(ফাইল ছবি) আগুনে পুড়ে যাওয়ার আগে মোরিয়া শরণার্থী শিবির। ছবি: ইপিএ
(ফাইল ছবি) আগুনে পুড়ে যাওয়ার আগে মোরিয়া শরণার্থী শিবির। ছবি: ইপিএ

২০২০ সালে গ্রিক দ্বীপ লেসবোসের মোরিয়া অভিবাসী শিবিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পরের বছর চার আফগানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। অভিযুক্ত চার আফগান অভিবাসী আপিলে ‘ন্যায় বিচার’ পাওয়ার আশা করছেন।

গ্রিক দ্বীপ লেসবোসে অভিবাসী শিবিরে আগুন লাগার ঘটনার মামলার আপিল কার্যক্রম বুধবার থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। 

অভিযুক্ত চার আফগান অভিবাসীর জন্য এটি একটি অপ্রত্যাশিত রায় ছিল। ২০২১ সালে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলেও আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন চার আফগান। প্রাথমিক রায়ের পর থেকে আড়াই বছর ধরে কারাভোগ করেছেন তারা

আরও পড়ুন>>উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন: গৃহহীন ১২ হাজার শরণার্থী

আফগান অভিবাসীদের আইনজীবী দলের সদস্য ভিকি অ্যাগেলিডো ইনফোমাইগ্রেন্টসকে বলেন, “আমাদের মক্কেলরা আশা করছেন এই বিচারটি ন্যায্য হবে এবং এটি তাদের কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার অনুমতি দেবে।”

অন্য দুই নাবালক অভিবাসীকেও পৃথক রায়ে আরও পাঁচ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল। তারাও রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন।

‘ধূসর এলাকা’

লিগ্যাল সেন্টার লেসবোসের আইনজীবী দলের সদস্য মেরিয়ন বোচেটেল বলেন, “সমস্ত অভিযোগ এমন একজন আশ্রয়প্রার্থীর সাক্ষ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে যাকে কখনও পাওয়া যায়নি।যিনি প্রথম বিচারের সময় উপস্থিত ছিলেন না। এই সাক্ষ্যটিতে বেশ কয়েকটি ধূসর বিষয় রয়েছে।”

পড়ুন>>তুরস্ক থেকে ইরানে ‘ডিপোর্ট’; বাংলাদেশি অভিবাসীর নির্যাতনের গল্প

ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ আগেলিদু বলেন, ওই সাক্ষী শুধু তদন্তকারীদের কিছু নাম দিতে পেরেছিলেন।বিচারকেরা সিদ্ধান্তে আসতে এটির ওপর নির্ভর করেছিল। মোরিয়া শিবিরে ২০ হাজার লোক বাস করত, সেখানে একই নামের অনেক লোক ছিল। ২০২১ সালের জুনে অনুষ্ঠিত শুনানিতে প্রসিকিউশন দলের উপস্থিত ১৫ জন সদস্য চার অভিযুক্তকে সনাক্ত করতে পারেনি।”

প্রথম বিচারের সময় আদালতে সাংবাদিকদের পাশাপাশি আইনি পর্যবেক্ষক এবং ইউএনএইচসিআর -এর প্রতিনিধিদেরও প্রবেশাধিকার প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।

‘দুর্বল এবং পরস্পরবিরোধী প্রমাণ’

২০২০ সালের ৮ থেকে ৯ সেপ্টেম্বর রাতে ভয়াবহ আগুনে লেসবোসের মোরিয়া শিবির ধ্বংস হয়ে যায়। এই ঘটনায় প্রায় ২০ হাজার অভিবাসী শোচনীয় পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল। 

আরও পড়ুন>>বাংলাদেশ থেকে ইউরোপ: স্বপ্নের হাতছানিতে মৃত্যুযাত্রা

শিবিরটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এবং হাজার হাজার লোককে সরিয়ে নিতে হয়েছিল, তবে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

দুর্বল এবং পরস্পরবিরোধী প্রমাণের ভিত্তিতে গ্রিক রাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অমানবিক ব্যবস্থাপনায় চার আফগান নাগরিককে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে এনজিওগুলো। 

ফরেনসিক আর্কিটেকচার নামক এনজিও অনুসারে, ২০১৩ সালে মোরিয়া শিবির তৈরির পর থেকে ২৪৭ বার আগুনের ঘটনা ঘতেছে। এসব ঘটনায় অন্তত দুই শিশুসহ বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন>>জলবায়ু পরিবর্তন মানবপাচার বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে: জাতিসংঘের প্রতিবেদন

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) এর পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২ সালে লেসবোসে মাত্র দুই হাজার ৭৪০ জন অভিবাসী প্রবেশ করেছিল। এই সংখ্যাটি ২০১৯ সালে ছিল ২৭ হাজার।

৯ ফেব্রুয়ারি দ্বীপে ভ্রমণ করে গ্রিক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নোটিস মিতারাচি বলেন, “অভিবাসন এখন আর দ্বীপের জন্য কোন বড় সমস্যা নয়। লেসবোস স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে।”


এমএইউ/টিএম










 

অন্যান্য প্রতিবেদন