(ফাইল ছবি) ব্রাসেলসের উত্তরে একটি ট্রেন স্টেশনের সামনে অপেক্ষারত আশ্রয়প্রার্থীরা। ছবি: মেদসা-সঁ-ফ্রন্তিয়ের (এমএসএফ)
(ফাইল ছবি) ব্রাসেলসের উত্তরে একটি ট্রেন স্টেশনের সামনে অপেক্ষারত আশ্রয়প্রার্থীরা। ছবি: মেদসা-সঁ-ফ্রন্তিয়ের (এমএসএফ)

২০২২ সালে আচমকা আশ্রয়ের আবেদন বৃদ্ধির সম্মুখীন হয়েছিল বেলজিয়াম৷ আশ্রয় কাঠামোতে নতুন করে চার হাজার ব্যক্তির ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি সত্ত্বেও সংকট কাটেনি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অন্যান্য ইইউ দেশগুলির সঙ্গে আশ্রয়প্রার্থীদের ‘ন্যায্য বণ্টন’ করার আহ্বান জানিয়েছে ব্রাসেলস।

বুধবার, ১৮ জানুয়ারি বার্তা সংস্থা এএফপি-র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বেলজিয়ামের অভিবাসন বিষয়ক সেক্রেটারি অফ স্টেট নিকোল ডি মুর সতর্ক করে বলেছেন, বেলজিয়ামের আশ্রয় বিষয়ক অভ্যর্থনা ব্যবস্থা আবারও ‘সংকটপূর্ণ’।

এই ইউরোপীয় দেশটিতে গত বছর আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়ে ৪০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

গত বছর নথিভুক্ত হওয়া প্রায় ৩৬ হাজার ৮০০ আশ্রয় আবেদনের বেশিরভাগই দায়ের করেছেন আফগানিস্তান, সিরিয়া, ফিলিস্তিন এবং বুরুন্ডির নাগরিকেরা। 

আরও পড়ুন>>আশ্রয়প্রার্থীদের আরো সাহায্য করুক বেলজিয়াম, আর্জি মানবাধিকার গোষ্ঠীর

পাশাপাশি গত বছর ৬৩ হাজার ইউক্রেনীয়দের অস্থায়ী সুরক্ষা মর্যাদা দেওয়া হয়েছে বলে সরকারি পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়েছে। 

নিকোল ডি মুর বলেন, "আমাদের দেশে সুরক্ষার জন্য আসা এমন লোকের সংখ্যা ১ লাখ বেড়ে গিয়ে সমস্যা তৈরি করেছে। এটি আমাদের আশ্রয় ব্যবস্থার উপর অনেক বেশি চাপ তৈরি করেছে।”

বর্তমানে বেলজিয়ামে জরুরি বাসস্থানের অভাবের ভুক্তভোগী আশ্রয়প্রার্থীরা। ফলে আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে অনেককেই রাস্তায় বা আশ্রয় কাঠামোর বাইরে ঘুমাতে বাধ্য হচ্ছেন। 

পড়ুন>>স্কর্পিয়ান: ইউরোপের মোস্ট ওয়ান্টেড মানব পাচারকারী

২০২২ সালে প্রায় চার হাজার ব্যক্তির জন্য অতিরিক্ত জায়গা তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে দেশটির আশ্রয় কাঠামোর দায়িত্বে থাকা ফেদাজিলের সক্ষমতা ৩৩,৫০৫ এ উঠে এসেছে। 

সমস্যা সমাধান এই রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি ৮০০ জনেরও বেশি কর্মচারী নিয়োগ করেছে।

নিকোল ডি মুর বলেন, “বর্তমানে আমাদের কাছে সবচেয়ে বড় অভ্যর্থনা ক্ষমতা রয়েছে। আমাদের আশ্রয় পরিষেবাগুলিতে এত বেশি কর্মী কখনো ছিল না।

তিনি অতিরিক্ত জায়গা ও জনবল বাড়ানোর কাজ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “একা একা সমস্যা সমাধান যথেষ্ট হবে না।”

জনসংখ্যার তুলনায় বিপুল সংখ্যক আশ্রয় আবেদন

অভিবাসন বিষয়ক সেক্রেটারি অফ স্টেট বিশ্বাস করেন, এক কোটি সাড়ে ১১ লাখ বাসিন্দার দেশটি ইউরোপীয় প্রতিবেশীদের তুলনায় মারাত্মক চাপের মুখোমুখি হচ্ছে।”

আরও পড়ুন>>বেলজিয়াম থেকে যুক্তরাজ্যে সমুদ্রপাড়ি কমেছে ৭৫ শতাংশ

তিনি এই ব্যবস্থার ‘সংস্কার’ করার আহবান জানিয়ে এএফপিকে বলেন, “ইউরোপীয় স্তরে, আমাদের সত্যিই একটি ভাল সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নীতি থাকা দরকার। আমাদের একটি ন্যায্য বণ্টন নীতি প্রয়োজন। কারণ এমন অনেক দেশ রয়েছে যেখানে বেলজিয়ামের তুলনায় অনেক কম আশ্রয়প্রার্থী রয়েছে।”

শরণার্থী এবং রাষ্ট্রহীন ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারিত বেলজিয়াম সরকারের দপ্তর অনুসারে, বেলজিয়াম এমন ইইউ এর সদস্য দেশগুলির এমন গ্রুপে রয়েছে যারা তাদের জনসংখ্যার তুলনায় সর্বাধিক সংখ্যক আবেদন গ্রহণ করে। 

পড়ুন>>ব্যক্তিগত বিমানে তুরস্ক থেকে ইউরোপে মানবপাচার

সংস্থাটির মতে, “অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস, লুক্সেমবার্গ এবং গ্রিসেও ব্যাপকভাবে আশ্রয় আবেদন নথিভুক্ত করা হয়েছে। অপরদিকে,স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলিতে আশ্রয় আবেদনের সংখ্যা খুব একেবারেই কম।”

ইইউ এজেন্সি ফর অ্যাসাইলাম (ইইউএএ) অনুসারে, ২০২২ সালে সবগুলো ইইউভুক্ত (আইসল্যান্ড, লিচেনস্টাইন, নরওয়ে এবং সুইজারল্যান্ডসহ দেশে সর্বমোট নয় লাখেরও বেশি আশ্রয়ের আবেদন নথিভুক্ত হয়েছে। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি। 


এমএইউ/আরকেসি 







 

অন্যান্য প্রতিবেদন