দক্ষিণ ইটালির ক্যালাব্রিয়ার উপকূলে নৌকাডুবির পর ইউনিসেফ এবং সেভ দ্য চিলড্রেন তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। অপ্রাপ্তবয়স্ক, নারী এবং তাদের পরিবারগুলোকে বর্তমানে ক্রোটোনে নির্ধারিত ফার্স্ট রিসেপশন সেন্টার (সিএআরএ) তে রাখা হয়েছে। সেখানে মানসিক স্বাস্থ্য সেবাসহ নানাভাবে অভিবাসীদের সহায়তা করা হচ্ছে।
পহেলা মার্চ একটি যৌথ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ইউনিসেফ ও সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, ২৬ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ ইটালির ক্যালাব্রিয়ায় নৌকাডুবির পর নিখোঁজদের সন্ধানে অনুসন্ধান অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বেঁচে যাওয়া অভিবাসীদের মতে, এখনও বেশ কিছু লোক নিখোঁজ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে।
ভুক্তভোগী অভিবাসীরা আফগানিস্তান, পাকিস্তান, সোমালিয়া, ফিলিস্তিনি থেকে এসেছেন। তুরস্ক থেকে যাত্রা করে পূর্ব ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করে ইটালিতে পৌঁছতে চেয়েছিলেন এসব অভিবাসীরা।
আরও পড়ুন>>সন্তানের চিকিৎসার আশায় দেশ ছাড়েন পাক ক্রীড়াবিদ শাহিদা
জীবিতদের মধ্যে ১৬ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক অভিবাসীও রয়েছে। তাদের মধ্যে অভিভাবকীন নাবালকের সংখ্যা তিনজন। নয়জন নাবালককে বর্তমানে ফার্স্ট রিসেপশন সেন্টার (সিএআরএ) তে রাখা হয়েছে।
বাকিদের মধ্যে ক্রোটোনে হাসপাতালে আছেন ছয়জন।
সংস্থাগুলি বলেছে, জীবিতরা এখনও গভীর মানসিক শোকের মধ্যে রয়েছে।
ইউনিসেফ এবং সেভ দ্য চিলড্রেন, জরুরি পরিস্থিতিতে উপস্থিত এবং সক্রিয় অন্যান্য সংস্থাগুলির সঙ্গে প্রথম থেকেই অভিবাসীদের মনোস্তাত্ত্বিক সহায়তা প্রদান করেছে।
পড়ুন>>গ্রিসের কড়া নীতি নৌকাডুবিতে ভূমিকা রাখতে পারে: ইটালির মন্ত্রী
মূলত, অভিভাবকহীন বিদেশি নাবালক এবং পরিবারগুলিকে সহায়তা দেয়ায় জোর দিয়েছে এই দুই সংস্থা।
সংস্থা দুটির মতে, সিএআরএ-তে সাতটি পরিবার রয়েছে, তাদের প্রায় সবাই নৌকডুবির ঘটনায় বেশ কিছু আত্মীয়কে হারিয়েছে।
তাদের মধ্যে আছেন এফ. ছদ্মনামের একজন ব্যক্তি। যিনি তার পরিবারের সাত সদস্য নিয়ে আফগানিস্তান ছেড়েছিলেন। এই আফগান অভিবাসী নৌকায় সেইসময় থাকা মানুষদের আচরণ এবং সমুদ্রের ওই ট্র্যাজেডি ছবি এঁকে ব্যাখ্যা করেছেন।
আরও পড়ুন>>তুরস্ক-ইটালি রুটে দ্বিগুণ হয়েছে অভিবাসীপ্রত্যাশী
তার পরিবারের মধ্যে, শুধুমাত্র তার ১২ বছর বয়সি চাচাতো ভাই এবং তিনি নিজে বেঁচে গিয়েছেন। তারা দুজনই সাঁতার কেটে সমুদ্র সৈকতে আসতে সক্ষম হন।
ইইউ-অর্থায়িত প্রকল্প 'সুরক্ষা'
সংস্থাগুলি বলছে, তারা নাবালকদের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য স্থানীয় সামাজিক পরিষেবা এবং আশ্রয় সুবিধার সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
ইউনিসেফ এবং সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, “মনো-সামাজিক সমর্থন এবং অন্তর্ভুক্তি পদ্ধতি সক্রিয়করণের নিশ্চয়তা দিতে এই কার্যক্রম আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে।”
উভয় সংস্থাই ২০২২ সালের আগস্ট থেকে আইন বিশেষজ্ঞ, একজন সামাজিক সহকারী, একজন সামাজিক মধ্যস্থতাকারী এবং সীমান্ত প্রতিক্রিয়ার সমন্বয়কারীর সমন্বয়ে একটি বিশেষ দল নিয়ে ক্যালাব্রিয়াতে সক্রিয় রয়েছে।
আরও পড়ুন>>ভূমধ্যসাগরে বাধার মুখে উদ্ধারকারী দল
সাম্প্রতিক সময়ে তারা জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় ঘটনাস্থল ও আশ্রয়কেন্দ্রে তাদের উপস্থিতি জোরদার করেছে।
এই যৌথ হস্তক্ষেপটি ‘সুরক্ষা’ প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত হয়েছে। ইটালিতে আসা ২৯ হাজার শিশু, কিশোর, যুবক, নারী ও শরণার্থীদের রক্ষার লক্ষ্যে ইউরোপীয় কমিশনের অভিবাসন ও স্বরাষ্ট্রবিভাগের মহাপরিচালকের দপ্তর থেকে এটির অর্থায়ন করা হয়েছে।
২০১৪ থেকে আজ পর্যন্ত, ভূমধ্যসাগরীয় পথে আসার সময় ২৬ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছে।
এমএইউ/আরকেসি (আনসা)