এভ্রোস নদী তীরবর্তী সীমান্তে  গ্রিক পুলিশের প্রহরা৷ ছবি: ইপিএ
এভ্রোস নদী তীরবর্তী সীমান্তে গ্রিক পুলিশের প্রহরা৷ ছবি: ইপিএ

গত দুই বছরে গ্রিসে অভিবাসীদের আগমন ‘নাটকীয়ভাবে’ কমে গেছে বলে উল্লেখ করেছেন দেশটির অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী৷ কমেছে দেশটিতে বসবাসরত আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যাও৷

গ্রিস সরকারের কঠোর অভিবাসন নীতি, সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার, আশ্রয় আবেদনের প্রক্রিয়া দ্রুতকরণ এবং অভিবাসন আইন পরিবর্তনকে এর কৃতিত্ব দিয়েছেন মন্ত্রী নোতিস মিতারাচি৷ মঙ্গলবার গ্রিসের অভিবাসন ও আশ্রয় বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চলা ‘বিস্ফোরণের’ পরে ২০২১ সালে (অনিয়মিত উপায়ে অভিবাসনপ্রত্যাশীর আগমন) মাত্র ৮৭৪৫ জনে নেমে আসে, এই ধারাবাহিকতা ২০২২ সালেও বজায় ছিল৷’’

উল্লেখ্য, সিরিয়া সংকটের জের ধরে ২০১৫ সালে অভিবাসন সংকটের সময় গ্রিসে লাখো অভিবাসনপ্রত্যাশীর আগমন ঘটে৷ তুরস্ক হয়ে দেশটিতে প্রবেশ করে তারা৷ এরপর পশ্চিম বলকান দেশগুলো দিয়ে পশ্চিম ইউরোপের ধনী রাষ্ট্রগুলোতে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন বেশিরভাগ মানুষ৷ 

মিতারাচি জানান, এক সময় যেখানে ১২১টি কেন্দ্রে ৯২ হাজার আশ্রয়প্রার্থী ছিল এখন সেখানে ৩৩টিতে মাত্র ১৪ হাজার জন রয়েছেন৷ 

তবে সরকারের এই পরিসংখ্যানের সাথে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার পরিসংখ্যানের কিছু পার্থক্য রয়েছে৷ ইউএনএইচসিআর-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১ সালে দেশটিতে অনিয়মিত উপায়ে মোট ৯১৫৭ জন এসেছেন৷ এর মধ্যে সমুদ্রপথে ৪৩৩১ জন আর স্থলপথ দিয়ে সীমান্ত পার হন ৪৮২৬ জন৷ 


তাদের হিসাবে ২০২২ সালে গ্রিসে নতুন করে পৌঁছান ১৮ হাজার ৭৭৮ জন আশ্রয়প্রার্থী, যাদের মধ্যে সমুদ্রপথেই আসেন ১২ হাজার ৭৫৬ জন৷ 

গ্রিকমন্ত্রী মিতারাচির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নে অনিয়মিত উপায়ে যত অভিবাসনপ্রত্যাশী পৌঁছান তার ৭৫ শতাংশই প্রাথমিকভাবে গ্রিসে প্রবেশ করে৷ ২০২২ সালে এই হার মাত্র পাঁচ শতাংশে নেমে এসেছে৷ অনিয়মিত অভিবাসন রোধে ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি বৈধ অভিবাসনকে উৎসাহ দিতে এথেন্স কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী৷ 

তিনি বলেন, ‘‘অভিবাসন ইস্যুর কখনও অবসান হয় না৷ এটা একইসঙ্গে চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে প্রয়োজন৷ আমাদের চাহিদা অনুযায়ী নিয়ম, মানদণ্ড, চুক্তির ভিত্তিতে আমরা অভিবাসনে গুরুত্ব দেবো৷ সেইসঙ্গে আমাদের অবস্থান মানবপাচার চক্র এবং অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে৷’’ 

উল্লেখ্য, অভিবাসীদের জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন, সীমান্তে অবৈধ পুশব্যাকসহ নানা অভিযোগে গ্রিসের বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে আসছে অভিবাসন সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো৷ তবে সেগুলো বরাবরই অস্বীকার করে থাকে এথেন্স৷

এফএস/এসিবি (এপি)

পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে ইউরোপ: স্বপ্নের হাতছানিতে মৃত্যুযাত্রা

 

অন্যান্য প্রতিবেদন