ব্রিটিশ অভিবাসন মন্ত্রী রবার্ট জেনরিক। ছবি: রয়টার্স
ব্রিটিশ অভিবাসন মন্ত্রী রবার্ট জেনরিক। ছবি: রয়টার্স

শ্রমবাজারে অনুমতি ছাড়া কর্মরত অনিয়মিত অভিবাসীদের ধরতে একটি টাস্কফোর্সের অধীনে অভিযানের ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ অভিবাসন মন্ত্রী রবার্ট জেনরিক। ফুড ডেলিভারি ও নির্মাণ খাতের মতো সেক্টরে বারবার অভিযান চালিয়ে শ্রমবাজারে কালোবাজারি বন্ধ করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

শ্রমবাজারে অনুমতি ছাড়া কর্মরত অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য ‘প্রতিকূল পরিবেশ’ সৃষ্টি করে নতুন করে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে চায় ব্রিটিশ সরকার। 

দেশটির অভিবাসন মন্ত্রী রবার্ট জেনরিক বলেছেন, “শুধুমাত্র যোগ্য ব্যক্তিরা কাজ করতে এবং পাবলিক সার্ভিসের সুবিধা নিতে পারবে।”

তিনি বলেন, এই প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করতে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যাবতীয় ক্ষমতা ব্যবহার করবে।

রবার্ট জেনরিক থেরেসা মে সরকারের স্বরাষ্ট্র সচিব হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন। সে সময় তিনি থেরেসা 'অবৈধ অভিবাসনের জন্য প্রতিকূল পরিবেশ' প্রসারিত করতে চান বলে বিবৃতি দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন। 

আরও পড়ুন>>ইউরোপের সীমান্তে পুশব্যাক বন্ধ করা হবে: ফ্রন্টেক্স প্রধান

শ্রমবাজারে কালোবাজারি বন্ধ করতে পারলে অনিয়মিত অভিবাসীদের কর্মক্ষেত্রে শোষণ কমে আসবে বলে মন্তব্য করেন এই মন্ত্রী। 

অবৈধ চাকরি বন্ধে নতুন টাস্কফোর্স

রবার্ট জেনরিক একটি নতুন টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। যা অভিবাসীদের ব্যাংক হিসাব, কর্মক্ষেত্রে, বাসস্থান এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স জনিত তথ্য ও কর্মকাণ্ড তদারকিতে আনার ব্যাপারে কাজ করবে। 

পাশাপাশি এটি ফুড ডেলিভারি বা খাবার সরবরাহসহ বিভিন্ন দৈনন্দিন পেশায় জড়িত থাকা অনিয়মিত অভিবাসীদের অবৈধ কাজ রোধেও ভূমিকা রাখবে। 

পড়ুন>> ২০২২ সালে ইইউতে দ্বিগুণ আশ্রয় আবেদন

নতুন টাস্কফোর্স নির্মাণ খাত এবং গাড়ি ধোয়ার মতো সেক্টরে সরেজমিন পরিদর্শনের হার ৫০ শতাংশ বাড়ানোর বৃদ্ধি করবে। যাত এসব সেক্টরে অবৈধ কাজের হার কমিয়ে আনা যায়। 

ইতিমধ্যে গত বছরের ১১ ডিসেম্বর থেকে এই ধরনের ব্যবসায় অভিযান ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।  এসব অভিযানে ৩৬২টি গ্রেপ্তার এবং বেআইনিভাবে কর্মরতদের ৯২টি জরিমানা জারি করা হয়েছে। জরিমানাগুলোর আর্থিক মূল্য ১৫ লাখ মিলিয়ন পাউন্ড।

নির্মাণ খাতে আরও অভিযান

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শুরুতে, হোম অফিসের ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির ৫০ জনেরও বেশি কর্মকর্তা সাতজন পুলিশ কর্মকর্তার সহায়তায় পশ্চিম সাসেক্সের ক্রাউলির উপকণ্ঠে একটি বিলাসবহুল হাউজিং এস্টেটের নির্মা সাইটে অভিযান শুরু করে

পড়ুন>> চ্যানেলে অনিয়মিত অভিবাসন বন্ধে যুক্তরাজ্য-আলবেনিয়া চুক্তি স্বাক্ষর

সাইটে বিক্ষিপ্তভাবে কর্মরত কর্মীদের অবস্থান নির্দিষ্ট করতে কর্মকর্তারা সেখানে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে ভিডিও এবং ইনফ্রা রেড ক্যামেরা সজ্জিত একটি ড্রোন ওড়ে।

এ সময় পালানোর চেষ্টা করা২৪ বছর বয়সি এক আলবেনীয় ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছিলেন। 

নিউ ক্যাসল-ভিত্তিক অন্য একটি সাইটে একইরকমের অভিযানের পর সাতজন অনিয়মিত অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এই ব্যক্তিরা একজন সাব-কন্ট্রাক্টরের অধীনে নির্মাণ সাইটটিতে কাজ করছিলেন।

আরও পড়ুন>>আশ্রয় আবেদন যাচাইয়ে সুপারমার্কেটের অদক্ষ কর্মী নিয়োগ যুক্তরাজ্যে! 

রবার্ট জেনরিক বলেন, “অবৈধ কাজ অবর্ণনীয় ক্ষতির কারণ। এটি সৎ কর্মীদের সঙ্গে প্রতারণা করে, দুর্বল লোকেদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে। আমাদের অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ দলগুলো আইন লঙ্ঘনকারীদের বিচারের আওতায় আনতে দিনরাত কাজ করছে।”

 তার কথায়, “এই অপরাধ দমন করা এবং অবৈধ অভিবাসীদের অপসারণে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ক্ষমতায়ন করা আমাদের অগ্রাধিকার। নতুন টাস্কফোর্সের সহায়তায় আমরা আমাদের আইন ও সীমানার অপব্যবহার রোধ করতে আরো দ্রুত এগিয়ে যাব।”

পড়ুন>> যুক্তরাজ্যে গাঁজা চাষে বাধ্য হন যে অভিবাসীরা

যুক্তরাজ্যে কাজের অনুমতি না থাকা ব্যক্তিদের কাজে নিয়োগ দেয়া মালিকদের প্রতি কর্মীর জন্য ২০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা, পাঁচ বছরের জেল, ব্যবসা বন্ধ এবং ভবিষ্যতে কোনো ব্যবসায় পরিচালক হিসাবে কাজ করতে অযোগ্যতার মতো আইনি নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হন।


এমএইউ/আরকেসি    (ডেইলি মেইল ইউকে)




 

অন্যান্য প্রতিবেদন