়াকে ১ জানুয়ারি সুদান থেকে আটকে সক্ষম হয় যৌথ তদন্ত দল৷ বিশ্বের মোস্ট ওয়ান্টেড এই মানবপাচারকারী আর কোনো ঘৃণ্য কাজ করতে পারবে না৷”



তিনি আরও বলেন, “এত আটকের মাধ্যমে আমরা ইউরোপে মানবপাচারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রুটগুলির একটি বন্ধ করে দিয়েছি, যার মাধ্যমে ইরিত্রিয়া, সোমালিয়া এবং সুদান থেকে লিবিয়া হয়ে হাজার হাজার অভিবাসী ইউরোপের দেশগুলোতে পাচার হচ্ছিল৷”

ইন্টারপোলের পুলিশ সার্ভিসের পরিচালক স্টিফেন কাভানাঘ বলেন, ‘‘এই চোরাচালানকারী নেদারল্যান্ডস, ইথিওপিয়া ও অন্যান্য কয়েকটি দেশের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ অপরাধী হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিল৷’’

পড়ুন>>বেলারুশের চোরাচালান চক্র ভাঙলো ইউরোপোল

সংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘এই তদন্তে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইথিওপিয়া, নেদারল্যান্ডস এবং সুদান কর্তৃপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে৷ কিদান জাকারিয়া হাবতেমারিয়ামের গ্রেপ্তার ইন্টারপোলের নেটওয়ার্কের শক্তি এবং সব দেশ একসাথে কাজ করলে কী অর্জন করা যায় সেটির প্রমাণ৷’’


২০২১ সালের অক্টোবরে ডাচ প্রসিকিউশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘‘৩৭ বছর বয়সি কিদান জাকারিয়া হাবতেমারিয়াম ইরিত্রিয়ার নাগরিক৷ তিনি একটি গ্যাংয়ের প্রধান৷ লিবিয়া থেকে নেদারল্যান্ডসসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আসতে ইচ্ছুক ইরিত্রিয়ান ও বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী ও শরণার্থীদের উপর তারা চাঁদাবাজি, অপহরণ এবং ধর্ষণের মতো নির্যাতন চালিয়েছে৷’’

এই পাচারকারী তার গ্যাং থেকে উপার্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করেন বলেও সন্দেহ ডাচ প্রসিকিউশনের৷ 


এমএইউ/এফএস (এএফপি)




 

অন্যান্য প্রতিবেদন