জার্মান অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনারের মতো দেশটির নীতি নির্ধারকদের অনেকে অনিয়মিত অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর হতে চান৷ ছবি: পিকচার অ্যালায়েন্স
জার্মান অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনারের মতো দেশটির নীতি নির্ধারকদের অনেকে অনিয়মিত অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর হতে চান৷ ছবি: পিকচার অ্যালায়েন্স

অনিয়মিত অভিবাসন বন্ধে জার্মানিকে আরো ভালোভাবে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন দেশটির অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনার৷ আর জার্মানিতে আশ্রয় চাওয়ার পর যাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান হয়েছে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো উচিত বলেও মনে করেন তিনি৷

জার্মান সংবাদ মাধ্যম টি-অনলাইনকে বুধবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণে জার্মান সরকার যথেষ্ট শক্ত অবস্থানে নেই৷ এর কারণও ব্যাখ্যা করেছেন দেশটির মন্ত্রিসভার এই সদস্য৷ তিনি বলেন, ‘‘অনিয়মিত অভিবাসনকে ঠেকাতে আমরা তেমন কঠোর পদক্ষেপ নেইনি৷’’ 

জার্মানির জোট সরকারের অন্যতম শরিক এফডিএফ-এর শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘‘আমাদের দেশে অনিয়মিত অভিবাসনের প্রয়োজন নেই৷ কারণ তা আইন বহির্ভূত৷ যদিও অনিয়মিত অভিবাসনও একটা পর্যায়ে স্থায়ী বসবাস ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করে৷’’

বরং জার্মানিতে কাজ করতে চান এমন বিদেশিদের শিক্ষা বা ডিগ্রিকে স্বীকৃতি দিয়ে অভিবাসন প্রক্রিয়াকে সহজ করা সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি৷ তার মতে, অনিয়মিত অভিবাসীর ক্ষেত্রে সরকারের আরো কঠোর হওয়া উচিত৷

জার্মানির অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে দুই লাখ ১৭ হাজার ৭৭৪ জন দেশটিতে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন, যা তার আগের বছরের তুলনায়, ৪৭ শতাংশ বেশি৷

আশ্রয় চেয়ে সবচেয়ে বেশি আবেদন করেছেন সিরিয়ার নাগরিকেরা৷ আবেদনের সংখ্যা ৭০ হাজার ৯৭৬৷ ৩৬ হাজার ৩৫৮টি আবেদন নিয়ে তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে আফগানিস্তানের নাম৷ আর তৃতীয় অবস্থানে থাকা তুরস্কের ২৯ হাজার ৯৩৮ নাগরিক জার্মানিতে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন৷

অন্যদিকে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরু করার পর প্রায় ১০ লাখ ইউক্রেনীয়কে যুদ্ধ শরণার্থী হিসেবে কোনো আবেদন ছাড়াই গ্রহণ করেছে জার্মানি৷ ফলে চাপ সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে৷ জার্মানির অনেক জায়গায় অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে পড়েছে অভিযোগ এসেছে পৌরসভাগুলো থেকে৷

এমন অবস্থায় ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনার মতো দেশটির নীতি নির্ধারকদের অনেকে অনিয়মিত অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার পক্ষে৷ পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষ অভিবাসী এনে কর্মী সংকট মেটাতে আইন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার৷ চাকরির ভিসা দিয়ে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে কর্মী আনার একটি কার্যক্রমও হাতে নেয়া হয়েছে৷ এর অংশ হিসেবে চলতি সপ্তাহে ঘানা সফরে যান জার্মানির শ্রমমন্ত্রী ও উন্নয়নমন্ত্রী৷  

টিএম/এফএস (ডিপিএ)

 

অন্যান্য প্রতিবেদন