শুক্রবার একটি ট্রাক থেকে ১৮ অভিবাসীর মৃতদেহ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থলে তদন্তরত বুলগেরিয়া পুলিশ। ছবি: ইমাগো/নূর ফটো
শুক্রবার একটি ট্রাক থেকে ১৮ অভিবাসীর মৃতদেহ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থলে তদন্তরত বুলগেরিয়া পুলিশ। ছবি: ইমাগো/নূর ফটো

বুলগেরিয়ায় একটি ট্রাকে শ্বাসরোধে এক শিশুসহ ১৮ অভিবাসী নিহতের ঘটনায় সাত জন বুলগেরীয় নাগরিককে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় মোট ছয়জনকে সন্দেহভাজন অভিযুক্ত হিসেবে প্রাথমিকভাবে তালিকাভুক্ত করেছে দেশটি প্রসিকিউশন।

বুলগেরিয়া কর্তৃপক্ষ শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণা করেছে, শুক্রবার ট্রাকে শ্বাসরোধ হয়ে অভিবাসীর মৃত্যুর ঘটনা সবচেয়ে বড় অভিবাসী দুর্ঘটনার একটি। 

সাত ব্যক্তিকে আটকের পর প্রসিকিউশনের মুখপাত্র ক্রিস্টো ক্রাস্টেভ দাবি করেছেন, “এই দুর্ঘটনার পিছনে ছয়জন অভিযুক্ত রয়েছে। যাদের মধ্যে মানবপাচার নেটওয়ার্কের প্রধান ব্যক্তিও রয়েছে।”

আরও পড়ুন>> বুলগেরিয়ার বিরুদ্ধে সীমান্তে বর্বরতা চালানোর অভিযোগ

গ্রেপ্তার হওয়া সাতজনের মধ্যে দুজনকে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে না। সম্ভাব্য অভিযুক্তদের একজন এখনো পলাতক বলে জানিয়েছে সোফিয়া কর্তৃপক্ষ।

অভিযুক্তরা ১৫ বছরের কারাদণ্ডের ঝুঁকি রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে প্রসিকিউশন। মানবপাচারের দায়ে এই নেটওয়ার্কের নেতা এর আগে পাঁচ মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন।


২০১৫ সালের পর বলকান দেশ বুলগেরিয়া আবারও অভূতপূর্ব অভিবাসন প্রবাহের মুখোমুখি হয়েছে। 

পড়ুন>> বুলগেরিয়ায় মানবপাচারের বিরুদ্ধে ‘হাওয়ালা’ অভিযান

তদন্তের প্রাথমিক উপাদান অনুসারে, শুক্রবারের ঘটনার ট্রাকটিতে কাঠের তক্তার নীচে লুকিয়ে ৫২ জন অনিয়মিত অভিবাসীকে অবৈধভাবে পরিবহন করা হচ্ছিল। অভিবাসীদের সবাই তুরস্ক থেকে আসা আফগান অভিবাসী।

পুলিশ জানিয়েছে, ট্রাক্টর চালানো অবস্থায় চালক পিছন থেকে অভিবাসীদের শব্দ শুনতে পেলেও তাৎক্ষণিক থামেননি।

ডেপুটি প্রসিকিউটর জেনারেল বরিসলাভ সারাফভের মতে, অভিবাসীদের মৃতদের দেখে চালক পালিয়ে যান।

তিনি আরো বলেন, “পরিবহন করা লোকেদের সার্ডিন মাছের কৌটার মতো ভিতরে চাপা দেওয়া হয়। তারা ৩০ থেকে ৬০ মিনিটের মধ্যে ধীরে ধীরে প্রচণ্ড ব্যথায় মারা গিয়েছিল। এটি একটি নজিরবিহীন মানবিক ট্র্যাজেডি।”

পড়ুন>> শেঙেন জোনে ক্রোয়েশিয়া, ব্যর্থ রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া

তিনি আরও যোগ করেন, “অভিবাসীরা এই পথে আসতে পাচারকারীদের জনপ্রতি প্রায় ৭ হাজার ইউরো প্রদান করেছিল। পাচারকারীরা এই রুটে অর্থের লোভে প্রতি যাত্রায় একটি গাড়িতে ২৫ থেকে ৩৫ জন অভিবাসীকে মাসে অন্তত দুই বার পরিবহন করে থাকে।”

শুক্রবার বেঁচে যাওয়া প্রায় ৩৪ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সোফিয়ার পিরোগভ হাসপাতালের চিকিৎসক স্পাস স্পাসকভের মতে, অভিবাসীদের মধ্যে কয়েকজনকে নিষ্কাশনের ধোঁয়া শ্বাস নেওয়ার পরে কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়ার জন্য চিকিৎসা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন>> অভিবাসীকে গুলি করার কথা অস্বীকার করলো বুলগেরিয়া

তিনি বুলগেরিয়ার বেসরকারি টেলিভিশন নোভা চ্যানেলকে বলেন, “ট্রাকে তারা খুব সীমিত অক্সিজেন পাচ্ছিল এবং তাদের কাছে পানি ছিল না, যে কারণে তারা ডিহাইড্রেশনে ভুগছিল। অভিবাসীরা বেশ কয়েকদিন যাবদ খাবার পায়নি।”


এমএইউ/আরকেসি         (ইউরো নিউজ ফ্রেঞ্চ)


 

অন্যান্য প্রতিবেদন