সুইজারল্যান্ডে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও ক্ষতিকর’ অভিবাসন বন্ধ করার পাশাপাশি আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন প্রক্রিয়াটিও বিদেশে স্থানান্তরের কথা ভাবছে সে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল সুইস পিপলস পার্টি।
সুইজারল্যান্ডের রাজধানী বার্নে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে ডানপন্থি সুইস পিপলস পার্টির (এসভিপি) সভাপতি মার্কো চিয়েসা। তিনি বলেন, "দেশের জন্য অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ক্ষতিকর অভিবাসন অবশ্যই আমাদের বন্ধ করতে হবে।"
আলপাইন দেশটি এ বছরের অক্টোবরে ফেডারেল নির্বাচনের যখন জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখনই দেশটির শক্তিশালী রাজনৈতিক দলটি এমন ঘোষণা দিলো।
অনেক বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী সুইজারল্যান্ডে আসছে, আশ্রয় নিচ্ছে--সংকট এখানেই সীমাবদ্ধ নয় বলে মনে করেন দলপ্রধান চিয়েসা। তিনি বলেন, "আর এ কারণে যার বা যাদের আসা উচিত, তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।"
সুইজারল্যান্ডে আশ্রয় নেয়ার প্রক্রিয়াটিও আর নিজ দেশে রাখতে চায় না রাজনৈতিক দলটি। দলীয় ঘোষণাপত্রে এমন কথা বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, রুয়ান্ডার সঙ্গে ব্রিটেনের করা পরিকল্পিত চুক্তির আদলেই আশ্রয় প্রক্রিয়াটিকে সুইজারল্যান্ডের বাইরে স্থানান্তরিত করতে চায় দলটি।
জাতিসংঘের শরণার্থী শিবিরগুলোর উদাহরণ টেনে ঘোষণাপত্রে এসভিপি জানিয়েছে, "একটি নতুন সহযোগিতা এবং সুরক্ষা নীতির আলোকে, সুইজারল্যান্ড আর্থিকভাবে এবং যৌক্তিকভাবে সংকটাপূর্ণ অঞ্চলে অভ্যর্থনা এবং সুরক্ষা কেন্দ্র পরিচালনায় অংশ নিতে পারে।"
"অবৈধ অনুপ্রবেশ" ঠেকাতে অস্ট্রেলিয়ান অ্যাসাইলাম মডেলের দিকেও নজর রাখছে এসভিপি। তারই আদলে, বিশেষ করে বিমানবন্দরে ট্রানজিট জোন স্থাপন করার কথা ভাবছে তারা। যেখানে আশ্রয়প্রার্থীরা তাদের আবেদন জমা দিতে পারবে।
এতে আরো বলা হয়েছে, "আশ্রয়প্রার্থীরা সুইস ভূখণ্ডে থাকবে না এবং তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নেতিবাচক হলে যে দেশে থেকে তারা সুইজারল্যান্ডে আসতে চেয়েছিল, সেখানে তাদের সরাসরি ফেরত পাঠানো হবে।"
অভিবাসন ইস্যুতে অস্ট্রিয়া, ব্রিটেন এবং ডেনমার্কের মতো দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ইচ্ছেও পোষণ করেছে রাজনৈতিক দলটি।
২০২২ সালে স্থলবেষ্টিত সুইজারল্যান্ডে আশ্রয়ের আবেদন পড়েছে ২৪ হাজার ৫০০টি, যা ২০২১ তুলনায় প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বেশি। আবেদনকারীদের বেশিরভাগই আফগানিস্তান এবং তুরস্ক থেকে এসেছেন।
এছাড়াও, গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে ৭৫ হাজার ইউক্রেনীয় সুইজারল্যান্ডে বিশেষ অস্থায়ী সুরক্ষা পেয়েছে।
সুইস সরকার মনে করছে, চলতি বছর দেশটিতে আশ্রয়প্রার্থী মানুষের সংখ্যা ২৪ হাজার থেকে বেড়ে তা ৪০ হাজার হতে পারে। আর এই হিসাবের মধ্যে ইউক্রেনীয়দের অন্তর্ভুক্তই করেনি তারা।
টিএম/এসিবি (এএফপি)