অভিবাসী উদ্ধারে নিয়োজিত একাধিক সংস্থার স্বেচ্ছাসেবী বা অধিকারকর্মীদের বিচার শুরু করেছে গ্রিস৷ রাষ্ট্রপক্ষের দাবি, বিচারের আওতায় আনা ব্যক্তিরা মানবপাচারে জড়িত৷ অন্যদিকে বিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, তারা মানুষের জীবন বাঁচিয়েছেন৷
মানবপাচার, গুপ্তচরবৃত্তি ও অর্থ পাচারের অভিযোগে মঙ্গলবার ২৪ অভিবাসী উদ্ধারকর্মীর বিচার শুরু হয়েছে গ্রিসের লেসবসে৷ এই বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে আসছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো৷ লো৷
২৪ জনের মধ্যে গ্রিস ছাড়াও অন্যান্য দেশের নাগরিক রয়েছেন৷ তারা লেসবস দ্বীপে ২০১৬ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত সক্রিয় ইমার্জেন্সি সেন্টার ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি এনজিওতে কর্মরত ছিলেন৷ তাদের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নে মানবপাচারসহ অন্য অভিযোগগুলোও আনা হয়েছে৷ পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, তারা পরিকল্পিতভাবে তুরস্ক থেকে গ্রিসে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পারাপারে সহায়তা করেছেন৷ পুলিশ ও উপকূলরক্ষী বাহিনীর বেতার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে তাদের নৌকা ও জাহাজগুলোর অবস্থান অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জানিয়ে দিতেন৷ তবে এসব অভিযোগ নাকচ করেছেন আসামিদের আইনজীবী৷

আসামিদের মধ্যে অন্যতম সিরিয়ার শরণার্থী সারাহ মারদিনি৷ গত বছর তাকে নিয়ে নেটফ্লিক্সে দ্য সুইমার্স নামের একটি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়৷ ২০১৫ সালে সারাহ ও তার বোন ইয়ুসরা মারদিনি একটি শরণার্থী নৌকা কয়েক ঘণ্টা ধরে দড়ি দিয়ে টেনে সমুদ্রতীরে নিয়ে আসার ঘটনায় সংবাদ শিরোনাম হন৷ এই দুইজন পরবর্তীতে জার্মানিতে আশ্রয় নেন৷
২০১৬ সালের রিও ও ২০২১ সালের টোকিও অলিম্পিকে শরণার্থী দলে অংশ নেন সারা৷
পড়ুন: গ্রিসে ১৪২ বছরের সাজা পাওয়া অভিবাসীর কারামুক্তি
এনজিও ও মানবাধিকারকর্মীদের প্রতিবাদ
যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই বিচারকে ‘প্রহসন’ হিসেবে অভিহিত করেছে৷ তারা অবিলম্বে মামলা তুলে নিতে গ্রিক কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে৷
অ্যামনেস্টির ইউরোপীয় আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক নিলস মুইজনিয়াক্স বলেন, ‘‘সারাহ এবং সিনের অবস্থানে থাকলে আমাদের কারও যা করা উচিত ছিল তার তাই করেছিলেন৷ ইউরোপের সবচেয়ে প্রাণঘাতি সমুদ্রপথে ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকা লোকেদের সাহায্য করা এবং উপকূলে তাদের সহায়তা কোনও অপরাধ নয়৷’’
আসামীদের মধ্যে সারাহ মারদিনি, সিন বিন্দার ও নাসোস কারাকিতসোস ২০১৮ সালের আগস্টে গ্রেপ্তার হন৷ বিচারের আগেই তারা তিন মাসের বেশি জেল খেটেছেন৷ ২০২১ সালে এই বিচার শুরুর কথা থাকলেও প্রক্রিয়াগত কারণে তা পেছাতে থাকে৷ মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই ধীর গতি নিয়ে সমালোচনার পাশাপাশি এটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা হিসেবে অভিহিত করে আসছে৷
এফএস/এসিবি (এএফপি, এপি, ডিপিএ)