লিবিয়াতে মানবপাচারকারীরা অবৈধ পথে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নির্যাতন করে থাকে বলে অভিযোগ রযেছে৷ ফাইল ফটো৷ নারসিসো কোনতেরেস/হানস লোকাস/ইমাগো
লিবিয়াতে মানবপাচারকারীরা অবৈধ পথে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নির্যাতন করে থাকে বলে অভিযোগ রযেছে৷ ফাইল ফটো৷ নারসিসো কোনতেরেস/হানস লোকাস/ইমাগো

চোরাকারবারিদের খপ্পরে পড়ে লিবিয়ায় প্রায় ছয় লাখ ১০ হাজার অনিয়মিত অভিবাসনপ্রত্যাশী অবস্থান করছে বলে জানিয়েছন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনকেন্দ্রের বিজ্ঞান বিষয়ক পরিচালক আহমিদ আল-জাইদানি৷

অভিবাসীদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে চোরাকারবারিরা তাদের অঙ্গ পাচার করছে বলেও দাবি করেছেন তিনি৷

ত্রিপোলিতে বুধবার অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ে আল-ইনমা অর্গানাইজেশন ফর সাপোর্টিং ইয়ুথ অ্যান্ড উইমেন আয়োজিত একটি আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা জানান৷

এতে আরো অংশ নিয়েছেন লিবিয়ার অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রিপরিষদের উপদেষ্টা এবং অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধে দেশটির সুপ্রিম কমিটির প্রতিনিধি গাইথ আল-সাকবি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপকূলরক্ষী ও বন্দর সুরক্ষা প্রতিনিধি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বাহার মাসুদ আবদেল সামাদসহ বেশ কয়েকজন অভিবাসন বিশেষজ্ঞ৷

মানব অঙ্গ পাচারে জড়িত আন্তর্জাতিক চক্রগুলোর সঙ্গে লিবিয়ার স্থানীয় চক্র জড়িত বলে দাবি করেন আল-জাইদানি৷ 

লিবিয়াকে টহল বোট দিল ইটালি

স্থানীয় চক্রগুলো অনিয়মিত অভিবাসীদের শোষণ নির্যাতন করে তাদের অঙ্গ সংগ্রহ করে পাচারের নিশ্চিত খবর আছে বলে দাবি করেন তিনি৷

বিষয়টি নিয়ে গবেষণা ও তদন্তের আহ্বান জানিয়ে আল-জাইদানি বলেন, ‘‘এই অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করা জরুরি৷’’ অনিয়মিত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুট হিসেবে পরিচিত লিবিয়া যেন মানব অঙ্গের ব্যবসার ঘাঁটি না হয়, সেটি নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি৷

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনকেন্দ্রের বিজ্ঞান বিষয়ক পরিচালক আহমিদ আল-জাইদানি বলেন, ‘‘লিবিয়ায় প্রায় ছয় লাখ ১০ হাজার অবৈধ অভিবাসী রয়েছে৷ যারা আফ্রিকান চোরাকারবারীদের মাধ্যমে এসেছে৷ তাদের মধ্যে অনেকে লিবিয়ায় কাজ করে পরিবারের চাহিদা পূরণ করতে চায়৷ আবার অনেকে আছেন, যারা লিবিয়া থেকে কিছু অর্থ আয় করে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যেতে চান৷’’

‘অবৈধ অভিবাসনের’ বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়বে তুরস্ক ও ইটালি

অনিয়মিত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বেশিরভাগই আফ্রিকা, আরব ও এশিয়ার দেশগুলো থেকে এসেছে৷ তিনি জানান, অনিয়মিত অভিবাসনপ্রত্যাশীরা শুধু আফ্রিকার নাগরিক নয় বরং তারা সিরিয়া, মিশর, সুদান এবং ইয়েমেনের মতো আরব রাষ্ট্র থেকেও আসে বলে জানান তিনি৷ 

এশীয় বংশোদ্ভূত, বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকেও অনেকে আসেন বলে জানান আল-জাইদানি৷

সাধারণভাবে অভিবাসীদের প্রকৃত সংখ্যা বের করা কঠিন বলে মনে করেন তিনি৷ কারণ হিসেবে আল-জাইদানি জানান, যারা গোপনে এসে এদেশে থাকেন, তাদের গণনা করা সম্ভব নয়৷

অভিবাসীদের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে লিবিয়াকে একটি বলে মনে করেন আল-জাইদানি৷ তার মতে, অভিবাসীদের কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ছে৷ লিবিয়ার স্থানীয়রা অভিবাসীদের শোষণ করার পাশাপাশি কিছু সশস্ত্র গ্যাং অভিবাসীদের নিজ নিয়ে তাদের দিয়ে চুরি ও সশস্ত্র ডাকাতির কাজে ব্যবহার করছে বলে জানান তিনি৷

টিএম/আরআর (লিবিয়া হেরাল্ড)

 

অন্যান্য প্রতিবেদন