আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডা পাঠানোর পরিকল্পনার বৈধতা সংক্রান্ত আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি পেয়েছেন একদল অভিবাসী৷ এতে লন্ডনের বহুল সমালোচিত এই পরিকল্পনা আবারও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে৷
ব্রিটেনের সরকারের রুয়ান্ডা কৌশলকে বৈধ বলে দেয়া হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আপিল করার অনুমতি পেয়েছেন একদল আশ্রয়প্রার্থী৷ সোমবার শুনানি শেষে হাইকোর্টের দুই বিচারক আপিল কোর্টে দেশটির এই অভিবাসন নীতির বৈধতা চ্যালেঞ্চ করার অনুমতি দেন৷ এই বিষয়ে আবেদন করা আশ্রয়প্রার্থীদের আইনি সহায়তা দিয়েছে অ্যাসাইলাম এইড নামের একটি বেসরকারি সংস্থা৷ আদালতে এখন বিষয়টির সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত ব্রিটেনের পক্ষে কোন আশ্রয়প্রার্থীকে আফ্রিকার দেশটিতে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না৷
এর আগে গত ডিসেম্বরে হাইকোর্ট সরকারের নীতির পক্ষে রায় দেয়৷ এর ফলে জাতিসংঘের শরণার্থী কনভেনশন বা অভ্যন্তরীণ আইনের কোন বরখেলাপ হবে না বলে জানান বিচারক৷
আদালতের রায়ে হতাশা প্রকাশ করেছিল অভিবাসী নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থাগুলো৷ যুক্তরাজ্যে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের বন্দি অবস্থায় ইচ্ছার বিরুদ্ধে রুয়ান্ডায় পাঠানোকে অনৈতিক হিসেবে অভিহিত করে আসছে তারা৷

ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে আশ্রয়প্রার্থী, শরণার্থীদের আগমন ঠেকাতে গত বছর রুয়ান্ডা পরিকল্পনা হাজির করে বরিস জনসন সরকার৷ এজন্য আফ্রিকার দেশটির সঙ্গে চুক্তিও হয় লন্ডনের৷ জুনে প্রথম দফায় আশ্রয়প্রার্থীদের একটি দলকে সেখানে পাঠানোর কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে ইউরোপীয় আদালতের রায়ে তা স্থগিত হয়৷
অনিয়মিত অভিবাসী আগমন বন্ধ করা ঋষি সুনাকের নেতৃত্বাধীন ব্রিটেনের নতুন সরকারেরও অন্যতম নীতি৷ তারাও আগের সরকারের রুয়ান্ডা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর৷
সোমবার আদালতের সিদ্ধান্তের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘‘রুয়ান্ডার সঙ্গে করা চুক্তির অধীনে বিপজ্জনক ও অবৈধ পথে আসা যে কাউকে দেশটিতে পাঠানো হবে৷ সেখানে তারা নতুন জীবন গড়তে পারবেন৷ এতে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে অসংখ্য জীবন ঝুঁকিতে ফেলা অপরাধী মানবাপাচার গ্যাংকে থামানো যাবে৷’’
তিনি জানান, আদালত এরইমধ্যে এই নীতিকে আইনসঙ্গত হিসেবে রায় দিয়েছে৷ আপিল শুনানিতে তারা এই অবস্থান ধরে রাখতে প্রস্তুত আছেন৷
অ্যাসাইলাম এইডের পক্ষের আইনজীবী ক্যারোলিন ওট বলেন, আপিল শুনানির জন্য আদালত তাদের অবস্থান যথাযথভাবে অনুধাবন করায় তারা সন্তুষ্ট৷
উল্লেখ্য, কঠোর অভিবাসন নীতি সত্ত্বেও গত বছর ৪৫ হাজার ৭৫৬ জন ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ব্রিটেনে পৌঁছান, যা গত বছরের চেয়ে ১৭ হাজার বেশি৷
এফএস/কেএম (রয়টার্স)